1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
রাজশাহীতে মেস ভাড়া মওকুফের দাবি শিক্ষার্থীদের - খবর ২৪ ঘণ্টা
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে মেস ভাড়া মওকুফের দাবি শিক্ষার্থীদের

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২০

ওমর ফারুক : করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রাজশাহী মহানগরীতে মেস ভাড়া মওকুফের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে মেসে অনুপস্থিতকালীন এই সংকটকালে মেস ভাড়া মওকুফের দাবি জানিয়েছেন মেস মালিকদের কাছে রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ‘রাজশাহীর মেস ভাড়া মওকুফের দাবি’ নামক একটি গ্রুপ খুলে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। সেই সাথে তারা এ গ্রুপে নিজেদের মেস ভাড়া মওকুফের দাবি জানাচ্ছেন। এই গ্রুপের কিছু কিছু শিক্ষার্থী করো না পরিস্থিতির মধ্যে পুরো ভাড়া মওকুফের দাবি জানালেও কিছু কিছু শিক্ষার্থী এই পরিস্থিতির মধ্যে মেস মালিকদের কথা মাথায় রেখে অর্ধেক কমানোর দাবি করছেন। যাতে মেস মালিক ও মেসের বর্ডার দুই পক্ষই কিছুটা উপকার পেতে পারে।

শিক্ষার্থীদের গ্রুপ

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রথম ৮ মার্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর আস্তে আস্তে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকে। আর মহামারী করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব রোধে চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষানগরী রাজশাহীর সকল সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রাজশাহী মহানগরের মেসগুলো ছাড়তে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। কয়েকদিনের মধ্যে সকল শিক্ষার্থী মেস ছেড়ে নিজ বাড়িতে চলে যায়। এছাড়াও মেসগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় মালিকদের পক্ষ থেকে। ওই সময়ে রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার বাস, গণপরিবহন, ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। রাজশাহীতে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ১৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করে দেওয়া হয়। লকডাউনের মধ্যে রাজশাহী মহানগরীতে শুধু নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ফার্মেসী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খুলে রাখা হয়।

এ অবস্থার মধ্যে শিক্ষার্থীরা মেস ছেড়ে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে মেস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও মালিকরা মেসের বর্ডার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোনে বিকাশে ভাড়া পরিশোধের জন্য তাগিদ দেয়া শুরু করে। মেসের বর্ডাররদের মধ্যে অনেকেই নগরীতে টিউশনি বা অন্যান্য কাজ করে শহরে পড়াশোনা করত। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ ধরনের কিছু শিক্ষার্থী পড়েছেন বিপাকে। তারপরও কোন ভাবে শহরে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরা এই ভাড়া জোগাড় করতে না পেরে বেকায়দা অবস্থায় পড়েছেন। এসব পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তাদের বাবার পক্ষে সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে সেখানে মেসের ভাড়া যেন মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে । শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই যেমন বেকায়দায় পড়েছেন তেমন মেসের ভাড়া না পেয়ে কিছু মালিকও বেকায়দা অবস্থার মধ্যে পড়েছেন বলে নাম না প্রকাশ করার শর্তে দুই/একজন মেস মালিক জানিয়েছেন। কারণ কিছু কিছু মেস মালিক শুধু মেস ভাড়ার উপর নির্ভরকরে সংসার চালান এমনও রয়েছে।

এ পরিস্থিতির মধ্যে প্রকৃতই বিপদে পড়া শিক্ষার্থীরা ‘রাজশাহীর মেস ভাড়া মওকুফের দাবি’ নামক গ্রুপ খুলে সেখানে নিজেদের দুর্দশার কথা জানিয়ে ম্যাচ ভাড়া মওকুফ করার জন্য মালিকদের কাছে দাবি জানাচ্ছেন। এরমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী পুরো ম্যাচ ভাড়া মওকুফের দাবি জানালেও কিছু শিক্ষার্থী মালিকদের কথা চিন্তা করে অর্ধেক ভাড়া কমানোর দাবিও জানাচ্ছেন এই গ্রুপে। গ্রুপে থাকা মাহমুদুল ইন্তাজ রনি নামে এক শিক্ষার্থী লেখেন, এপ্রিল মাসের ভাড়া দেয়া হয়নি, মেস মালিক বলেছে মে মাসের ভাড়া দিয়ে সিম বাতিল করতে এখন আমার কি করা উচিত? সুজন হোসেন জীবন নামের এই গ্রুপের আরেক শিক্ষার্থী লেখেন আমরা যারা রাজশাহীতে মেসে থাকি তাদের এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ম্যাচ ভাড়া। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনেক পরিবার আছে যারা দুই বেলা দু মুঠো খেতে পারছে না এক্ষেত্রে মেস ভাড়া কি করে দিবে? অভিজিৎ রায় নামের আরেকজন লিখেন, আমার মেস মালিক কোন কথাই শুনছে না দুই মাসের ভাড়া একসাথে চাচ্ছে ব্যবহার সহ্য করা দায় হয়ে পড়েছে? নুরতাজ আক্তার সীমা নামের আরেক শিক্ষার্থী লেখেন, আমাদের মেস মালিক ফোন দিয়ে টাকা চাচ্ছে এটা কেমন বিবেক? তিনি শুধু উনারটাই ভাবছেন আমাদের টা কে ভাববে?

আসিফ হাসান নামে আরেকজন লেখেন, আমাদের মেস মালিক বলেছেন ১ থেকে ৪ তারিখের মধ্যে ভাড়া দিলে জরিমানা লাগবেনা। না হলে যত দিন পার হবে তত ১০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। শারমিন শিমু নামের আরেকজন লিখেন, রাজশাহীতে অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন তাদের কি হবে? বিপুল হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থী লেখেন, আমরা যারা টিউশনি করিয়ে মাসের টাকা দেই তারা তাদের তো টিউশনি নেই তাহলে আমরা কি করে ভাড়া দিব? জবা নামের আরেক এ নিয়ে মালিক ৩ বার ভাড়া চাইলে, এখন কি করবো? শুধু এই শিক্ষার্থীরাই নয় এই গ্রুপের প্রায় ৬ হাজারের ওপরে সদস্য প্রত্যেকেই নিজের নিজের অবস্থান জানিয়ে ম্যাচ ভাড়া মওকুফ দাবি করছেন।

রাজশাহীর এক ম্যাচ মালিকের সাথে কথা হলে তিনি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আমরা যারা শহরের মানুষ অনেকেরই বাড়ি ছাড়া তেমন কিছু নেই। আবার কারো কারো মেসের ভাড়ার উপর নির্ভরশীল। তাহলে ভাড়া না নিয়ে উপায় কি? তবে প্রকৃতই দু-একজন গরীব শিক্ষার্থীদের বিষয়টি আলাদা। সবাই কিন্তু গরীব ও দুস্থ পরিবারের নয়। অনেকে আছে সচ্ছল পরিবারের তাদের ভাড়া দিতে হবে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে আরেকজন মেস মালিক বলেন, মেসের ভাড়া দিতেই হবে। এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সবারই অবস্থা খারাপ। আমরাও ভাড়া না পেলে কিভাবে চলবে?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রহমান কুদ্দুস বলেন, সরকারি কোন নির্দেশনা এখনো আসেনি। সরকারি নির্দেশনা না আসলে আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারবো না। এছাড়া শহরে গ্রাম থেকে আসা অনেক সচ্ছল পরিবারের সন্তানেরা পড়াশোনা করে তাদের কিভাবে মালিকরা ছাড় দিবে। যদিও এটা মালিক ও শিক্ষার্থীদের ব্যাপার। এটা নিয়ে আমাদের কিছু করার নাই। তারা নিজে নিজে কথা বলে বিষয়টি ঠিক করে নেবে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, মেস মালিক ও বর্ডারদের এটা একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। সরকারি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা এখনো নাই। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারো উপর কোন নির্দেশনা না সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। শহরে দু-একজন অসচ্ছল পরিবারের সন্তান এর পাশাপাশি সচ্ছল পরিবারের অনেক ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করে। মালিকরা যদি ভাড়া না পাই তাহলে তাদের অবস্থাও খারাপ হতে পারে। গ্রুপে আন্দোলন না করে শিক্ষার্থীরা নিজের নিজের মালিকদের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে পারে। একমাত্র মালিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে তিনি ভাড়া নিবেন কিনা। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতি পরামর্শ তারা জোট বদ্ধ না হয়ে নিজ নিজ মেস মালিকের কাছে নিজের সমস্যার কথা তুলে ধরে এর সমাধান করে নিবে।

এমকে

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST