মাদক সম্রাট ও পুলিশের কথিত সোর্স রুবেল কথায় কথায় মানুষকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখানো। এলাকায় কোন দ্বন্দ্ব হলে থানায় গিয়ে দেন দরবারের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। এলাকায় দেহ ব্যবসাসহ তার কথা মত না চললে বাসায় মাদক রেখে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার আতংকে থাকতো রাজশাহী নগরীর শালবাগান,আসাম কলোনী বাসিন্দারা।
গরীব যুবকদের বিভিন্ন পয়েন্টে বহনে বাধ্য করতো তা-না হলে নিজস্ব বাহিনী দিয়ে মারামারি ঘটনা ছিলো অহরোহ। থানা পুলিশের সাথে গাঢ় সম্পর্ক থাকায় চোখ বুজে সহ্য করছিলেন অনেকে । গত (১০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে র্যাবের অভিযানে মূল হোতা রুবেল প্রায় ২৮ কেজি মাদকদ্রব্যসহ গ্রেপ্তারে এলাকায় স্বস্তি নেমে এসেছে। তবে তার সাঙ্গপাঙ্গরা আরএস আরএস, রাজশাহী সত্যের পথে প্রতিদিন নামক ফেসবুক আইডি থেকে প্রতিনিয়ত এলাকা সম্মানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন কুৎসা রটানোর কারনে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছে।
শনিবার (১৬এপ্রিল) সকালে রুবেলের শাস্তির দাবিতে আসাম কলোনী এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করেন ।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে নগরীর শালবাগান বাজার এলাকায় মানববন্ধন করেন তারা । এসময় স্বতস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। শ্লোগানে সকলের একটি দাবি মাদক সম্রাট রুবেলের কঠোর থেকে কঠোর শাস্তি করা হয়। পুলিশের সোর্স পরিচয়ে অপরাধ মুলক কর্মকাণ্ড করেছে তার সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানান ।
মানববন্ধনে উপস্থিত স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনি বলেন, আমরা অনেকবার থানা পুলিশকে অবহিত করেছি রুবেল ও তার ছেলে জিসান ব্যপারে। পুলিশ আমাদের কথায় কান দেননি। আমরা দেখেছি রুবেল ও তার সঙ্গীরা এলাকায় থানার সোর্স পরিচয় দিয়ে কিভাবে ত্রাস ও ভয়ভীতিতে মানুষের মাঝে ছিল আতঙ্ক। এখন সে জেলে তার সঙ্গীরা আমাদের নামে মিথ্যা বদনাম দিয়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। রুবেল জেলে থাকায় এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে জনমনে।
মানববন্ধনে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি মোখলেসুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন তবে মাদক পুরোপুরি নির্মুল হয়নি। তবে থানার কিছু অসৎ পুলিশ সদস্যের কারণে রুবেলের মতো ছিচকে চোর আজ মাদক ব্যবসায়ী হয়েছে। তার ছেলে জিসানও এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমরা বারবার থানাকে জানিয়েছি কোন কাজ হয়নি। যে কাজটি থানার পুলিশের করার কথা ছিলো সেটি র্যাব করে দেখিয়েছে। আমরা র্যাবের সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাই এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেয়া রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনটি বিষয়ে জিরো টলারেন্স রেখেছেন। তার মধ্যে মাদক অন্যতম। আসামকলোনী এলাকার মানুষ শান্তিপ্রিয়। একজন রুবেলের মতো মাদক ব্যবসায়ীর কারনে গোটা এলাকার যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে এটা মেনে নেয়া যায়না। আমাদের পুলিশ প্রশাসন আস্থা অর্জন করেছে নগরবাসীর।
সম্মানিত পুলিশ কমিশনার রাজশাহীতে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে কিশোর অপরাধীদের ডাটা তৈরি করাসহ পুরো শহরকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। রাজশাহীতে মাদক ব্যবসায়ীদের সংখ্যা অনেকটা কমে গেছে। তবে কিছু অসৎ লোভি পুলিশ সদস্যদের কারনে রুবেলের মতো মানুষ মাদক ব্যবসা চালিয়েছে। এখন যদি সঠিক বিচার না হয় আর এলাকাবাসী আইন যদি নিজের হাতে তুলে নেয় তবে এর দ্বায়দায়িত্ব চন্দ্রীমা থানাকে নিতে হবে।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী দাবি করেন, সোর্স রুবেল হচ্ছে মাদকের গডফাদার। সে স্থানীয় গরীব যুবকদের বাধ্য করেছে তার সাথে যুক্ত থাকতে। তার সাথে না থাকলে নারী দিয়ে ধরিয়ে দিত। এছাড়াঠ ঘরে মাদক রেখে ফাঁসিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটিয়েছে। ইতিমধ্যে তার এসব বিষয় পত্রিকাগুলোতেও প্রকাশ হয়েছে।
বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে ১৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের (দক্ষিন) সাধারন সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য মজিবর রহমান, যুবনেতা সাদ্দাম, উজ্জলসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশ নেয়।
উক্ত বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ১৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের (দক্ষিন) সভাপতি নুরুজ্জামান নুরু।
বিএ/