রাজশাহী মহানগরীতে করোনা সার্টিফিকেট প্রতারণা চক্রের স্বামী-স্ত্রীসহ তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আটককৃতরা হলেন, রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালী থানার কাঁপাসিয়া বাজারের আহসানউল্লাহর ছেলে তারেক আহসান আপেল (৩৫) ও তার দুই সহযোগী বোয়ালিয়া থানার হেতেমখাঁ লিচু বাগান ওয়াবদা কলোনীর আশরাফুল ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০) এবং রফিকুলের স্ত্রী সামসুন্নাহার শিখা (৩৫)। আটক ৩ জনের মধ্যে একজন সিভিল সার্জন অফিসের অফিস সহায়ক ও অন্যজন গাড়ী চালক। আজ বৃহস্পতিবার নগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তব্য
রাখেন, নগর গোয়েন্দা শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, রাজশাহী মহানগরীতে একটি প্রতারক চক্র রাজশাহী মহানগরীর জাদু ঘরের মোড়ে অবস্থিত বক্ষ্যব্যাধী ক্লিনিক কেন্দ্রীক পিপিআই সেন্টারে (কোভিড-১৯ (করোনা) টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে বিদেশগামীসহ অন্যান্যদের সাথে প্রতারণা করে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি জানার পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামীদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর ৭ জুলাই রাতে নগরীর বোয়ালিয়া থানার হেতেমখাঁ ওয়াবদা কলাবাগান এলাকায় অভিযান
চালিয়ে প্রতারক চক্রের দুই সদস্য রফিকুল ও তার স্ত্রী শিখাকে আটক করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে প্রতারক চক্রের মূলহোতা পর আসামী তারেককে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বোয়ালিয়া থানার যাদুঘরের সামনে থেকে আটক করা হয়।
আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে গেছে, বিদেশগামীরা করোনা টেস্টের জন্য, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতা, সদর হাসপাতাল ও বক্ষ্যব্যাধী হাসপাতাল, সিভিল সার্জন অফিসে স্যাম্পল জমা দেয়। তাদের অনেকেরই ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে টেস্ট রিপোর্টের সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। এই সুযোগটা তারা কাজে লাগিয়ে করোনা টেস্টের নমুনা প্রদানের ফরম হতে মোবাইল নম্বর ও নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে। সেই সাথে তারা অফিসের পিয়ন বা কম্পিউটার অপারেটরের মাধ্যমে করোনা টেস্টের রিপোর্টের কপি সংগ্রহ করে। এরপর বিদেশগামীদের ফোনের মাধ্যমে জানায়, তার
করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ নিয়ে দিতে পারবে বলেও জানায়। সেক্ষেত্রে বিদেশগামীদের অবস্থা বুঝে ৩০০০-১৫০০০ টাকার বিনিময়ে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট সরবরাহ করতো। মুলত তাদের টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল। বিদেশগামীসহ অন্যান্যরা দ্রুত সময়ে করোনা রিপোর্ট পাওয়ার জন্য টাকা ওই চক্রের হাতে তুলে দিত। তারা ২০২০ সালের মার্চ মাস হতে কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সরকারী নিদের্োনুয়ায়ী ১ মে থেকে করোনা টেষ্ট শুরু হয়। তখন হতেই তারা বিদেশগামী ও প্রবাসী যুবক-যুবতীদের সাথে এই প্রতারণা করে আসছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এস/আর