রংপুর প্রতিবেদক: রংপুর সিটি নির্বাচনের বেশিদিন বাকি নেই। আগামী ২১ ডিসেম্বর ভোট। এখন তাই চলছে সম্ভাব্য ভোটের হিসেব-নিকেশ। আর এই হিসেবে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে জামাত। প্রার্থী না থাকায় জামাতের ভোট কোন দিকে যাচ্ছে তা নিয়েই বড় দলগুলোর মাথাব্যথা।
ঐহিত্যগতভাবেই রংপুরে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী। তবে ৯০ এর স্বৈরাচার এরশাদ পতনের পর তাঁর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিই (জাপা) এখানে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আর কয়েক দশকে জামাতও শক্তিশালী ঘাঁটি তৈরি করেছে রংপুরে।
এখনো রংপুরে জাপার অবস্থান শক্তিশালী। তবে এবারের সিটি নির্বাচনে দলীয় বিভাজন দেখা গেছে। জাপার প্রার্থী হিসেবে এরশাদ মনোনীত করেছেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন এরশাদেরই ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহারিয়ার আসিফ। জাপার এই বিভাজনে তাদের ভোটও বিভাজিত হবে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত কয়েক বছরে রংপুরে মোটামুটি ভালো অবস্থান তৈরি করেছে বিএনপি। এবার রংপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা। সর্বশেষ রংপুর সিটি নির্বাচনে তৃতীয় অবস্থানে ছিলেন তিনি। এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিরোধীদের ভোট পাবে বিএনপি-এটি প্রায় নিশ্চিত।
সদ্য বিদায়ী মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুই রংপুর সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। সৎ ও কর্মঠ হিসেবে তিনি পরিচিত। তবে সবেমাত্র ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোয় তাঁর জনপ্রিয়তা কিছুটা কম থাকাই স্বাভাবিক। এরপরও অনেকটা সংগঠিতভাবেই কাজ করা আওয়ামী লীগ তাঁর জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
তবে এই সব হিসেবে নিকেশ পাল্টে দিতে পারে জামাতের ভোট। কোনো প্রার্থী না থাকায় জামাত কাদের পক্ষে কাজ করবে সেটি এখনোই বলা যাচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে বিএনপির পক্ষেই জামাতের ভোট যাবে-রংপুর সিটির ক্ষেত্রে এমনটি বলা যায় না। কারণ রংপুর জামাতের সঙ্গে জাপার অনেক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। তাই জামাতে কোনো অংশ যে জাপার প্রার্থীকে বা বিরোধী প্রার্থীর পক্ষে যেতে পারে। আবার আওয়ামী লীগ প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুর সঙ্গেও জামাতের ভালো সম্পর্ক আছে বলে জানা যায়। জামাতের ভোট তাঁর কাছেও আসতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, রংপুর সিটিতে জামাতের ভোট কম নয়। প্রার্থী না থাকায় এই ভোট বড় তিন দলের প্রার্থীদের কাছে যাবে তা নিশ্চিত। এখনো পর্যন্ত তিন দলের যে কারও কাছেই জামাতের ভোট যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিএনপি জামাতের ভোট পেলে তা হবে দলটির জন্য ‘প্লাস পয়েন্ট’। নিজেদের ভোট যাই থাক, সরকার বিরোধী মানুষের ভোট ও জামাতের ভোট নিয়ে তারা জয়ের আশা করতে পারে। আবার শক্তিশালী জাপার ভোট ভাগ না হয়ে একজন প্রার্থীতে পড়লে এবং জামাতের ভোট পেলে তারাও জয়ী হতে পারে। আর আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নিজস্ব ইমেজ, দলীয় ভোট এবং জামাতের ভোট পেলে তার জয়ও নিশ্চিত।
অর্থাৎ, এই সময়ে এসে জামাতের ভোটই বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে রংপুর নির্বাচনে। অবশ্য কিছুদিনের মধ্যেও নির্বাচনের পরিবেশ বলে দেবে ভোটের হাওয়া কোন দিকে যাচ্ছে। আর জামাতের ভোট কারা পেতে পারে।
খবর ২৪ ঘণ্টা.কম/জন