রাশিয়াকে হারিয়ে চলমান যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনই জিতবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গত শনিবার কিয়েভে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দুই বছর হওয়া উপলক্ষে সংহতি জানাতে বিশ্ব নেতারা কিয়েভে আসলে তাদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
দুই বছর আগে অর্থাৎ, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এই যুদ্ধের দুই বছর পূর্তিতে কিয়েভে যান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার দ্য ক্রো ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভ্যান ডার লেয়ন। তাদের সঙ্গে আলাপকালে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা আমাদের জীবনের ৭৩০ দিন ধরে জয়ের জন্য লড়াই করেছি। আমরা যেদিন জয়ী হব, সেদিনই হবে আমাদের আনন্দের দিন।’
জেলেনস্কি বলেন, ‘যেকোনো স্বাভাবিক মানুষই চান যুদ্ধের অবসান হোক। কিন্তু আমরা কেউই ইউক্রেনকে শেষ হতে দেব না। শান্তির শর্তে যুদ্ধ শেষ করতে হবে।’ এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগে আমরা এখানে শত্রুর আগুনের দেখেছি; ঠিক দুই বছর পর, এখানে আমাদের বন্ধুদের দেখছি।’
এদিকে রাশিয়ার বৃহত্তম ইস্পাত কারখানায় ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করেছে ইউক্রেন। রাশিয়ার পশ্চিম লিপেতস্ক অঞ্চলের নোভোলিপেতস্ক (এনএলএমকে) কারখানায় এ হামলা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ওই কারখানার আগুনের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
ইউক্রেনের গোয়েন্দা বিভাগ এসবিইউ মলার দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, কারখানাটিতে ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছিল। রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ইস্পাত উৎপাদনকারী কারখানাটিতে ড্রোন হামলার পেছনে এসবিইউ ও ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা ইউনিট জিইউআর জড়িত ছিল। লিপেতস্ক অঞ্চলের গভর্নর ইগর আর্তামানভ বলেন, এনএলএমকে কারখানার একটি ওয়ার্কশপে লাগা আগুন দ্রুতই নিভিয়ে ফেলা হয়েছে।
অন্যদিকে বিসিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধের দুই বছরে পেরিয়ে তৃতীয় বর্ষেও মনোবল না হারিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছে ইউক্রেন। অনেক নাগরিকই চান শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের ময়দানে লড়াই করুক ইউক্রেন। এ বিষয়ে ইউক্রেনের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয় বিবিসির। তাঁদের একজন ভ্যালেরি নামের এক বৃদ্ধ। তিনি বলেন, ‘আমাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত। আমরা আর কিছুই সহ্য করব না। লোকজন এখন অনেকটা ক্ষিপ্ত।’
অপরদিকে, রাশিয়ার যাঁরা ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে চান না, সেই সেনারা মস্কোয় বিক্ষোভ করেছেন। এ বিক্ষোভ থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইউক্রেন থেকে সেনাদের ফেরত আনতে প্রতি সপ্তাহে মস্কোয় এই বিক্ষোভ হয়। সেই বিক্ষোভ থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জ/ন