মোহনপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রশাসনের নাকের ডগায় পানি নিষ্কাশন মুখে অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খননের হিড়িক পড়ে গেছে। এক শ্রেণীর মুনাফালোভী ও রাজনৈতিক পাতি নেতার লেবাসে ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রকৃত কৃষকদের বেশী মুনাফার লোভ দেখিয়ে তিন ফসলী ধানী জমিকে পুকুরে রুপান্তর করছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এর মধ্যে চারশত হেক্টর আবাদি জমি পুকুর হয়েছে। বর্তমানে আরো নতুন পুকুর খনন অব্যাহত রয়েছে। ভূক্তভোগীরা এই নিরব দুর্যোগ থেকে বাঁচতে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও ঠেকাতে পারছেনা এই পুকুর খনন। প্রশাসন হাতে গোনা দু-এক জন ড্রেজার ড্রাইভারকে আটক করে আইনের আওতায় আনলে এই পুকুর খননের কাজ বন্ধ হবে বলে জানান স্থানীয়রা ।
চাষ উপযোগী জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে কৃষক আশরাফুল ইসলাম,আব্বাস আলী, সহ ১ শতাধিক ব্যক্তির স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করেছেন।
পুকুর খনন বন্ধে এলাকাবাসী সোমবার বেলা ১১ টা শুরু হয়ে ঘন্টাব্যাপী হাতে বিভিন্ন ব্যানার,ফেষ্টুন নিয়ে রাজশাহী নওগাঁ মহাসড়কে রাস্তার দুর্পাশ্বে খয়রা মোড়ে মৌগাছী ইউনিয়ন এর খয়রা, বেড়াবাড়ী, মাটিকাটা গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক কৃষক খয়রা বিলে তাদের তিন ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধনে খয়রা গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম(৬৫) রওশন আলী(৭০) আব্দুল আজিজ জানান,বলেন একটি চক্র ফসলি জমি লীজ নিয়ে একের পর এক উপজেলার বিভিন্ন বিলে আবাদী জমিতে পুকুর খনন করে চলছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বেশী জমির মালিক পুকুরের জন্য জমি লিজ দিলে বেশী টাকা মুখ দেখলেও বেকাদায় পড়ছেন অল্প জমির মালিকেরা ফলে কেউ কেউ ইচ্ছার বিরুদ্ধে লিজ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয় কৃষকেরা আফসোস করে বলেন গত বর্ষায় অধিক বৃষ্টিতে নদ-নদী,খাল, বিল,পুকুর,ভরে গিয়েছিল।কিন্তু পুকুর খননের ফলে দাঁড়া দিয়ে পানি না নামতে পারায় নি¤্ন অঞ্চলের ধান-পাট,পান বরজ,মরিচ শাক-সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়।
এতে উপজেলায় প্রায় কয়েক কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়।আবারো শুস্ক মৌসুমে কৃষকেরা পানির অভাবে উপরের জমিতে চাষ করতে পারেনা। খয়রা গ্রামের হাবল আলী (৭০) বছরের প্রবীন ব্যক্তি বলেন আমাদের বিলের জমিতে সরকারি নিয়ম না মেনে পানি নিষ্কাশন মুখ বন্ধ করে এক শ্রেণী মুনাফী লোভী পুকুর খননের চেষ্টা করছে যার ফলে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাবে। ভবিষ্যৎতে মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে। কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন এলাকায় আবাদী জমিতে পুকুর খনন বন্ধ না হলে প্রকৃত কৃষকের ভবিষ্যৎ আগামী দিনে অন্ধকার হবে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কৃষক আব্বাস আলী, বাবুল হোসেন রাসেল, রুবেল হোসেন, আব্দুল করিম, শাখাৎত হোসেন, আব্দুল আজিজ। মানববন্ধন কৃষকেরা উপজেলার বিভিন্ন বিলে অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধে দ্রুত উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,মোহনপুর উপজেলায় অপরিকল্পতিভাবে পুকুর খননের ফলে আবাদী জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে এবং ধান ও সবজী উৎপাদন কম হবে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে, বেশী পুকুর খননের কারণে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। আবাদী জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে ইতি মধ্যে অবগত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মির্জা ইমাম উদ্দিন সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফসলী জমিতে কেউ অবৈধভাবে পুকুর খনন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ