1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
মেয়েদের ‘না’ মানেই ‘হ্যাঁ’! - খবর ২৪ ঘণ্টা
বধবার, ১৫ জানয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৮ অপরাহ্ন

মেয়েদের ‘না’ মানেই ‘হ্যাঁ’!

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৯ জুন, ২০১৮

খবর২৪ঘণ্টা বিনোদন,ডেস্ক:

মেয়েরা সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বলে না। ‘না’ হোক বা ‘যাহ্’— সব সময়ই ঘুরিয়ে উত্তর।

‘‘দূর গাধা, যাঃ মানেই হ্যাঁ।’’

মনে পড়ে রাজশেখর বসুর ‘বিরিঞ্চিবাবা’? বিখ্যাত গল্পের একেবারে শেষে ছিল এই মোক্ষম লাইন! সত্য বুঁচকিকে প্রেম নিবেদন করলে বুঁচকি এই একটি শব্দেই উত্তর দিয়েছিল— ‘যাহ্!’ সত্যের মুখে তা শুনে নিবারণ সত্যকে অভয় দিয়েছিল ওই সংলাপ বলে।

সেই সময়ের বাঙালি মনকে দারুণ পড়েছিলেন রাজশেখর। তাঁর পাঞ্চলাইনটি মুগ্ধ করেছিল সত্যজিৎ রায়কে। পরবর্তী সময়ে রুপোলি পর্দায় বিরিঞ্চিবাবাকে তুলে আনার সময়ে তিনিও রেখে দিয়েছিলেন ওই সংলাপ। সামান্য বদল এনেছিলেন বটে দৃশ্যে। কিন্তু আসল ফ্লেভারটা বদলাননি। নায়িকার লাজুক এক্সপ্রেশন থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন। মেয়েরা সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বলে না। ‘না’ হোক বা ‘যাহ্’— সব সময়ই ঘুরিয়ে উত্তর। বুঝে নিতে হয় পুরুষকে।

চিত্রায়নেও বদলায়নি গল্পের শেষ সংলাপের আবেদন। ‘মহাপুরুষ’ (১৯৬৫) ছবির একটি দৃশ্য।

সেই ছয়ের দশকের একেবারে শেষে ‘আরাধনা’ (১৯৬৯) ছবির একটি গানে রাজেশ খান্না প্রশ্ন করেন তাঁর নায়িকা ফরিদা জালালকে। সমস্ত প্রশ্নের উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বললেও ভালবাসার উত্তরে নায়িকা বলে ওঠেন ‘না’। কেবল একটি না নয়, না-এর বারংবার পুনরাবৃত্তি করে চলেন তিনি। সেই সুর এক তীব্র প্রেমের দ্যোৎনারই সৃষ্টি করে। কেবল ওই একটি গানই তো নয়, সেই সময়ের বহু গানেরই ‘মুড’ ওই রকমই।

কেটে গিয়েছে কয়েক দশক। ২০১৮ সালেও কি মেয়েরা তেমনই রয়ে গিয়েছে? আজও কি প্রেমের ডাকে সাড়া দিতে সে একই রকমের লাজুক? মনে পড়ে ‘পিঙ্ক’ ছবির কথা। ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ওই ছবির একেবারে শেষে আইনজীবী দীপক সেহগলের চরিত্রে অমিতাভ বচ্চন তাঁর ব্যারিটোন ভয়েসে জানিয়ে দিয়েছিলেন— ‘নো মিনস নো।’ অর্থাৎ কোনও মেয়ে যখন ‘না’ বলছেন তখন সেটাকে ‘না’ বলেই মেনে নিতে হবে।

মনে ‘হ্যাঁ’ সত্ত্বেও মুখে ‘না’ নায়িকার। আরাধনা (১৯৬৯) ছবির একটি দৃশ্য।

নিঃসন্দেহে অমিতাভের ওই সংলাপের পরিপ্রেক্ষিত একেবারেই আলাদা। একটি মেয়ের তীব্র প্রতিবাদকেই তিনি মূর্ত হতে দেখেছিলেন ওই ‘না’-এ ভিতরে। এখানে কথা হচ্ছে, নেহাতই প্রেমের আবেদনে সাড়া দেওয়ার সময়ে মেয়েরা কীভাবে রিঅ্যাক্ট করে। কিন্তু কথাটা থেকেই যায়। একসময়ে মেয়েরা ছিল অন্দরমহলের বাসিন্দা। স্বাভাবিক ভাবেই পরিবারের বাইরের পুরুষদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তাদের। তখন মনের কথা বলতে তাদের হয়তো বাধত। এই সময়ে দাঁড়িয়েও কি তারা কোনওক্ষেত্রেই মনের কথা বলতে গিয়ে সংকোচে উলটো কথা বলে! কেবল সংকেত দেখে ধরতে হয়, তারা আসলে কী বলতে চাইছে?

যুগটা সোশ্যাল মিডিয়ার। দৈনন্দিন প্রতিটি পদক্ষেপই উঠে আসছে ভার্চুয়াল দেওয়ালে। গোপনীয়তাকে সরিয়ে রেখে নিজের প্রতিটা মুহূর্তই শেয়ার করতে উন্মুখ সকলে। এমনকী, খুব ব্যক্তিগত কথাও। রিলেশনসিপ স্ট্যাটাসও। ‘কমিটেড’ হোক বা ‘ইট’স কমপ্লিকেটেড’। কিংবা ‘ইন এ রিলেশনশিপ উইথ’ লিখে নিজের সঙ্গীর নামও জুড়ে দেওয়া। সবই চলছে। তবুও কী ভাবে যেন টিকে থেকে গিয়েছে ওই কথাটা— ‘না মানেই হ্যাঁ।’

আসলে এই রাগ ছদ্মরাগ। ‘শোলে (১৯৭৫)’ ছবির একটি দৃশ্য।

আসলে এ-ও পিতৃতান্ত্রিক সমাজের এক রূপ। মেয়েদের এই ‘লাজুক’ সত্তা সেই সমাজকে এক ধরনের তৃপ্তি দেয়। হয়তো সেই কারণেই এই কথাটা এখনও ‘বিলুপ্ত’ হয়ে যায়নি। অথচ ভেবে দেখলে সত্যি কি মেয়েরা চিরকালই এমন লাজুক ছিল যে, নিজেদের মনের কথা বলতে সংকোচ হতো? অথচ প্রাচীন ভারতের স্বয়ম্বর প্রথা তার ঠিক উলটো মতকেই মান্যতা দেয়।

মনে করা যাক মহাকাব্যের কথা। ‘মহাভারত’-এ রয়েছে, কাশীরাজার বড় মেয়ে অম্বার কাহিনি। হস্তিনাপুরের রাজা বিচিত্রবীর্যের সঙ্গে বিয়ে দিতে তাঁদের তিন বোনকেই নিয়ে যাচ্ছিলেন ভীষ্ম। কিন্তু মদ্রের রাজা শাল্বের প্রেমিকা অম্বার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না বিচিত্রবীর্যের স্ত্রী হওয়া। আর তাই তিনি স্পষ্ট করে ভীষ্ম-সহ গোটা পৃথিবীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বিয়ে করলে শাল্বকেই করবেন। এই অনমনীয় মানসিকতার সঙ্গে কি কোনও সাযুজ্য আছে ‘না মানেই হ্যাঁ’-র?

এক ধরনের গান এক সময়ে খুব দেখা যেত বাণিজ্যিক ছবিতে। নায়ক কার্যত ‘টিজ’ করছেন নায়িকাকে। আর নায়িকা তীব্র রাগে প্রত্যাখ্যান করছেন। আসলে সেই রাগ ছদ্মরাগ। ভিতরে ভিতরে তিনি পছন্দই করছেন নায়ককে। আর এখানেই বিপদ! ‘না মানেই হ্যাঁ’-র এই ‘ইন্টারপ্রিটেশন’ বহু ক্ষেত্রেই বিপজ্জনক। ইদানীং এই ধরনের গানের প্রচলন কমেছে ঠিকই। কিন্তু তা রয়ে গিয়েছে ভিতরে ভিতরে। আর ভুল ‘বার্তা’ দিচ্ছে।
মেয়েরা ‘না’কে ‘না’-ই বলেন। লজ্জায়, ব্রীড়ায় হয়তো কখনও কখনও সংকোচ আজও তার সঙ্গী, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই স্বরেও ‘হ্যাঁ’ই ফুটে থাকে। চিনে নিতে হবে পুরুষকে। না হলে ঠকতে হবে। মেয়েটিকে কেবল নয়, পুরুষকেও।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST