নওগাঁর মহাদবেপুরে ফিলিং স্টেশনের কর্মচারিকে মারপিটের ভিডিও ভাইরালের পর ওই ফিলিং স্টেশনের মালিকের দায়ের করা চাঁদাবাজি মামলায় সোহেল রানা (৪০) নামে কথিত এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ ।
সে উপজেলা সদরের বুলবুল সিনেমা হল এলাকার মৃত ইসমাইল মেম্বারর ছেলে। সে নিজেকে দৈনিক মানবকন্ঠ, দৈনিক খবরপত্র, দৈনিক জবাবদিহি ও প্রভাতি পত্রিকার মহাদেবপুর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেন।
রোববার (২১ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টায় মহাদেবপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সিনেমা হল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, ওই মামলায় উপজলার উত্তরগ্রামের দুলাল হোসেনের ছেছে ইউসুফ আলী সুমন (৩৮) ও মহাদেবপুর মডেল কুলাপাড়ার নজর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমক (৩৬)কে আসামী করা হয়েছে। ইউসুফ আলী সুমন নিজেকে দৈনিক যায়যায়দিন, খোলা কাগজ, প্রতিদিনের সংবাদ, প্রভাতি পত্রিকার মহাদেবপুর প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেন এবং তাদের সঙ্গী জাহাঙ্গীর আলম পেশায় একজন কসাই।
মামলার বাদি উপজেলা সদরের মাসুদ ফিলিং স্টেশনের মালিক মৃত মাদাচ্ছের আলীর ছেলে সাজেদুর রহমান সাজু অভিযোগ করেন, ওই তিনজন প্রায়ই মাটরসাইকল নিয়ে তার ফিলিং স্টেশন এসে কর্মচারিকে ভয়ভীতি দেখিয় বিনামূল্য তেল নিয়ে যায়। গত ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় তারা আবার সেখানে এসে বিনামূল্যে মটোরসাইকলের ট্যাংকি ভর্তি করে অকটন দিতে বলেন। কর্মচারি দিতে অস্বীকার করলে তারা মাটরসাইকেল থেকে নেমে ইউসুফ আলী সুমনের নির্দেশে সোহেল রানা ওই স্টেশনের কর্মচারি রিফাত হাসানকে জুতা দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে।
একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। তারা যাবার সময় তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে বলে। অন্যথায় ব্যবসা বন্ধ করে দিবে বলে হুমকি দেয়। সাজু জানান, রাতেই ফিলিং স্টেশনের সিসি ক্যামরা থেকে মারপিটের ভিডিও ডাউনলাড করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়।
মারপিটের শিকার কর্মচারি উপজেলার চাঁদাশ গ্রামের কিশোর রিফাত হাসান (১৮) জানায়, তাকে অন্যায়ভাবে জুতা দিয়ে মারপিট করা হয়েছে। এতে সে শারীরীক ও মানুষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছ।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, এব্যাপার পাম্প মালিক বাদি হয়ে নওগাঁর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক তা এজাহার হিসেবে গণ্য করে। এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণর জন্য মহাদেবপুর থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের আদেশের কপি পেয়ে হুবহু তা মামলা হিসেবে রুজু করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, মামলার অন্য আসামীদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আটক সোহেলকে দুপুরে নওগাঁ কোর্টে পাঠানো হয়েছে । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিং স্টেশনে মারপিটের ভিডিওটি ভাইরাল হলে এলাকায় ঘৃণা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সচেতন মহল দ্রুত দোষীদর শাস্তির দাবি করেন।
এর আগে চেক জালিয়াতি মামলায় সাজা পরোয়ানামূলে পুলিশ সোহেলকে গ্রেফতার করছিল। এছাড়া সুমনের বিরুদ্ধে আরও চাঁদাবাজী মামলা চলমান রয়েছে।
বিএ/