চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ভারতীয় হনুমানের হামলায় আহত ৫ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানিয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ মে রবিবার সোনামসজিদ স্থলবন্দর হয়ে ভারতীয় একটি হনুমান মটরসাইকেল যোগে ভোলাহাটের মেডিকেলমোড়ে আসে। এখানে এসে অটো, সিএনজি, ট্রাকট্ররে উঠে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরি করে। সে যেখানে যায় উসুক জনতা দেখার জন্য ভীড় জমায়। পরে সে বৃহত্তর বজরাটেক এলাকায় লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।
উৎসুক জনতা হনুমানটিকে দেখার জন্য ভীড় জমায় এবং ছবি তোলা, ভিডিও করা, বিভিন্ন প্রকার খাবার দিতে থাকে। কেউ কেউ বাড়ীতে পালন করার জন্য ধরার চেষ্টা করে। এতে হনুমানটি ক্ষুদ্ধ হয়ে ১০ মে সোমবার উসুক জনতার উপরে হামলা চালিয়ে ৫ জনকে আহত করে। আহতরা হলেন, রাধানগর কালিতলা গ্রামের শুকুর মাহজনের ছেলে জাহান (৬৫), আলিসাহাসপুর গ্রামের নজর আলী মাষ্টারের ছেলে গোহালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইয়ারুল(৪৫), কানারহাট শাহপাড়া গ্রামের আসরের ছেলে নফুল (৭০), বজরাটেক গ্রামের কাশেম(৭০) ও নুরুল ইসলাম(৬০)। আহতদের দ্রæত ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
দায়িত্বরত আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ শওকত আলী বলেন, ইয়ারুল ও জাহানের অবস্থা বেগতিক হলে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে ২ জন রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাঁকি ২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে চিকিৎসক জানান। তবে অপর আহত একজন স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে আহতের পরিবার জানায়।
আহতের কারণ জানতে ঘটনাস্থানে গেলে রাধানগর গ্রামের মলিন মন্ডলেন ছেলে সাবু জানান, হনুমানটিকে বিরক্ত করার কারণে ৫ জন আহত হয়েছেন। হনুমানটিকে তারা দড়ি-জিনজির দিয়ে বাঁধার চেষ্টা করে। এবাপারে গোহালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, আমি আহতদের দেখতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছিলাম। আহতেদের অবস্থা গুরত্বর হওয়ায় ২ জনকে রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। হনুমানটিকে বিরক্ত করার জন্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানান।
বন কর্মকর্তা সেরাজুল ইসলাম বলেন, হনুমানের প্রিয় খাবার শশা, গাজর ও আলু। অন্য খাবার দিলে তেমন খাবেনা। তাকে বিরক্ত করলে ক্ষতি করার আশংকা আছে। বিরক্ত না করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেছেন। ভোলাহাট ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের ইনর্চাজ শামশুল হক বলেন, উপজেলা নির্বাহী আমাকে হনুমানটি আটক জন্য বলেছিলেন। আমাদের কাছে আটক করার মত সরঞ্জাম না থাকায় হনুমানটি এখনো আটক করা হয়নি। এ কাজ বন বিভাগের। আমাদের সহযোগীতা চাইলে সহযোগীতা করবো বলে জানান। বর্তমানে হনুমানটি বৃহত্তর বজরাটেক এলাকায় লোকালয়ে
অবস্থান করছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান।
ভোলাহাট থানার অফিসার ইনর্চজ মাহবুবুর রহমান সরজমিন গিয়ে হনুমানটিকে বিরক্ত না করার জন্য স্থানিয়দের নিষেধ করেন। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, আমি ও বন বিভাগ হনুমানটি ধরার জন্য পরামর্শ করা হয়েছে।
ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অঃচাঃ) শেখ মেদেহী ইসলাম হনুমানটিকে বিরক্ত না করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন। কেউ যেন হনুমানটিকে বিরক্ত করতে না পারে সে জন্য তার পাশে থাকতে গ্রামপুলিশকে বলা হয়েছে।
এস/আর