ভোলাহাট(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাসিমউদ্দিন সরকারী নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর ভাতা ও ঈদ বোনাস বন্ধ করে বন্ধ করে দেয়ায় ঈদ হলো মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর। উপজেলার পঞ্চানন্দপুর গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা কলিমুদ্দিন বিশ্বাসের স্ত্রী কহিনুর বেগম অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামীর ২জন স্ত্রী। তার স্বামী ২০০১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মারা যাওয়ার ২ বছর পূর্বে ১ম স্ত্রী হানেফা বেগম মারা যান। ফলে নীতিমালা ২০১৩”এর অনুচ্ছেদ ৫ এ মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর সম্মানি ভাতা পাবার যোগ্য অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত উত্তরাধিকারীগন হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর পর
তাঁর স্ত্রী/ স্বামী বা তাঁহাদের অর্বতমানে পিতা/মাতা বা তাঁহাদেরও অর্বতমানে পুত্র-কন্যাগণ ভাতাপ্রাপ্ত হবেন উল্লেখ রয়েছে। ফলে নীতিমালা অনুযায়ী মৃত্যু মুক্তিযোদ্ধা কলিমুদ্দিন বিশ্বাসের জীবিত স্ত্রী হিসেবে কহিনুর বেগমের নামে সম্মানী ভাতা প্রদান করা হয়। কিন্তু হঠাৎ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাসিমউদ্দিন অতি উৎসাহিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার ১স্ত্রীর সন্তানদের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে
একটি চক্রের যোগসাযোসে ৫জুন একটি নোটিশ প্রেরণ করেন মৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাতাপ্রাপ্ত স্ত্রী কহিনুর বেগমকে। নোটিশে ৬জুন ভাতা সমবন্টন করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। শুনানীর দিন সমাজসেবা কর্মকর্তার অফিসে উপস্থিত হয়ে কহিনুর বেগমের ছেলে গোলাম কবির কর্মকর্তাকে বলেন,মৃত্যু মুক্তিযোদ্ধার জীবিত স্ত্রী বেঁচে থাকা অবস্থায় কোন সন্তান ভাতা ভোগী হবে না যদি হয় তা হবে নীতিমালা বর্হিভূত। এ সময় সমাজসেবা কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং ভাতা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষাণা
দিয়ে ভাতা ও ঈদ বোনাস বন্ধ করে দেন। এদিকে ১৭মে/১৮ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপসচিব(বাজেট) মতিয়ার রহমানের স্বাক্ষরিত তাঁর কার্যালয়ের পত্র স্মারক নং ০৫.১০.৪২০০.০০৯.০৮.০০২.২০১৭.৫৮ তারিখ ২৩ জানুয়ারী ২০১৮তে নীতিমালা ২০১৩ এর অনুচ্ছেদ ৫ এ মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ভাতা পাবার কথা বলে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু সমাজসেবা কর্মকর্তা এ সব প্রজ্ঞাপন ও নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে একটি বিশেষ চক্রের সাথে হাত মিলিয়ে মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে তিনি ভাতা ও ঈদ বোনাস না পেয়ে ঈদ উৎসব শোকে পরিণত হয়েছে। তার
ঈদ পার হয়েছে দুঃখ ও কষ্টের মধ্যদিয়ে। এ ব্যাপারে সমাজসেবা কর্মকর্তা নাসিমউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে সরকারী নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বেঁচে থাকা স্ত্রীর ভাতা কেড়ে নিয়ে নীতিমালার সব ধাপ টোপকে শেষ ধাপে গিয়ে সন্তানদের মাঝে ভাতা সমবন্ট করার রহস্য কি জানতে চাইলে আসল ঘটনা এড়িয়ে যান। এদিকে ভাতা ও ঈদ বোনাস বন্ধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি যথাযথ উত্তর দেননি। একই বিষয়ে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বর্তমান দায়িত্বে থাকা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার
আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন নতুন একটি পরিপত্রে মৃত্যু মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বেঁচে থাকলে অন্য কেউ ভাতাপ্রাপ্ত হবে না বলে জানান। তিনি সমাজসেবা অফিসারকে নীতিমালা অনুযায়ী ভাতা প্রদানের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন।
এদিকে সাবেক উপজেলা কমান্ডার আলহাজ্ব নুরুল হক বলেন, ভাতা বন্ধ করাটা নীতিমালা লংঘ্ন। এ ব্যাপারে নীতিমালা বর্হিভূত ভাবে মৃত্যু মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর ভাতা বন্ধ করায় সমাজসেবা কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ইউনিট ও ভোলাহাট ইউনিট। ভূক্তভূগি মৃত্যু মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী কহিনুর বেগম নীতিমালা অনুযায়ী তাকে তার স্বামীর সম্মানি ভাতা প্রদানে বঞ্চিত করায় যথযথ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করেছেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ