স্পোর্টস ডেস্ক: ক্রিকেট মাঠে সাধারণত স্লেজিং করা হয় প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে রাগিয়ে দেয়ার জন্য। যাতে করে উত্তেজনার বশে কোন ভুল করে বসেন তিনি এবং সেই ফায়দা নিতে পারে স্লেজিং করা খেলোয়াড়ের দল। কিন্তু সব স্লেজিংই যে ইতিবাচক ফল বয়ে আনে- এমনটা কিন্তু নয়।
ঠিক যেমনটা বলা যায় অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ ও শোয়েব আখতারের ক্ষেত্রে। ২০০৫ সালের ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজের ফয়সালাবাদ টেস্টে শোয়েবকে ‘টারজান’ বলে স্লেজিং করেছিলেন ফ্লিনটফ। যার খেসারত তাকে দিতে হয়েছিল নিজের অফস্টাম্প হারিয়ে।
শুধু ফ্লিনটফকে বোল্ড করাই নয়, সেদিনের ঐ স্লেজিং বদলে দিয়েছিল শোয়েবের ক্যারিয়ারই। প্রায় ১৫ বছর পর এসে শোয়েবের উপলব্ধি, ‘ভাগ্যিস সেদিন ফ্লিনটফ স্লেজিং করেছিল।’ যে কারণে আরও দীর্ঘায়িত হয়েছিল শোয়েবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার।
ওয়ানডে ক্রিকেটে যেমন-তেমন, তখন তুমুল সমালোচনা চলছিল শোয়েবের টেস্ট বোলিং নিয়ে। বলাবলি করা হচ্ছিল, হয়তো আর বেশিদিন টেস্ট খেলা হবে না রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসের। ঠিক তখনই তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে পাকিস্তান যায় ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয় টেস্টে শোয়েবকে ক্ষেপানোর জন্য ফ্লিনটফ বলেন, ‘তুমি তো দেখতে টারজানের মতো। কিন্তু বোলিং করো জেনের (টারজানের নায়িকা) মতো।’ এ কথাই যেন বটিকার মতো কাজ করে শোয়েবের জন্য। সেই ম্যাচেই উপড়ে দেন ফ্লিনটফের অফস্টাম্প।
পরে তিন ম্যাচের সিরিজে ১৭ উইকেট নিয়ে হন সিরিজের সেরা বোলার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সময়কালও বাড়ে প্রায় ৬ বছর। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের বিদায় নেন ক্রিকেট থেকে। তবে টেস্ট থেকে অবসর নেন ২০০৭ সালে।
ফ্লিনটফের বিপক্ষে সেই দ্বৈরথের স্মৃতিচারণ করে শোয়েব বলেন, ‘মানুষজন প্রায়ই আমার এক হাত নেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকত। টিম ম্যানেজম্যান্টের সঙ্গেও আমার নানান ঝামেলা হয়েছিল। সবকিছুর পর আমি ফ্রেডির (ফ্লিনটফ) কাছে কৃতজ্ঞ। তুমি যদি সেই কাজটি (স্লেজিং) না করতে, আমার ক্যারিয়ার অনেক আগেই থেমে যেত।’
তিনি বলতে থাকেন, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সিরিজে তুমি যদি অমন আচরণ না করতে, আমি ইতিবাচক অর্থেই বলছি, তুমি সেদিন আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করেছ। আমার মনে হয়, সেদিনের আচরণ একটু বেশিই রাগী ছিল। তুমি হয়তো আমাকে বুঝতে পারোনি। কারণ আমরা একসঙ্গে তেমন সময় কাটাইনি।’
ফ্লিনটফের সেই স্লেজিংয়ের কথা মনে করে শোয়েব বলেন, ‘সবকিছু ছাপিয়ে সেই বিখ্যাত স্লেজিং, “তুমি তো দেখতে টারজানের মতো। কিন্তু বোলিং করো জেনের (টারজানের নায়িকা) মতো।” আমি বললাম এই জেন অনেক জোরে বোলিং করতে পারে, যা তোমরা দেখবে। আমি তখন স্টিভ হারমিসনকেও বলেছিলাম, তোমাদের সামনে দুঃখ আছে। তখন সেও আমাকে বলে, পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত আছি। তবে ফ্লিনটফের বিপক্ষে বদলা নিতে বদ্ধ পরিকর ছিলাম আমি।’
খবর২৪ঘন্টা/নই