বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের রাতের ম্যাচটি ছিল মৌসুমের ৫ম এল ক্লাসিকো। আগের ৪টির ৩টিতেই জিতেছিল বার্সা। তাও আবার সর্বশেষ তিন মুখোমুখি দেখায়। আজ রাতে কোপা দেল রের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সবমিলিয়ে ফেবারিট ভাবা হচ্ছিল বার্সাকেই। এল ক্লাসিকোতে রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তির বিপক্ষে বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়েও কথা হচ্ছিল অনেক। কথা হচ্ছিল তাদের সম্ভাব্য কৌশল নিয়েও।
ম্যাচের প্রথম ৪৫ মিনিট রিয়ালের ওপর দাপটও দেখিয়েছে স্বাগতিক বার্সা। থিবো কোর্তোয়া দারুণ কিছু গোল না বাঁচালে এগিয়েও যেতে পারত তারা। কিন্তু নাটকীয় চিত্রনাট্যে পরের গল্পটা লেখা হলো ভিন্নভাবে। বার্সারই দুর্দান্ত এক আক্রমণ নষ্ট করে পাল্টা আক্রমণে গল্পটা লেখা শুরু করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও করিম বেনজমা। ভিনির গোলেই ম্যাচে লিড নেয় রিয়াল। দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচ তখন ১-১ সমতায়।
বিরতির পর দৃশ্যপটে শুধুই বেনজেমা। দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে দুটি এবং পেনাল্টি থেকে অন্য গোলটি করে নিজের টানা দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক আদায় করে নেন এই রিয়াল স্ট্রাইকার। এর আগে লা লিগায় রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ম্যাচেও হ্যাটট্রিক করেছিলেন বেনজেমা। আর ব্যালন ডিথঅর জয়ী তারকার আগুনে রাতে রিয়াল পায় ৪-০ গোলের দুর্দান্ত এক জয়। এ জয়ে প্রতিশোধ মিশন সম্পন্ন করার পাশাপাশি কোপা দেল রের ফাইনালও নিশ্চিত করেছে রিয়াল। আগামী ৬ মে ফাইনালে রিয়ালের প্রতিপক্ষ ওসাসুনা।
রাশফোর্ডের গোলে শীর্ষ চারে ফিরল ইউনাইটেড
রাশফোর্ডের গোলে জিতেছে ইউনাইটেড
শুধু এটুকুই নয়, এদিন দেখা মিলেছে ক্লাসিকোর সেই পুরোনো উত্তাপেরও। কয়েক দফায় দুই দলের খেলোয়াড়েরা বিতণ্ডায় জড়ান। ডাগআউটে দাঁড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেছেন বার্সা কোচ জাভিও।
এদিন নিজেদের মাঠে খেলা শুরুর ২ মিনিটের মাথায় রিয়ালকে পরীক্ষায় ফেলে বার্সা। কিন্তু দানি কারভাহালের দৃঢ়তায় নিরাশ হতে হয় স্বাগতিকদের। ম্যাচের শুরু থেকেই প্রেস করে রিয়ালকে চাপে রাখে বার্সা। তাদের গতিময় ফুটবলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল রিয়ালকে। ম্যাচের ১০ মিনিটে আবার রিয়াল ডিফেন্সকে কাঁপিয়ে দেয় বার্সেলোনা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ডেভিড আলাবার তৎপরতায় বেঁচে যায় রিয়াল।
বাঁ-প্রান্ত দিয়ে বালদে রিয়ালকে রীতিমতো তটস্থ করে রাখছিলেন। বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ রেখে বারবার হুমকি তৈরি করছিলেন এই স্প্যানিশ তারকা। ১৪ মিনিটে তাঁর করা ক্রসে রাফিনিয়ার হেড সরাসরি জমা হয় রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার হাতে।
গোল না পেলেও রিয়ালকে খুব একটা সুযোগ দিচ্ছিল না বার্সা। লম্বা পাসে রিয়াল ডি-বক্সের আশেপাশে বল ফেলে বারবার সুযোগ তৈরির চেষ্টা করছিল জাভি হার্নান্দেজের দল। যদিও কাজের কাজটি হচ্ছিল না।
২৫ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল। যদিও তাতে বড় কোনো বিপদ হয়নি ক্যাম্প ন্যুর দলটির। এর মাঝে এল ক্লাসিকোর চিরায়ত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মাঝে। ভিনিসিয়ুসের সঙ্গে ঝগড়া লেগে যায় গাভির। দুই জনকেই হলুদ কার্ড দেখিয়ে থামান রেফারি। ৩২ মিনিটে আবারও রিয়াল রক্ষণকে চাপে ফেলে বার্সা। যদিও বার্সার গোল যেন সোনার হরিণ! পাল্টা আক্রমণে বার্সার পরীক্ষা নিয়েছিল রিয়াল। কিন্তু তারাও পায়নি জালের খোঁজ।
বিএ/