পাবনা প্রতিনিধি :
পাবনার বেড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক শামীম আক্তার বাদী হয়ে আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বেড়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
আহত প্রধান শিক্ষক শামীম আকতার জানান, হাটুরিয়া-জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই বিঘা আয়তনের একটি পুকুর লিজ দিয়ে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক শামীম আক্তারের দ্ব›দ্ব চলছিল। সভাপতি নুরুল ইসলাম বিদ্যালয়ের পুকুর ৯ বছর ধরে লিজ দিয়ে টাকা তুলে বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এবারও পুকুরটি বিদ্যালয়ের সদস্য আব্দুল আলীমকে লিজ দিয়ে টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা না দিয়ে সভাপতি ও সদস্য আলীম ভাগ করে নেন।
প্রধান শিক্ষক শামীম আরো জানান, বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে পুকুর লিজের টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা দেয়ার জন্য সভাপতিকে অনুরোধ করলে তিনি শোনেননি। বরং বিষয়টি নিয়ে সভাপতি ও তার সহযোগী তার ওপর ক্ষিপ্ত হন। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুুপরে বিদ্যালয় পরিদর্শণে যান উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আবু সাইদ। কিছুক্ষণ পর স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম তার দুই সহযোগীসহ সেখানে যান। এ সময় সহকারী শিক্ষা অফিসারের সামনে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেয়ার কথার জেরে সভাপতি নুরুল ইসলাম তার দুই সহযোগীকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক শামীম আক্তারের ওপর চড়াও হয়ে মারধর করেন। 
এ ঘটনার পর আহত প্রধান শিক্ষক শামীম আকতার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সহকারী শিক্ষা অফিসার আবু সাইদকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানান। পরে তাদের পরামর্শে বেড়া মডেল থানায় সভাপতি ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করেন প্রধান শিক্ষক।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আবু সাইদ বলেন, প্রধান শিক্ষককে আমার সামনে মারধর করেছেন ওই নুরুল ইসলাম ও তার দুই সহযোগী। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজি নুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আসলে বড় নয়। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
এ বিষয়ে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, প্রধান শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের একটি কপি বেড়া মডেল থানায় এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেড়া মডেল থানা পুলিশের ওসি মো. শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু করেছি। এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সভাপতিসহ অভিযুক্তদের পাওয়া যায়নি। তারা পলাতক।

আর/এস