পাবনা প্রতিনিধি: পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। এসময় বর মো. নাইম হোসেন (২৪), তার বাবা ও তিন ভগ্নিপতিকে কারাদণ্ড ও কাজীকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে সদরের খয়ের বাগান এলাকায় মেয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এ বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়।
অভিযানে থাকা পাবনা সদর থানা পুলিশের উপ পুলিশ পরিদর্শক (এস আই) সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাবনা সদর ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমরা অভিযানে অংশগ্রহণ করি। সেখানে বিয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে ছেলে, ছেলের বাবা, তিন ভগ্নিপতি ও কাজীকে আটক করা হয়েছে।
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে পাবনা সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাবনা সদরের ভাড়ারা ইউনিয়নের খয়ের বাগান এলাকায় বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঘটনার সত্যতা মিললে বরসহ চারজনকে কারাদণ্ড ও কাজীকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
ছেলে মো. নাইম হোসেনকে (২৪) বাল্যবিয়ে আইনে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। তার বাবা মো. হেলাল হোসেনসহ বরের তিন ভগ্নিপতি- নলদাহ গ্রামের মো. রোস্তম মোল্লার ছেলে হামিদুল, একই গ্রামের শাহজাহান প্রমাণিকের ছেলে শাহাবুদ্ধি ও বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার লক্ষ্মীতলা গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে শিবাবুদ্দিনকে ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া বাল্যবিয়ের পড়াতে আসার জন্য কাজী আওকাত হোসেনকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, মেয়ের বাবা নিজের ভুল এবং দারিদ্রতার কথা স্বীকার করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা মেয়েটির শিক্ষার সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছি। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর অধীনে তাকে একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। মেয়ের প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার জন্য তার কাছে থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, সরকারের নিয়মনীতি অনুসারে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আমরা অভিযান করেছি। অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো মেয়ে বা ছেলের বিয়ের সংবাদ পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর২৪ঘণ্টা, এমকে