বাঘা প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার রুস্তমপুর বাজার মসজিদের উত্তর পাশের সরকারি সম্পত্তি থেকে প্রায় দেড়’শ বছরের পুরোনো একটি আম গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় আ’লীগের কয়েক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এ গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহি অফিসারকে জানানোর পরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
সোমবার (০৫-০২-১৮) সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬জন শ্রমিক গাছের গোড়া কাটার কাজ করছিলেন। গত দুই সপ্তাহে ওই গাছটির ডালপালা কেটে নেওয়া হয়েছে। তারা জানান পৌর মেয়র মোক্তার আলীর নির্দেশে গাছ কাটছেন তারা। এ কথা বলেই সটকে পড়েন শ্রমিকরা।
স্থানীয়রা জানান, বাজারটি বর্তমানে আড়ানি পৌরসভার মধ্যে পড়েছে। আম গাছটি রুস্তমপুর সরকারি হাট-বাজারের জায়গায় নির্মানাধীন মসজিদ সংলগ্ন উত্তরে। গাছটি কমপক্ষে দেড়’শ বছর আগে লাগানো হয়েছে। এর ৫ মাস আগেও মসজিদের পশ্চিমে সরকারি জায়গায় লক্ষাধিক টাকার আম গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। বাঁধা দিতে গিয়ে অনেককে গালাগালি শুনতে হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কাঠ ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে কাটা গাছটির দাম কমপক্ষে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা হবে।
মসজিদ সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব কোণের বাসিন্দা সালেহা বেওয়া জানান,গাছের গোড়ার কিছু অংশ তার বাড়ির জমির সীমানায় পড়েছে। ওই গাছটি তাদের রেকর্ডিয় সম্পত্তিতে। ভুল তথ্য উপস্থাপন করে সরকারি সম্পত্তি দেখানো হয়েছে। ওই গাছের মালিকানা পাওয়ার জন্য মেয়র মোক্তার আলীর কাছে অভিযোগ করেছেন।
কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় আ’লীগ নেতা সাবেক মেম্বর আব্দুল জলিলের ছেলে জয়নাল, আমিনের ছেলে জনি,আকবর হোসেন টনার ছেলে আজিবর,বাতনের ছেলে নজরুল তার সংগীয় লোকজন নিয়ে ২ সপ্তাহ আগে গাছের ডালপালা কাটা শুরু করে। প্রশাসনের লোকজন এসে নিষেধ করলে বন্ধ রাখে। কিছুদিন পর আবারও গাছের ডাল পালা কাটা শুরু করে। সেবারও প্রশাসনের নিষেধে বন্ধ রাখে। কিন্তু কেটে ফেলা ডাল পালা তারা নিয়ে যায়। শনিবার থেকে গাছের গোড়ার মাটি তুলে গাছটি কাটতে শুরু করেছে। গাছের কাটা ডাল বাড়ির ছাদের উপর পড়ে কিছু অংশ ভেঙ্গে গিয়ে অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান এই বিধবা।
অভিযুক্তদের একজন পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি জয়নাল বলেন,এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে মসজিদ মেরামতের জন্য মেয়র গাছটি কাটতে বলেছেন বলে শুনেছি। মেয়র মোক্তার আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মসজিদের টয়লেটের হাউস এর জন্য মসজিদ কমিটি আবেদন করেছে। গাছ বিক্রির টাকা মসজিদে দেওয়া হবে। মসজিদ কমিটির সভাপতি রজব আলী জানান, মেয়রের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু কোন টাকা পাননি।
উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি)ও নির্বাহি অফিসার( অতিরিক্ত দায়িত্বে) যোবায়ের হোসেন বলেন, গাছটি সরকারি সম্পত্তিতে হওয়ায় একাধিকবার কাটতে বাঁধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্দেশ উপেক্ষা করে সরকারি গাছ কাটার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নামে মামলা দায়ের করতে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারিকে বলা হয়েছে।থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হাসান রেজা জানান, এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ