বাঘা প্রতিনিধি: বিয়ের বছর পার না হতেই স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করে নির্যাতন করতো স্বামী। তার একাজে বিরোধিতা না করে বরং উসকায়ে দিত মা। বিয়ের সময় যৌতুকের কোনও কথাবার্তা না থাকলেও অর্থলোভী স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন নববধুর কাছে বিভিন্ন সময়ে যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকা না পেয়ে ৩মাসের গর্ভবতী অবস্থায় নববধুকে বাবার বাড়িতে রেখে আসে স্বামী। সন্তান প্রসবের পর খোঁজ খবর না নেওয়া দেখে,চলে আসেন স্বামীর বাড়িতে। কিন্তু যৌতুক ছাড়া সেখানে স্থান হয়নি তার। অবশেষে স্বামী এনামুল হক ও তার মা জাকেরা খাতুনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন নববধু আয়েশা খাতুন ।
যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করা মামলায় মা-ছেলের জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী দিয়াড় পাড়া গ্রামের মৃত কোরবান আলীর স্ত্রী ও ছেলে । এনামুলের মা জাকেরা খাতুন উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়া হিসেবে কর্মরত বলে জানা গেছে। মামলার বাদিনী আয়েশা খাতুন পাবনা জেলার সদর থানার মির্জাপুর গ্রামের আলা উদ্দীন সেখের মেয়ে। সোমবার (১৯ মার্চ) পাবনার আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত এর বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিঃ ম্যাজিঃ (কগ-১) উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে মা-ছেলেকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর মামলাটি দায়ের করেন আয়েশা খাতুন(মামলা নং সিআর ৮০৯/২০১৭(পাবনা)।
মামলা সুত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২১ অক্টোবর দেড় লাখ টাকা মোহরানা ধার্য করে রেজিস্ট্রি কাবিননামা মূলে বাঘা উপজেলার আড়ানী দিয়াড় পাড়া গ্রামের এনামুল হকের সঙ্গে মোছা.আয়েশা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বর পক্ষ যৌতুক বাবদ ২লক্ষ টাকা দাবি করলে কনে পক্ষের আত্নীয় স্বজন বিভিন্ন উপহার সামগ্রী প্রদান করে। পরে যৌতুক দাবি করে অত্যাচার নির্যাতন করতে থাকে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৭ জুন স্ত্রী আয়েশাকে নিয়ে তার পিতার বাড়িতে গিয়ে ২লক্ষ টাকা নিয়ে দেওয়ার কথা বলে এনামুল। এতে রাজি না হলে ৩মাসের গর্ভবতী অবস্থায় আয়েশা খাতুনকে তার বাবার বাড়িতে রেখে আসে যৌতুকলোভী স্বামী এনামুল। ২০১৭ সালের ৩ডিসেম্বর বাদিনীর পিতার বাড়িতে একটি কন্যা সন্তান হয়।
একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর নবজাত সন্তানসহ আয়েশাকে তার স্বামীর বাড়িতে রাখতে যায় তার (আয়েশা) পিতা আলা উদ্দীন সেখ। এ সময় ২লক্ষ টাকা যৌতুক ব্যতিত রাখতে অস্বীকার করে এনামুল ও তার মা জাকেরা। আয়েশার পিতা জানান, দেনমোহর ও ভরণপোষণ দাবি করায়,কৌশলে তার মেয়ের কাছ থেকে ফাঁকা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে আয়েশা বাদী হয়ে তার স্বামী এনামুল ও শ্বাশুড়ি জাকেরাকে আসামি করে জেলা পানার অতিরিক্ত চীফ জুডিঃ ম্যাজিঃ (কগ-১) আদালতে মামলা দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সোমবার (১৯ মার্চ) সোমবার তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ