বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের মিলন হত্যা মামলার কোন আসামীকে ৫ দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি বাগমারা থানার পুলিশ। গত শুক্রবার বিকেলে একই এলাকার মাদক বিক্রেতা জুয়েল রানার ধারালো চাকুর আঘাতে মারা যান মিলন । হত্যার ঘটনায় রাতেই নিহত মিলনের বাবা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে জুয়েল রানাকে প্রধান আসামী করে দুই জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনায় ঘটনারস্থ পরিদর্শনে আসেন রাজশাহীর সদর সার্কেল ও সহকারী পুলিশ সুপার আহম্মেদ আলী। তিনি ঘটনারস্থল
পরিদর্শন শেষে ঘটনার সাথে জড়িত মিলন হত্যাকারী মাদক বিক্রেতা জুয়েল রানাকে গ্রেপ্তারের জন্য বাগমারা থানার পুলিশকে নির্দেশ দেন। এদিকে বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হঠাৎ করে ঈদের আগ থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরা হয়ে উঠেছে। পুরতন মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মগোপনে নতুন নতুন ছেলেদের কে দিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে । মাদক বিরোধী অভিযান শিথিল হওয়া নিরাপদে তারা পূর্বের রূপে ফিরে আসেছে। উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ পৌরসভার ব্রীজ ঘাট, মোহনগঞ্জ বাজারের মাছ হাটা কষায় মমতাজ, মচমইল এর আপন পলাশ, গণিপুরের হায়াতপুর গ্রামের জয়নাল হাজারী কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের গ্রামের
মোহনপুর গ্রামর মাদক স¤্রাট আবু বাক্কার সহ চিহ্নিত হাটগাঙ্গোপাড়া, তাহেরপুর শিকদারী হামিরকুৎসা, মাদারী গঞ্জ সহ কাচারীকোয়ালীপাড়া ইউনিয়ন সহ আশে পাশের এলাকায় চরম বেপরোয়া ওঠেছে কথিপয় মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী। তারা ওই এলাকায় দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে মাদকের বেচাকেনা ও মাদকের আড্ডা বসালেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়না এলাকাবাসী। তারা এতটাই বেপরোয়া এবং সব সময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করার কারণে তাদেরকে সমীহ করে চলতে হয় এলাকার লোকজনকে। কলেজ শিক্ষক একজন মৎস ব্যবসায়ীসহ ১৫/১৬ জন স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকায় মাদকের গড়
ফাদার হিসাবে পরিচিত আবু বাক্কার সহ উল্লেখিত ব্যক্তিরা মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত। তাদের রয়েছে কিছু ক্যাডার বাহিনী। তারা তাদের মাধ্যমে এলাকায় সন্ধ্যার পরে মাদক ইয়াবা হেরোইন, গাঁজা সহ বিভিন্ন মাদক বিক্রির কাজে নেমে পড়েন। দূর এলাকা থেকেও মাদকসেবীরা এসে ক্যাডার বাহিনীর ছত্রছায়ার মাদক সেবন করে নির্বিগ্নে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এলাকার সাধারন লোকজনের মতে, এলাকায় পুরোপুরি মাদক মুক্ত করতে প্রয়োজনে র্যাবের সহযোগিতা নিয়ে ব্যাপক অভিযান পরিচালনার দাবী জানান তারা। তা না হলে মাদক সেবন ও ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এভাবে একের পর এক হত্যাকান্ড ও সংর্ঘষের ঘটনা বাড়তেই থাকবে।
উল্লেখ্য গত বুধবার ঈদুল আজহার দিনে বিকেলে মাদক বিক্রিকে কেন্দ্র করে জুয়েল রানা ও মিলনের মধ্যে কথাকাটি ও হাতাহাতি হয়। ওই ঘটনার জের ধরে গত শুক্রবার বিকেলে জুয়েল রানা তার বাড়ীর পার্শ্বের একটি মুদি দোকানে বসেছিল। জুয়েল রানকে বসা দেখে মিলন তার মারার প্রতিশোধ নিতে বাড়ী থেকে মোটর সাইকেলের চেইন নিয়ে যায় এবং জুয়েল রানার উপর আক্রমন করেন। দুই জনের মধ্যে হাতাহাতির এক পর্যায়ে দোকানের লোকজন তাদের দুইজনকেই মারামারি থেকে প্রতিহতের চেষ্টা করে। সুযোগ বুঝে জুয়েল রানা তার প্যান্টের পকেটে থাকা ধারালো চাকু মিলনের পেটের মধ্যে ঢোকিয়ে দিয়। ধারালো চাকুর আঘাতে মিলনের শরীর থেকে প্রচুর পরিমান রক্তক্ষরন দেখা দেয়। ওই সময় স্থানীয় লোকজন মিলনকে ভবানীগঞ্জ ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। চিকিৎসক আব্দুল বারী মিলনের অবস্থা থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের
পরামর্শ দেয়। পরিবারের সদস্যরা মিলনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্স তোলার সময় সে মৃত্যু কোলে ঢোলে পড়ে। মিলনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারন মানুষের মধ্যে আতংক দেখা দেয়। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ এলাকায় কয়েকজন চিিহ্নত মাদক ব্যবসায়ীর কারনেই পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তারা অবিলম্বে ওই সকল মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন।অভিযোগ আছে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে মাদক ব্যবসা করছে ও অনেক সাধারন মানুষকে তারা মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করছে ।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাসেল কবির জানান, রাতে মামলা দায়ের পর কাগজপত্র হাতে পেয়েছি। রাত থেকেই থানার বিভিন্ন এলাকায় সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। অল্প সময়েল মধ্যে হত্যার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবেন বলে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি এলাকায় মাদক ব্যবসা ও সেবন নিমূলে পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান।
/জেএন