বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের কোয়ালীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভূয়া শিক্ষকের নামে অবৈধভাবে বেতন-ভাতা উত্তোলন কার্যক্রম অবশেষে বন্ধ করা হলো স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির হস্তক্ষেপে। স্কুলে ভূয়া শিক্ষকের নামে এমপিওভূক্ত করে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে অবৈধভাবে বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান প্রামানিককে শোকজ করার পর স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আর, কে মোসলেম উদ্দিন এই পদক্ষেপ নিলেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কর্তৃপক্ষের চোখে ধোকা দিয়ে বাগমারার কোয়ালীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে জনৈক আমজাদ হোসেন প্রাং নামে এক ব্যক্তির সার্টিফিকেট ও ভূয়া কগজপত্র দাখিল করে এমপিওভূক্ত করা হয়। প্রকৃতপক্ষে ওই স্কুলে শাখার কোনো অনুমোদন নেই এবং আমজাদ হোসেন প্রাং, জন্ম তারিখ: ১০/০৫/১৯৭৯ ইং নামে কোনো শিক্ষকও কর্মরত নেই। অথচ কোয়ালীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের (কোড নং ৮৬০২২০১৩০৪) এমপিও শিটের তালিকায় ওই ভূয়া শিক্ষকের নামে ইনডেক্স (নং ১০৩১৭৭৫) ও ব্যাংক হিসাব (নং ৩৪০১৭৯২৯) খুলা হয়েছে। উক্ত হিসাব নম্বরের মাধ্যমে প্রাপ্যতাবিহীন পিয়ন পদে ১৯৯৮ সালে নিয়োগকৃত (ননএমপিওভূক্ত) আমজাদ হোসেন প্রাং, জন্ম তারিখ: ১৩/০৫/১৯৭৮ইং, শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম শ্রেণী এর নাম ব্যবহার করে সোনালী ব্যাংক লি: ভবানীগঞ্জ শাখা থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছিলেন প্রধান শিক্ষক।
এ ঘটনায় চন্ডিপুর গ্রামের মৃত কোকাই মন্ডলের ছেলে ওয়াজেদ আলী গত ২৩ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। এ প্রেক্ষিতে বিভিন্ন পত্রিকায় ও টিভি চ্যানেলে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হওয়ার পর শিক্ষা বিভাগে তোলপাড়া শুরু হয় এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নোটিশের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান প্রামানিক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, স্থানীয় কিছু লোকের চাপেপড়ে আমি এই কাজ করতে গিয়ে ফেঁসে গেছি।বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আর, কে মোসলেম উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষক বেতন বিলেন কাগজপত্রের মধ্যে যে এ ধরনের একটা ঘটনা করে রেখেছেন তা আগে আমি জানতাম না। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টিভির খবরের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পেরে ওই ভূয়া শিক্ষকের নামে আসা বেতন-ভাতা উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছি।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মস্তাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে অবৈধভাবে বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে প্রাথমিকভাবে শোকজ করা হয়েছে। এরপর নিয়ম অনুয়ায়ী পরবর্তী পদক্ষে গ্রহন করা হবে।জেলা শিক্ষা অফিসার লাইলী বানু বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে ভূয়া শিক্ষকের নামে এমপিওভূক্ত করে এবং ওই ভূয়া শিক্ষকের নামে আসা বেতন-ভাতা অবৈধভাবে উত্তোলন করে প্রধান শিক্ষক যে অপরাধ করেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য। এই টাকা অবশ্যই তাকে সরকোরী কোষাগারে ফেরত দিতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর ২৪ ঘণ্টা/এমকে
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।