বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাইয়ের বাড়ি ভাংচুর করে বাড়ি লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের চাপড়া মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত মেছের আলীর ছেলে কাশেম আলীর বাড়িতে রাজশাহী শহর থেকে ৫০-৬০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে তারই বড় ভাই এ্যাড. আবুল কালাম নগদ ৫ লাখ টাকা লুটপাট নিয়ে গেছে। সেই সাথে বাড়িতে ভাংচুর চালিয়ে সোর্ণালংকা, ঘরের টিন, চাউল, আসবাবপত্র সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ২টি পিকআপ এবং ২টি শ্যালো চালিত ভুটভুডি লোড করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলার কারনে বাহিরে রাত্রি যাপন করতে হচ্ছে কাশেম আলীর পরিবারকে।
অভিযোগ পাওয়ার পর দ্রæত ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন বাগমারা থানা পুলিশ। পরিদর্শনে ঘটনার সত্যতা মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানাগেছে।
রবিবার গিয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, মাটির দোতলা বিশিষ্ট পিতার আমলের ছয়টি কক্ষ নিয়ে কাশেম আলী তার পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। মেছের আলী জীবিত থাকা অবস্থায় স্ত্রী, ৩ ছেলে এবং ৩ মেয়ে সন্তান নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করতেন। মেয়ের বিয়ের পর ছেলেদেরকে পৃথক পৃথক স্থানে বসবাস করার জন্য জমি দেয়। পরে তারা সেখানে বাড়ি বানিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করে। জীবিত অবস্থায় মেছের আলী যে বাড়িতে বসবাস করতেন সেটা কাশেম আলীকে দিয়ে যান। গত ২০২১ সালে মারা যায় মেছের আলী। পিতার মৃত্যুর পর স্ত্রী এবং দুই ছেলে নিয়ে পুরাতন ওই বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন কাশেম আলী। অপরদিকে যৌথ অবস্থায় থাকার সময় অন্য ভাইয়েরা জমিতে থাকা গাছপালা কেটে বাড়িতে ব্যবহার করে।
অন্যদিকে এ্যাড. আবুল কালাম উকালতির কারনে রাজশাহীতে বসবাস আরম্ভ করেন। প্রায় ৪০ বছর পর আবুল কালাম নিজে থেকে ছোট ভাই কাশেম আলীর বাড়িতে ভাড়াটিয়া দিয়ে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা সহ বাড়ি ঘর লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তাদের সকলের হাতেই ছিলো বিভিন্ন রকমের ধারালো অস্ত্র। কাছে এলেই খুনের হুমকী প্রদান করে ভাড়াটিয়া সস্ত্রাসী বাহিনী। বর্তমানে সবকিছু হারিয়ে খোলা জায়গায় বসবাস করতে হচ্ছে কাশেম আলীর পরিবারকে। ভালো বাড়ি ঘরে হামলা করে সব শেষ করে দিয়েছে।
রান্নার চুলা, রাইস কুমার, থালা বাসন, ঘরের আসবাবপত্র সব কিছুই ভাংচুর করেছে তারা। রান্না করে খাওয়ার উপায়ও রেখে যায়নি। লুটপাট সহ বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করা হয়েছে। অসহায় হয়ে বিভিন্ন স্থানে ছুটাছুটি করছেন কাশেম আলী। এদিকে বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার খবর শোনার পরে ঘটনাস্থলে আসেন গনিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ। ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি মুনসুর রহমান মৃধা সহ অনেকে। তারা নেক্কার জনক এবং পরিকল্পিত ভাবে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বাড়ি ঘর ভাংচুর সহ সোনাদানা, নগদ টাকা, টিন, আসবাবপত্র সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে জাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অবৈধ ভাবে হামলা চালিয়ে একটি পরিবারকে নিঃস্ব করা উচিত হয়নি বলে জানায় তারা। যদি কোন অংশ পেয়ে থাকে তাহলে আইনের মাধ্যমে তা বাহির করে নেয়া যেত। বাড়িঘর লুট করে সবকিছু নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি।
কাশেম আলী জানান, আমি পিতার দেয়া জায়গাতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছি। কোন ভাইয়ের সাথে কোন রকম শত্রæতা নেই। অবৈধ ভাবে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার বাড়িতে বড় ভাই এ্যাড. আবুল কালাম ভাংচুর সহ লুটপাট করে সমস্ত কিছু নিয়ে গেছে। মাথা গোজার শেষ সম্বল টুকু গুড়িয়ে দিয়েছে তারা। পরিবার নিয়ে এখন আমি কোথায় যাবো। আমি এর বিচার চাই।
এ ঘটনায় বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান জানান, এ্যাড. আবুল কালাম বাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে বলে তার ছোট ভাই থানাকে অবহিত করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর২৪ঘন্টা/নই