1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
বাগমারায় বেড়েই চলেছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে জনমনে উদ্বেগ! - খবর ২৪ ঘণ্টা
রবিবার, ১২ জানয়ারী ২০২৫, ০২:১০ অপরাহ্ন

বাগমারায় বেড়েই চলেছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে জনমনে উদ্বেগ!

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৮

বাগমারা প্রতিনিধি :
রাজশাহীর বাগমারায় সম্প্রতি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি দেখা দিয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর চরম অবহেলা ও গাফিলতির কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়তই খুন, ধর্ষন, অপহরণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, হামলা, ভাংচুর, সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও জমি দখলসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে। এতে জনমনে চরম আতংক ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

বাগমারা থানার দেওয়া তথ্য মতে, বুধবার (১৮ এপ্রিল ২০১৮) সকালে উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের একটি বিলে মাছচাষ নিয়ে বিরোধের জের ধরে জোকাবিল মৎস্যজীবী সমিতির কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান মৃধাকে (৬০) প্রকাশ্যে ছেলের সামনে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। এ হত্যাকা-ের ঘটনায় মোট ৩৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে মামলা দায়েরের আগেই এলাকার ১০ জন সাধারণ মানুষকে আটক করা হয়। ঘটনার পর রাজশাহীর জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের ও পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহ পিপিএম (সেবা) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ১৩ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে উপজেলার ভাসুপাড়া গ্রামে নানার বাড়ি থেকে খাদিজা খাতুন (১৫) নামে এক তরুনীর ঝূলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের বিষœপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের প্রথম পক্ষের মেয়ে। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের

আলোকনগর শেখপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর দুই ছেলে মন্টু প্রামানিক ও নজের আলী প্রামানিকের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ বিরোধের জের ধরে ছোট ভাইয়ের হাঁসুয়ার কোপে বড় ভাই কৃষক মন্টু প্রামানিক (৫২) খুন হন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ৭ নভেম্বর উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের রক্ষিতপাড়া গ্রামে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় কৃষক আকবর আলী (৬৫) নিহত হন। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়। ১০ নভেম্বর বড়বিহানালী ইউনিয়নের গোয়াবাড়ি গ্রামের ভ্যানচালক আনিসুর রহমান (৬৮) খুন হন। এ খুনের ঘটনায় নিহত আনিছুর রহমানের স্ত্রী জহুরা বেগম ও ছেলে সাইদুল ইসলামকে আটক করা হলে তারা হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দেয়। ২৭ নভেম্বর রাতে উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে কৃষক খোরশেদ আলমকে (৩৫) দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে খুন করে। এ ঘটনায় সাতজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি। ২ অক্টোবর একই ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের জহুরল ইসলামের স্ত্রী আকলিমা বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূ রহস্যজনকভাবে খুন হন। এ খুনের ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের রঘুপাড়া গ্রামে পরকীয়ার জের ধরে স্ত্রীর হাতে স্বামী সাজ্জাদ হোসেন (২৮) এবং একই দিন আউচপাড়া ইউনিয়নের শিয়ালী গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে পাষন্ড স্বামীর কোদালের কোপে স্ত্রী তহমিনা বেগম (২৫) খুন হন। একই দিনে পৃথক এই দুইটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ৮ সেপ্টেম্বর গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের রমজানপাড়া

 

কারিগরি কলেজের পেছনে পাট ক্ষেতের মধ্যে থেকে অজ্ঞাত এক যুবককের (৩০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৭ জুলাই শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বুজরুক কৌড় গ্রামের আব্দুর রশিদ (৩০) নামে এক যুবককে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আব্দুর রশিদের বাবা লোকমান আলী বাদি হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১০ জুন রমজানের রাতে গ্রামের একটি মসজিদ থেকে তারাবীর নামাজ শেষে বাড়ী ফিরার সময় দুর্বৃত্তরা খাঁপুর দাখিল মাদরসার কম্পিউটার বিভাগের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ তিনজনকে আটক করে। এর মাত্র চার দিন আগে ৬ জুন গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের শান্তিপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ জেকের আলীকে (৬৫) পিটিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হলেও একমাত্র রহিদুল ইসলাম ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কেউ গ্রেফতার হয়নি। ৯ এপ্রিল ক্রয়কৃত জমির দখল নিয়ে বিরোধের জের ধরে নরদাশ ইউনিয়নের সাঁইধারা গ্রামের রহিদুল ইসলাম (৩০) নামে এক প্রতিবন্ধীকে কুপিয়ে খুন করে প্রতিপক্ষরা। ১ মার্চ অপহরণের চার দিন পর একটি পরিত্যক্ত ইটভাটার মধ্যে থেকে দ্বীপপুর ইউনিয়নের দ্বীপপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৫২) নামের এক ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ খুনের রহস্য এখনো উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। ২৭ ফেব্রুয়ারী রাতে গনিপুর ইউনিয়নের আচিনঘাট গ্রামের আজগর আলীর ছেলে পিন্টু হোসেন (২৫) দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। এর দুইদিন আগে ২৪ ফেব্রুয়ারী আউচপাড়া ইউনিয়নের রক্ষিতপাড়া গ্রামে ভাতিজার ছুিরকাঘাতে খুন হন চাচা তজের আলী (৪০)। ১৫ ফেব্রুয়ারী গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের হাটদামনাশ হাজীপাড়া গ্রামে মুনমুন খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধূ স্বামীর হাতে খুন হন।
এছাড়া কয়েক দিন আগে বাসুপাড়া ইউনিয়নের সগুনা গ্রামের আয়েন উদ্দিন নামে এক কৃষককের ১বিঘা জমির পানবরজের সব পানগাছের গোড়া কেটে ফেলে দুবৃর্ত্তরা। এতে ওই ক্রষকের ২লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। এ ঘটনায়া থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এর কিছু দিন আগে একই ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের আব্দুল করিমের আদালত কর্তৃক দখল বুঝে পাওয়া জমিতে লাগানো ১৬টি মেহগনির গাছ কেটে ফেলে প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় আব্দুল করিমের ছোট ভাই আব্দুল জব্বার শাহিন বাদী হয়ে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু এখনো তার কোনো প্রতিকার হয়নি বলে বাদী অভিযোগ করেন। এদিকে উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের আসাদ আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, থানা সংলগ্ন তার পৈত্রিক জমি দখল করে একই গ্রামের বাবলুর রহমান ও ইসরাইল হোসেন পাকাবাড়ি নির্মাণ করছেন। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

 

অপরদিকে উপজেলার হাটখালগ্রাম এলাকায় ৮ বছরের শিশু এবং ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে এক প্রভাষক ও এক স্কুল শিক্ষক গ্রেফতারসহ মোট পাঁচটি শিশু ও তিনটি গৃহবধূ ধর্ষণ এবং এক স্কুলছাত্রী অপহরণের ঘটনা ছিলো সম্প্রতি বাগমারার আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
সোনাডাঙ্গা ইউপি’র চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আজাহারুল হক, গোবিন্দপাড়া ইউপি’র চেয়ারম্যান বিজন সরকার, নরদাশ ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মাষ্টার মোশারফ হোসেন, গনিপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান এ্যাড. মনিরুজ্জামান রঞ্জু ও একই ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি বাগমারায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে। অথচ এসব অনাকাঙ্খিত ঘটনার কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।
এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসনের আরো দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করা প্রয়োজন বলে বাগমারার উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু দাবি করেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ বলেন, ১৬টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভার সমন্বয়ে গঠিত এ উপজেলায় সাড়ে চার লক্ষাধিক লোকের বাস। বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রন করতে পুলিশকে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হয়। কাজেই বিচ্ছিন্নভাবে দুই-একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে।

খবর২৪ঘণ্টা/এমকে

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST