বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় সচ্ছ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় দুখনী বেগম (২৩) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। দুখনী বেগম উপজেলার কাচরী কোয়ালীপাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী।
বুধবার অব্যবস্থাপনায় সচ্ছ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে সিজার করার পর অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ সরকারী ভাবে কোন অনুমোদন ছাড়াই গত দেড় বছর ধরে ওই ক্লিনিকটি ভাড়াটিয়া চিকিৎসক দিয়ে অনিয়মতান্ত্রিক এমআর ও প্রসূতিদের সিজার করে আসছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সার্জিক্যাল ডাক্তার ছাড়াই সিজার ঘটনা জানা জানি হলে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়। এদিকে সার্জিক্যাল ডাক্তার ছাড়াই সিজারে একই এলাকায় পর পর প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার প্রসূতি দুখনী বেগমের পেট ব্যথা শুরু হলে উপজেলা সদরে একটি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নেয়া হয়। সেখানে ক্লিনিকের অভিজ্ঞ পরিচালক ডাক্তা তার শারীরিক অবস্থা দেখে উন্নত ব্যবস্থার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেয়। এতে তার পরামর্শ না নিয়ে রোগীর স্বজনেরা দালালদের খপ্পরে সচ্ছ ক্লিনিকে প্রসূতির বাচ্চা যত্ন সহকারী সিজারের প্রতিশ্রুতিতে ভর্তি করায়। বুধবার সন্ধ্যায় কোন রকম পরীক্ষা ছাড়ায় বাচ্চা সিজার করে বের করেন ভাড়াটিয়া ডাক্তার রফিকুল ইসলাম। বাচ্চা বের করার পর পরই প্রসূতির অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এর পর পর প্রসূতি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার এই অবস্থা দেখে স্বজনরা চিৎকার দিতে থাকে। প্রসূতির অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে রেফার্ড করার নামে তারা রোগীকে ক্লিনিকের খরচে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী শহরের নেয়ার কথা বলে। রাস্তায় যাবার পথে স্বজনেরা বুঝতে পারে নবজাতক জীবিত থাকলেও প্রসূতির জীবিত নেই।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, ভাড়াটিয়া ডাক্তারা এ্যনিথেসসিয়াম ও সার্জিকাল ডাক্তার না নিয়ে নিজ উদ্যোগে প্রসূতিদের সিজারিয়ান করান। এতে প্রায় প্রসূতির অকাল মৃত্যু হয়। এছাড়া ওই ক্লিনিকের সরকারী ভাবে কোন অনুমোদন নেই। এমন কি তার ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়ার মত তেমন কোন যন্ত্রপাতিও নেই বলে দারা দাবি করেন। একই ভাবে ওই ক্লিনিকের পরিচালক জিল্লুর রহমান এর আগে একটি ক্লিনিকে কাজ করতেন। সে আর্থিক লাভের জন্য নতুন করে দেড় বছর আগে একটি ক্লিনিক খোলে এমআর ও সিজারের নামে ভুল চিকিৎসা দিয়ে লোকদের ক্ষতি গ্রস্ত করছেন। স্থানীয়রা দাবি করেন সচ্ছ ক্লিনিকের কোন নিজস্ব চিকিৎসক নেই। তারা মাঝে মধ্যে বাইরে থেকে ডাক্তার ভাড়া করে চিকিৎসার নামে ব্যবসা চালান বলে তারা অভিযোগ করেন।
এব্যাপারে সচ্ছ ক্লিনিকের পরিচালক উপজেলার ঝিকারা গ্রামের জিল্লুর রহমানের ফোন একাধিক বার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিশিপ করেননি। পরে এক সময় ফোনে কথা হলেও কিছু বলা আগে তিনি তা কেটে দেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ