বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহী বাগমারায় ৪১ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগে দূর্নীতির মামলায় ইউএনওসহ ৭ আসামীর বিরুদ্ধে সমনজারী করেছে আদালত। জানা যায়, উপজেলার ৪১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ বোর্ডের উপর উপজেলার বালানগর গ্রামের জনৈক দেলোয়ার হোসেন ২৫ ফেব্র“য়ারী রাজশাহীর জজ কোর্টে একটি দূর্নীতির মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ২১/২০১৮।
ওই মামলায় আদালত নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম, সদস্য সচিব উপজেলা শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমান, বাগমারার এমপিও ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের প্রেস সচিব ও নিয়োগ বোর্ডের এমপি মনোনীত প্রতিনিধি জিল্লুর রহমানসহ ৭ জনকে আসামী করে একটি দুর্নীতির মামলা দায়ের করে। মামলাটি বাগমারায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিগত ৩ বছর ধরে এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে চাকুরী প্রার্থীদের কাছে এক রকম প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণ করা হয়েছে। একটি পদের বিপরীতে একাধিক ব্যাক্তির কাছ থেকে ৭-১৩ লক্ষ টাকা করে চাকুরী দেওয়ার নামে নেওয়া হয়েছে। নিয়োগের আলামত দেখে অনেকেই মনে করছেন যাদের চাকুরী দেওয়া হবে তাদের নামের তালিকা পূর্ব থেকেই প্রস্তুত করা ছিল। নিয়োগ বোর্ড ছিল লোক দেখানো মাত্র। কারণ- মৌখিক পরীক্ষা মানেই এক ধরনের জালিয়াতি বা প্রতারনা।
গত ১৬ ও ১৭ ফেব্র“য়ারী নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ ফেব্র“য়ারী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মামলা হতে পারে এমন খবর জানার পর পর আগাম তারিখ দিয়ে তড়িঘড়ি নিয়োগপত্র প্রদান ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের জোর করে তাদের যোগদান করানো হয়েছে। ভুক্তভোগীরা জানান এমপি মনোনীত নিয়োগ বোর্ডের প্রতিনিধি প্রেস সচিব জিল্লুর রহমান ২ শতাধিক ব্যক্তির নিকট হতে ৭-১৩ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও আরও অনেকেই এমপি’র নাম করে চাকুরী দেওয়ার নামে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই অনেকের টাকা চাপে পড়ে ফেরত দিলেও এখনও অনেকেই টাকা ফেরত পায়নি। আবার অনেকেই প্রদেয় টাকা অর্ধেক ফেরত পেয়েছে। অবশিষ্ট টাকা এখনও ফেরত পায়নি।
এ প্রসঙ্গে বালানগর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন আমরা সারাজীবন আওয়ামীলীগ করেছি। তার পরেও মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকা সত্ত্বেও আমাদের নিজস্ব সম্পত্তির উপর বিদ্যালয়টি অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র এমপি’র প্রেস সচিব জিল্লুর রহমানের চাহিদামত ১২ লক্ষ টাকা দিতে ব্যর্থ হয়েছি বলেই আমাদের প্রার্থীর চাকুরী হয়নি। এই নিয়োগ দুর্নীতির সাথে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলামও জড়িত। এমপি সাহেব যাকে নিয়োগ বোর্ডে তার মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ করেছেন সে কোন দিনও আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলনা।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে সেই জিল্লুর রহমান এমপি’র বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। অথচ রহস্যজনক কারণে আজ বাগমারার আওয়ামীলীগ তার দ্বারা নানা ভাবে নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে তার কারনেই দলের ভরাডুবি হবে বলে অনেকেই ধারনা করছে। জিল্লুর কোটি কোটি টাকা আয়ের উৎস কোথায় এটা বাগমারাবাসী জানতে চাই।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ