খবর২৪ ঘণ্টা, স্পোর্টস, ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এখনো আশা ছাড়েনি ইংলিশ কোচ পল ফারব্রেসের ব্যাপারে। এর আগে দুই পক্ষ সব বিষয়েই একমত হয়েছিল। ফারব্রেসের সইটাই কেবল বাকি ছিল। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এসে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ারও কথা ছিল ইংল্যান্ডের বর্তমান সহকারী কোচের। কিন্তু পরিবার রাজি না হওয়ায় তিনি বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন না।
এর আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান ৭ মার্চ কলম্বোতে বলেছিলেন, বাংলাদেশ দলে একজন চেনাজানা কোচই এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে দায়িত্ব নিচ্ছেন। সেই ‘চেনাজানা’ কোচ ছিলেন কেন্টের ৫০ বছর বয়সী ফারব্রেসই। ৪০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা ফারব্রেস ইংল্যান্ডের সহকারী কোচ হিসেবে এই মুহূর্তে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে শ্রীলঙ্কার সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কান দলের টিম বাসে সন্ত্রাসী হামলার সময় টিম বাসেও ছিলেন তিনি।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের বিদায়ের পর থেকেই একজন ভালো কোচের জন্য হন্যে বিসিবি। কিন্তু এই আইপিএল, বিগব্যাশ, সিপিএলের যুগে ভালো কোচ খুঁজে পাওয়াই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব কোচই ভালো পারিশ্রমিক আর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য এসব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের দলগুলোর কোচ হিসেবে কাজ করতেই আগ্রহী। স্পিন ও ব্যাটিং পরামর্শক খুঁজতে গিয়েও পড়তে হয়েছে একই সমস্যার মধ্যে। উচ্চ পারিশ্রমিক দাবি করে বসছেন বেশির ভাগই। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন তো বছরে ৪০ দিন কাজ করার শর্তে প্রতিদিনের জন্য ৫ হাজার ডলারই দাবি করে বসেছেন। স্পিন বিশেষজ্ঞ কোচ হিসেবে বিসিবির প্রথম পছন্দ এই মুহূর্তে ভারতের সাবেক কোচ অনিল কুম্বলে।
প্রধান কোচ নিয়োগ দিতে অদ্ভুত কিছু সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে বিসিবিকে। যাঁরা রাজি হন, তাঁরা বেশির ভাগই বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেন। এরারও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোর সময় ছুটি চান। তিন-চার নৌকায় পা দিয়ে রাখা কোচ বাংলাদেশকে নিয়ে কতটা ভাবতে পারবেন, বিসিবির ভাবনার বিষয় সেটিই। বোর্ড চায় এমন একজন কোচ নিয়োগ দিতে, যিনি কেবল বাংলাদেশ দলকে নিয়েই ভাববেন।
বেশ কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ফল পাওয়া যায়নি। ঢাকায় এসে রিচার্ড পাইবাস ও ফিল সিমন্স সাক্ষাৎকার দিয়ে গেছেন। সিমন্সকে বিসিবির খুব একটা পছন্দ হয়নি। পাইবাসকে পছন্দ করে না বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। পরে তাঁরা চাকরি নিয়েছেন আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডে।
বিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার জিওফ মার্শের। ‘হাইপ্রোফাইল’ এই কোচকে সাক্ষাৎকারে না ডেকেই ই-মেইলে যোগাযোগ চালিয়ে গিয়েছিল বোর্ড। কথাবার্তাও নাকি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মার্শও পারিবারিক কারণে বাংলাদেশে কাজ করতে রাজি হননি। বিপিএলের সময় রংপুর রাইডার্সের কোচ টম মুডির শরণাপন্ন হয়েও ব্যর্থ বিসিবি। তিনিও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের নির্ভার জগৎ ছেড়ে টেস্ট দলের ভার নিতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ দলের দুই সাবেক কোচ জেমি সিডন্স ও স্টুয়ার্ট লকেও প্রস্তাব দিয়েছিল বিসিবি। এঁদের মধ্যে সিডন্স প্রথমেই ‘না’ বলে দেন। ল বলেছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে না পারে, তাহলে তিনি বাংলাদেশের দায়িত্ব নেবেন। কিন্তু বিসিবি ভেবেছে, যে কোচের অধীনে একটা দল বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারবে না, তাঁকে কেন বাংলাদেশের কোচ করা হবে!
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ