বগুড়া প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাস সংক্রমনের আতঙ্কের কারণে গত তিন-চারদিন থেকে বগুড়া শহরের অবস্থিত কিছু কিছু ক্লিনিকে অনেক চিকিৎসক রোগী দেখা কমে দিয়েছেন। যার ফলে ক্লিনিকগুলোতে রোগীর সংখ্যাও কয়েকগুণ কমে গেছে। চিকিৎসা সংকট দেখা দিয়েছে শহরের বেসরকারি সব ক্লিনিকগুলোতে। সাধারণ সর্দি-জ্বরসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা।
বগুড়া শহর তথা আশেপাশের অধিকাংশ মানুষ সর্দি-কাশি, জ্বর, মাথা ব্যথাসহ সাধারণ অসুখগুলোর জন্য বগুড়া শহরের মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতেন । কিন্তু গত মঙ্গলবার থেকে ২৫০ শয্যার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে কোভিড-১৯ এর জন্য পুরোপুরি আইসোলেটেড করা হয়েছে। যার কারনে এখানে আসা রোগীরা সাধারন রোগের চিকিৎসা নিতে পারছেন না। অপরদিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল শহর থেকে কিছুটা দূরে হওয়ায় সাধারণ রোগের চিকিৎসা নিতে শহরের লোকজন বাড়ির আশে-পাশের ক্লিনিকগুলোতে গেলেও প্রায় ক্লিনিকে চিকিৎসকের দেখা মিলছে না।
সরেজমিনে বগুড়ার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ঘুরে জানা গেছে, বগুড়া জেলা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে ২৫০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে বগুড়া সদরেই রয়েছে ১৫০টির মতো।
বগুড়া জেলা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিএম সাকলায়েন জানান, ক্লিনিকগুলোতে রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় প্রায় ৮০ ভাগ কমে গেছে। এছাড়া গত ৩-৪ দিন থেকে চিকিৎসকরাও ঠিকমতো আসছেন না। ফলে সাধারণ চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগীকে ফেরত দেয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া সদর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু জানান, বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর চিকিৎসকের কাছে এখনও পার্সোনাল প্রটেকশন ইক্যুয়েপমেন্ট (পিপিই) নেই। করোনাভাইরাসের কারণে তাই তারা স্বাভাবিকভাবেই জ্বর সর্দি-কাশি দেখলে কিছুটা শঙ্কিত হয়ে পড়ছে। এ কারণে তারা যতটা সম্ভব টেলিসেবা দিতে চেষ্টা করছেন।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. ওয়াদুদ জানান, করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য শহরের ভেতর অবস্থিত মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে যেহেতু বিশেষায়িত করা হয়েছে, সেহেতু সেখানে সেবা নিতে আশা রোগীদের চাপও স্বাভাবিকভাবেই শজিমেক হাসপাতালের উপর পড়বে। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত হাসপাতালে আসা প্রতিটি রোগীই যেন সঠিকভাবে চিকিৎসা পান। এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে রোগীদেরও আমরা সচেতন করার চেষ্টা করছি। তারা যেন হাসপাতাল এবং ক্লিনিকেগুলোতে ভিড় না করে টেলিফোনের মাধ্যমে বাড়ীতে বসে স্বাস্থ্য গ্রহন করেন।
খবর২৪ঘন্টা/নই