খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: মানসিক অবসাদ বাড়ায় ফেসবুক। খোদ ফেসবুক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নিল একথা। গবেষণা বলছে ফেসবুকের মতো সোশ্যাল সাইটে যাদের অবাধ আনাগোনা, তাদের মধ্যে অবসাদগ্রস্থতা বাড়ে। এজন্য নতুন একটি বাটন আনছে ফেসবুক। এটাকে বলা হচ্ছে মিউট বাটন।
ফেসবুকে আসক্তদের মধ্যে মনঃসংযোগের অভাব, মিথ্যা কথা লিখে নিজেকে জাহির করার মতো প্রবণতার অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল বহুদিন ধরে।
এতদিন এ নিয়ে ফেসবুক মুখ না খুললেও অবশেষে ফেসবুক কর্তৃপক্ষই স্বীকার করে নিল, বেশিক্ষণ ফেসবুকে থাকলে একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি মানসিক অবসাদে ভুগতে পারেন।
একটি ব্লগে গত শুক্রবার ফেসবুকের গবেষকরা জানতে চান, সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশিক্ষণ সময় কাটানো কি খারাপ? এই প্রশ্নের কোনও সুনির্দিষ্ট উত্তর না দিলেও শীর্ষস্থানীয় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সংস্থাটি হাবভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে যে তারাও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।
ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন এ নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি কিছুটা সময় চান।
আর এরপরই বোমাটি ফাটিয়েছে ফেসবুক। তারা এখন একটি ‘মিউট’ বোতাম নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা চালাচ্ছেন। কী কাজ এই বোতামের? এই বোতাম একবার টিপলে আগামী ৩০ দিনের জন্য আপনার ফেসবুক অচল হয়ে যাবে। সাইলেন্ট হয়ে যাবে। ফলে কোনও নোটিফিকেশন বা মেসেজ আসবে না।
কেন এরকম পদক্ষেপ করল ফেসবুক? এতে তো আখেরে তাদের ব্যবসারই ক্ষতি।
আসলে সম্প্রতি একগুচ্ছ বিশিষ্ট মানুষ ও ফেসবুকের প্রাক্তন কর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন, অপরিচিতদের কাছাকাছি আনতে গিয়ে পরিচিতদের দূরে ঠেলে দিচ্ছে ফেসবুক। মানুষ এখন লোক দেখানো সম্পর্কে বিশ্বাসী হয়ে পড়েছেন। ভেঙে যাচ্ছে সমাজের বুনোট। ছিঁড়ে যাচ্ছে আত্মীয়তা। ‘লাইক’ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্খা মানুষকে ক্রমশ মেকি করে তুলছে। ফেসবুকে তাৎক্ষণিক জনপ্রিয়তা পাওয়ার আকাঙ্খা সাধারণ মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে। বদলে যাচ্ছে মানুষের সাইকোলজি, বলছেন প্রাক্তন ফেসবুকের শীর্ষ কর্তা কামাথ পালিহাপতিয়া।
আর এক প্রাক্তন কর্তা শন পার্কার বলছেন, লাইক পাওয়ার জন্য শারীরিক সৌন্দর্যকে ব্যবহার করা হচ্ছে, যৌন উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। ফেসবুক কারও ব্যক্তিগত সম্পর্ককেও প্রভাবিত করতে বলে মতপ্রকাশ করেছেন তিনি।
প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েই কি অবশেষে আত্মসমালোচনায় ফেসবুক? ইঙ্গিত কিন্তু তেমনটাই। মিউট বোতাম এনে একটানা ৩০ দিন ফেসবুক থেকে দূরে থাকার সুযোগ আনছেন খোদ সংস্থার কর্তারাই। তাহলে এবার আপনিও নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন। সচেতনভাবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করুন ও সুস্থ থাকুন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ