খবর ২৪ ঘণ্টা, বিনোদন ডেস্ক: কামালগাজির এই ফ্ল্যাটের ঠিকানা বুঝতে আপনার পাড়ার এক দোকানদারের সঙ্গে কথা বলছিলাম। জানেন তিনি কি বললেন?
কী!
বললেন ওহ্ নায়িকা প্রিয়ঙ্কা? জানেন আমার ছেলের এক বন্ধু ওঁর খুব বন্ধু! বন্ধুটি ওঁর দারুন সব ছবি তোলে!
(অবাক মেশানো হাসি) উফফ! যা তা। আমার সম্পর্কে গসিপ শুনে কান পচে গেল!
গসিপ? মানে ফোটোগ্রাফার তথাগতর সঙ্গে তো আপনাকে সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে। আলাদা ডিনার…
প্লিজ। এ সব গুজব! আমি এক্ষুনি আপনাকে একটা লিঙ্ক শেয়ার করছি। সেখানে লেখা আছে মিমি নয়, শুভশ্রী নয়, রাজদার সঙ্গে পুজোতে আমি নাকি গোয়ায় ছিলাম। অথচ সবাই জানে পুজোতে আমি কলকাতায় ছিলাম।
তথাগতর সঙ্গে! তাই তো?
শুনুন তথাগত আমার বেস্টফ্রেন্ড। ওর সঙ্গে কাজও করছি। ব্যাস এটাই। আগে আমার জগত ছিল রাহুলময়। তখন কারও সঙ্গে মিশতাম না, এখন সব দিক থেকেই বদলেছি। এখন অনেক বেশি বাইরে যাই, লোকে আমায় দেখে। আমি আগে চুপ করে থাকতাম। এখন সোজা কথা বলি। কথা না বললে অনেক ভুল ধারণা জন্ম নেয়। সেটা এখন বুঝেছি। বন্ধুত্ব মানেই প্রেম নয়। আর এখন না প্রেমে পড়ার মতো মানসিকতা নেই। সবে তো একটা জীবন থেকে বেরিয়ে কেরিয়ারে মন দিতে চাইছি।
তথাগতর চোখে লেন্সবন্দি প্রিয়ঙ্কা। ছবি: তথাগত ঘোষের সৌজন্যে।
কেরিয়ারে মন দেওয়া বলতে?
আমি এক সময় খুব খারাপ সময় কাটিয়েছি। শারীরিক, মানসিক দু’দিক থেকেই। চেহারা ঠিক ছিল না। স্টিরিওটাইপ চরিত্র পেতাম। সব বদলাতে হয়েছে আমায়। নতুন ফ্ল্যাট, গাড়ি আর সহজ সব কিছু সামলে কাজ করা।
সহজ কি আপনার একার দায়িত্বে বড় হচ্ছে?
(একটু ভেবে) রাহুল ওর সঙ্গে দেখা করতে আসে। তবে ধারাবাহিকে কাজ করার পরে রাহুল সহজকে খুব সময় দিতে পারছে না। তবে সহজের ফিনান্সিয়াল দায়িত্ব আমার।সহজ জানে ওর মা ওর জন্যেও কাজ করে। আমি ওকে আমার বেস্টটা দিয়ে মানুষ করতে চাই। এই যেমন এত রাতে আপনার সঙ্গে কথা বলার পর আমি হলদিয়া উৎসবে যাব। সত্যি আমার যেতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু সহজের জন্যই যাব আমি। ও জানে মা যাবে, আবার ওর কাছেই ফিরবে। তবে শুধু সহজের জন্যই নয়, অভিনয়ের খিদে আমার বরাবরের।
ছেলে সহজের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা। ছবি: প্রিয়ঙ্কার টুইটার পেজের সৌজন্যে।
সামনে কী ছবি আসছে?
ফেব্রুয়ারি মাসে ‘কায়া’ মুক্তি পাবে। রাজীব চৌধুরীর ছবি। ছোট্ট ফিল্ম ইউনিটের গল্প, চেরাপুঞ্জিতে রেইকি করতে গিয়ে নানা ঘটনা ঘটে। আসলে একটা হরর ছবি। কৌশিক সেন, রাইমা আছে। তার পর আছে দেবপ্রতিম দাশগুপ্তের ছবি ‘ঈশ্বর’। অপুদার সঙ্গে অভিনয় করছি। বিরসাদার ছবিও আছে। সবই অন্য ধারার চরিত্র।
(কথার মাঝে সহজ আসে। তার মাম্মাকে দেখতে। মাম্মা সাইলেন্ট বাসের ছবি আঁকো বলে সহজকে অন্য ঘরে পাঠিয়ে দেয়)
এভাবেই ম্যানেজ করেন সহজকে?
এই যে ছবি আঁকতে দিলাম, জানি কিছুক্ষণ ব্যস্ত থাকবে ও। ওর সঙ্গে বোঝাপড়া হয়ে যাচ্ছে। এ ভাবেই।
কাজে ফিরি। এখন নায়িকা না অভিনেত্রী কোন প্রিয়ঙ্কাকে নিজের মধ্যে দেখতে চান?
দুটো তো মিশে আছে। এখন কমার্শিয়াল বা আর্ট ওই ভাবে ছবি ভাগ হয় না। দেব নিজের প্রোডাকশন হাউসে যেরকম ভিন্ন ধারার ছবি তৈরি করছে সেখানে তথাকথিত হিরো ইমেজটাকেও তো ও ভাঙছে। আবার দেখুন জিতদার ছবিও হিট। কৌশিকদার বিসর্জন অন্য ধারার ছবি। কিন্তু কত লোকের মন ছুঁয়েছে।
কিন্তু কমার্শিয়াল ছবির বাজার পড়ে গিয়েছে!
নাহ। এই যে মাচায় যাচ্ছি সেখানে কিন্তু কমার্শিয়াল ছবির গানের সঙ্গেই আমাদের নাচতে হয়। আজও আমি বেশির ভাগের কাছেই ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ -এর প্রিয়াঙ্কা। এর জন্য আমি রাজদা আর ভেঙ্কটেশের কাছে কৃতজ্ঞ।
এত গ্ল্যামারস লুক, এত রোগা হয়েছেন। কেমন চরিত্র করতে ইচ্ছে করে?
হুমম! যদি সুলু হতে পারতাম? যদি এন এইচ টেন- এর মতো গল্প হত। নতুন গল্প বলার ধরন খুব জরুরি। যেমন ওয়েব সিরিজ একটা গল্প বলার দিগন্ত খুলে দিয়েছে। সেন্সরশিপের চাপ নেই। ‘হ্যালো’ করে আমি যেমন দারুন রেসপন্স পেয়েছি।
আবার সহজ হাজির। তাঁর মাম্মার গা ঘেঁষে বসে। শুধুই কি সহজের মাম্মা? ঘন কাজল চোখের মাঝে, টাইট জিনস্ আর সবজে জ্যাকেটের আড়ালে যেন হেসে উঠছেন এক বিজয়িনী। একলা লড়াইয়ে যে আজ তাঁর জীবনের সফল নায়িকা।
খবর ২৪ ঘণ্টা.কম/ জন