প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার আর নেই। সোমবার (৮ মে) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে কলকাতায় একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
গণমাধ্যমকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন সমরেশ মজুমদারের বড় মেয়ে দোয়েল মজুমদার।
এর আগে, গত ২৫ এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল বলে হাসপাতাল সূত্রের জানা যায়। এরপর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে। সমরেশ মজুমদারের শ্বাসনালীতে গভীর সংক্রমণ ছিল।
গত এক যুগ ধরেই ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। হাসপাতালে ‘ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যাথ (স্লিপ অ্যাপমিয়া) বাড়তে থাকে।
গত ২৯ এপ্রিল (শনিবার) সন্ধ্যায় সমরেশ মজুমদারের বড় মেয়ে দোয়েল মজুমদার জানান, গত দুই দিন কেবিনেই রাখা হয়েছিল তার বাবাকে। ওই দিন বিকেলে তাকে নিবিড় পর্যেবক্ষণে (আইসিইউতে) স্থানান্তরিত করা হয়।
সমরেশ মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালের ১০ মার্চ। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনে তিনি আনন্দবাজার পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেডএর সাথে যুক্ত ছিলেন। গ্রুপ থিয়েটারএর প্রতি তার প্রচণ্ড আসক্তি ছিলো। তার প্রথম গল্প ‘অন্যমাত্রাথ লেখাই হয়েছিলো মঞ্চনাটক হিসাবে, আর সেখান থেকেই তার লেখকজীবনের শুরু। তার লেখা অন্যমাত্রা ছাপা হয়েছিলো দেশ পত্রিকায় ১৯৬৭ সালে।
সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়থ ছাপা হয়েছিলো দেশেই ১৯৭৫ সালে। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তার ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্য জগতে তাকে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী করেছে।
সমরেশ মজুমদার ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইআইএমএস পুরস্কার জয় করেছেন। চিত্রনাট্য লেখক হিসেবে জয় করেছেন বিএফজেএ দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির অ্যাওয়ার্ড। সমরেশ মজুমদার পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয়।
বিএ/