খবর ২৪ঘণ্টা ডেস্ক: সকল রাজনৈতিক দলের মতামতকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র সরকারের নির্দেশেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন বলে মন্তব্য করেছেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টায় নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, পুলিশি তল্লাশির নামে বাড়িতে বাড়িতে তান্ডব চলছে। চারদিকে শুধু আতঙ্ক আর ভয়। দেশে আইন, বিচার সবই একজন ব্যক্তির হাতের মুঠোয় বলে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নিম্ন আদালত সরকারের আজ্ঞাবাহী হওয়ার কারণে সারাদেশে লাখ লাখ নেতাকর্মীকে প্রতিদিন হয় কোর্টের বারান্দায় না হয় কারাগারে থাকতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংকট সমাধান না হওয়ার আগেই আকস্মিকভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানেরই সুষ্পষ্ট ইঙ্গিত। সকল বিরোধী দলের দাবি ছিল মাঠ সমতল এবং সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করে তফসিল ঘোষণা। এমনকি পর্যাপ্ত সময়ও রয়েছে কমিশনের হাতে। রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধে নির্বাচন পিছিয়ে দিলে আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটতো না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সংবিধানের বাইরে যাবেন না বলে প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী ও মহাজোটের নেতারা মুখস্থ কথাই আউড়িয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নিজেরাই একের পর এক সংবিধান লঙ্ঘন করছেন। মন্ত্রী ও অন্যান্য সাংবিধানিক পদধারীরা পদত্যাগ পত্র জমা দিলেও তা কার্যকর হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী সাংবিধানিক কোন পদে আসীন ব্যক্তি অথবা কোন মন্ত্রী রাষ্ট্রপতি বরাবরে প্রধানমন্ত্রীর নিকট পদত্যাগ পত্র জমা দেয়ার সাথে সাথে সেটি কার্যকর হয়। এক্ষেত্রে চাকুরীজীবিদের মতো পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা বা না করার কোন বিধান নেই। আমরা দেখতে পাচ্ছি, টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীরা পদত্যাগ করলেন, কিন্তু আবার দায়িত্বও পালন করে যাচ্ছেন।
রিজভী বলেন, ‘রাজশাহীতে আজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহী ও আশপাশের জেলায় চলছে গ্রেফতার অভিযান। নেতা-কর্মীরা যেন সমাবেশে যোগ দিতে না পারে সেজন্য শহরে ঢোকার বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে কম্বিং অভিযান চলছে। বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকতের বাসাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীর বাসায় বাসায় গোয়েন্দা পুলিশ হানা দিয়েছে। বৃহত্তর রাজশাহী জেলায় পরিবহণ ধর্মঘট করানো হয়েছে সুপরিকিল্পতভাবে। র্যাব, ডিবি ও পুলিশ হর্ন বাজিয়ে শহরজুড়ে মহড়া দিচ্ছে, আতঙ্ক ছড়িয়ে শহরকে ফাঁকা করার জন্য।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে দেশনেত্রীর মুক্তিসহ সকল রাজবন্দীকে মুক্তি দিয়ে দেশের সংকট সমাধান করুন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি মেনে নিন। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ও প্রচারে সবার সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়তা করুন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, সহ-সাংগঠনিক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।