1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
পুঠিয়ায় সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রতিবন্ধী নারী - খবর ২৪ ঘণ্টা
রবিবার, ১২ জানয়ারী ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন

পুঠিয়ায় সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রতিবন্ধী নারী

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২ অক্টোবর, ২০২০

পুঠিয়া প্রতিনিধি : রাজশাহীর পুঠিয়ায় ধর্ষণের শিকার মানসিক ও শারিরিক প্রতিবন্ধি কিশোরী খালেদা খাতুন (১৫) ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন। স্বীকৃতি তো দুরের কথা সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর পিতৃ পরিচয় নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। ভূক্তভোগির পরিবার সন্তানের উপর অমানুষিক এই নির্যাতনের সঠিক বিচারের আশায় এখন মানুষের দারে দারে ঘুরছেন।
ভূক্তভোগি উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের দিনমুজুর খাইরুল ইসলামের বড় মেয়ে। অপরদিকে সোহেল রানা (৩৫) তিন সন্তানের জনক ও একই ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামের আব্দুল কালামের ছেলে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোহেল রানা একটি কোম্পানির হয়ে বিভিন্ন গ্রামের দোকানপাট গুলোতে সেল্সম্যানের কাজ করতো। সে সুবাদে ফুলবাড়ি গ্রামের এই রাস্তা দিয়ে সোহেল রানা আসা যাওয়া করতো। এর মধ্যে সে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের এক সন্ধ্যায় ওৎপেতে বসে থাকে মানুষিক ও শারিরিক প্রতিবন্ধি কিশোরী খালেদার বাড়ির পাশে। রাস্তায় তাকে একা পেয়ে সেখান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাস্তার পাশে ঝোপের মধ্যে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পরে। এরপর গত ১২ জুলাই রামেক হাসপাতালে খালেদা একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।
ভূক্তভোগি খালেদা খাতুন কিছুটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি হলেও তার উপর ঘটে যাওয়া অমানুষিক নির্যাতনের বিষয়টি তিনি এখনো ভুলেননি। তিনি বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে আমি পাশের এক বড় আব্বা শহীদ আলীর বাড়িতে টিভি দেখতে গিয়ে ছিলাম। পরে সন্ধ্যায় বৃষ্টি শুরু হলে আমি বাড়ি চলে আসছিলাম। আসার পথে রাস্তা থেকে সোহেল নামের ওই লোক আমার মুখ চেপে ধরে বিদ্যুতের খুটির কাছে নিয়ে যায়। এরপর আমার সাথে সে খারাপ কাজ করেছে। আর এই কথা বললে বাড়িতে যদি মা আমাকে মারে তাই কাউকে বলেনি। এখন আমার একটি মেয়ে হয়েছে। কিন্তু গ্রামের লোক আমার এই ছোট মেয়েকে মানুষের কাছে পালক দিতে বলে। আমি কিন্তু কাউকে দিব না।
পিতা খাইরুল ইসলাম বলেন, আমি খুবই গরীব মানুষ। এলাকার মানুষের জমিতে কাজ করে কোনো মতে দিন যায়। বাড়ির দু’শতাংশ জমি ছাড়া আমার আর কিছুই নেই। আমাদের পরিবারে দু’টি মেয়ে আছে। এর মধ্যে খালেদা বড়। তাকে পাশের গ্রাম মহনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টেনে কষে ৪থ শ্রেণী পর্যন্ত লেখা পড়া করাতে পেরেছিলাম। কিন্তু তার মাথায় বুদ্ধি অনেক কম থাকায় চেষ্টা করেও প্রাথমিক শেষ করাতে পারেনি। যার কারণে গত দু’বছর থেকে সে বাড়িতেই থাকে। এরমধ্যে কবে যে তার উপর এ রকম একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে তা আমরা কিছুই জানতাম না। মেয়েটাও মুখ খুলে আমাদের কখনো কিছু বলেনি। যখন আমরা বুঝতে পারলাম তখন সে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত¡া। বিষয়টি জানার পর সোহেলের পরিবারের সাথে আমরা অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সোহেল ও তার পরিবারের লোকজন আমাদের কোনো পাত্তা দেয়নি। বরং মাঝে মধ্যে আমাদের পুরো পরিবারেকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। গ্রামেও এর কোনো বিচার পাইনি। তাই থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। এখন আমার মেয়ের কি হবে? তার উপর সে আরেকটি বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। এখন এই বাচ্চার পিতৃপরিচয় ও আমার মেয়ের চরিত্র নিয়ে গ্রামের লোকজন নানা কথা বলছে। এই মেয়েকে নিয়ে আমি এখন চারিদিকে শুধু অন্ধকার দেখছি।
প্রতিবেশী আইউব আলী বলেন, খালেদা মেয়েটি খুবই সহজ সরল। সে শারিরিক ভাবে একটু খাটো ও বুদ্ধি কম। তবে সে সব সময় হাসি খুশি থাকতো। আর আশে পাশের শিশুদের সাথে খেলাধুলা করে দিন পার করতো। খালেদার সরলতার সুযোগে সোহেল রানা এই সর্বনাশ করেছে। অপরদিকে সে বিবাহিত। তার পরিবারে স্ত্রী ও তিনটি কন্যা সন্তান আছে। এখন এই মেয়েকে বিয়ে করা তো দুরের কথা সদ্য জন্ম নেয়া বাচ্চার পিতৃ পরিচয় নিয়ে মানুষের দারে দারে ঘুরছেন খালেদার পরিবার।
ভালুকগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাকবির হাসান বলেন, ভূক্তভোগি ওই পরিবারটি খুবই অসহায়। মানুষিক ও শারিরিক প্রতিবন্ধী ওই কিশোরীর সাথে ঘটে যাওয়া বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক ঘটনা। ধর্ষণের ফলে সে এখন একটি কন্যা সন্তানের মা হয়েছে। ওই বাচ্চার পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত করণ ও বিষয়টির উভয় এলাকার দু’জন ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে সঠিক সুরাহা করতে চেস্টা করা হচ্ছে।
এদিকে আটককৃত সোহেল রানার পিতা আব্দুল কালাম ও তার স্ত্রী সাথে কথা বলতে একাধিকবার তাদের বাড়িতে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, ভূক্তভোগি পরিবারটি থানায় একটি অভিযোগ করেছিল। আমরা আসামী সোহেল রানাকে আটক করেছি। অপরদিকে সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর ও আটককৃত সোহেল রানার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে তা পরিক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ওখান থেকে প্রতিবেদন আসলেই আমরা আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
পুঠিয়ায় সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে
দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রতিবন্ধী নারী /৩
আবু হাসাদ, পুঠিয়া :
রাজশাহীর পুঠিয়ায় ধর্ষণের শিকার মানসিক ও শারিরিক প্রতিবন্ধি কিশোরী খালেদা খাতুন (১৫) ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন। স্বীকৃতি তো দুরের কথা সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর পিতৃ পরিচয় নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। ভূক্তভোগির পরিবার সন্তানের উপর অমানুষিক এই নির্যাতনের সঠিক বিচারের আশায় এখন মানুষের দারে দারে ঘুরছেন।
ভূক্তভোগি উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের দিনমুজুর খাইরুল ইসলামের বড় মেয়ে। অপরদিকে সোহেল রানা (৩৫) তিন সন্তানের জনক ও একই ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামের আব্দুল কালামের ছেলে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোহেল রানা একটি কোম্পানির হয়ে বিভিন্ন গ্রামের দোকানপাট গুলোতে সেল্সম্যানের কাজ করতো। সে সুবাদে ফুলবাড়ি গ্রামের এই রাস্তা দিয়ে সোহেল রানা আসা যাওয়া করতো। এর মধ্যে সে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের এক সন্ধ্যায় ওৎপেতে বসে থাকে মানুষিক ও শারিরিক প্রতিবন্ধি কিশোরী খালেদার বাড়ির পাশে। রাস্তায় তাকে একা পেয়ে সেখান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাস্তার পাশে ঝোপের মধ্যে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পরে। এরপর গত ১২ জুলাই রামেক হাসপাতালে খালেদা একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।
ভূক্তভোগি খালেদা খাতুন কিছুটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি হলেও তার উপর ঘটে যাওয়া অমানুষিক নির্যাতনের বিষয়টি তিনি এখনো ভুলেননি। তিনি বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে আমি পাশের এক বড় আব্বা শহীদ আলীর বাড়িতে টিভি দেখতে গিয়ে ছিলাম। পরে সন্ধ্যায় বৃষ্টি শুরু হলে আমি বাড়ি চলে আসছিলাম। আসার পথে রাস্তা থেকে সোহেল নামের ওই লোক আমার মুখ চেপে ধরে বিদ্যুতের খুটির কাছে নিয়ে যায়। এরপর আমার সাথে সে খারাপ কাজ করেছে। আর এই কথা বললে বাড়িতে যদি মা আমাকে মারে তাই কাউকে বলেনি। এখন আমার একটি মেয়ে হয়েছে। কিন্তু গ্রামের লোক আমার এই ছোট মেয়েকে মানুষের কাছে পালক দিতে বলে। আমি কিন্তু কাউকে দিব না।
পিতা খাইরুল ইসলাম বলেন, আমি খুবই গরীব মানুষ। এলাকার মানুষের জমিতে কাজ করে কোনো মতে দিন যায়। বাড়ির দু’শতাংশ জমি ছাড়া আমার আর কিছুই নেই। আমাদের পরিবারে দু’টি মেয়ে আছে। এর মধ্যে খালেদা বড়। তাকে পাশের গ্রাম মহনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টেনে কষে ৪থ শ্রেণী পর্যন্ত লেখা পড়া করাতে পেরেছিলাম। কিন্তু তার মাথায় বুদ্ধি অনেক কম থাকায় চেষ্টা করেও প্রাথমিক শেষ করাতে পারেনি। যার কারণে গত দু’বছর থেকে সে বাড়িতেই থাকে। এরমধ্যে কবে যে তার উপর এ রকম একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে তা আমরা কিছুই জানতাম না। মেয়েটাও মুখ খুলে আমাদের কখনো কিছু বলেনি। যখন আমরা বুঝতে পারলাম তখন সে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত¡া। বিষয়টি জানার পর সোহেলের পরিবারের সাথে আমরা অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সোহেল ও তার পরিবারের লোকজন আমাদের কোনো পাত্তা দেয়নি। বরং মাঝে মধ্যে আমাদের পুরো পরিবারেকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। গ্রামেও এর কোনো বিচার পাইনি। তাই থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। এখন আমার মেয়ের কি হবে? তার উপর সে আরেকটি বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। এখন এই বাচ্চার পিতৃপরিচয় ও আমার মেয়ের চরিত্র নিয়ে গ্রামের লোকজন নানা কথা বলছে। এই মেয়েকে নিয়ে আমি এখন চারিদিকে শুধু অন্ধকার দেখছি।
প্রতিবেশী আইউব আলী বলেন, খালেদা মেয়েটি খুবই সহজ সরল। সে শারিরিক ভাবে একটু খাটো ও বুদ্ধি কম। তবে সে সব সময় হাসি খুশি থাকতো। আর আশে পাশের শিশুদের সাথে খেলাধুলা করে দিন পার করতো। খালেদার সরলতার সুযোগে সোহেল রানা এই সর্বনাশ করেছে। অপরদিকে সে বিবাহিত। তার পরিবারে স্ত্রী ও তিনটি কন্যা সন্তান আছে। এখন এই মেয়েকে বিয়ে করা তো দুরের কথা সদ্য জন্ম নেয়া বাচ্চার পিতৃ পরিচয় নিয়ে মানুষের দারে দারে ঘুরছেন খালেদার পরিবার।
ভালুকগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাকবির হাসান বলেন, ভূক্তভোগি ওই পরিবারটি খুবই অসহায়। মানুষিক ও শারিরিক প্রতিবন্ধী ওই কিশোরীর সাথে ঘটে যাওয়া বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক ঘটনা। ধর্ষণের ফলে সে এখন একটি কন্যা সন্তানের মা হয়েছে। ওই বাচ্চার পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত করণ ও বিষয়টির উভয় এলাকার দু’জন ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে সঠিক সুরাহা করতে চেস্টা করা হচ্ছে।
এদিকে আটককৃত সোহেল রানার পিতা আব্দুল কালাম ও তার স্ত্রী সাথে কথা বলতে একাধিকবার তাদের বাড়িতে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, ভূক্তভোগি পরিবারটি থানায় একটি অভিযোগ করেছিল। আমরা আসামী সোহেল রানাকে আটক করেছি। অপরদিকে সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর ও আটককৃত সোহেল রানার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে তা পরিক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ওখান থেকে প্রতিবেদন আসলেই আমরা আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

এস/আর

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST