পুঠিয়া (রাজশাহী) সংবাদদাতা: রাজশাহীর পুঠিয়ায় নান্দিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিনের অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। স্থানীয় লোকজন বলছেন ওই শিক্ষিকার বিভিন্ন অপকর্মে এলাকায় সামাজিক শৃংখলার অবনতি ঘটছে। এ সকল ঘটনায় গণস্বাক্ষরিত একাধিক লিখিত অভিযোগ জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবর দেয়া হয়েছে। তবে রহস্যজনক কারণে কর্মকর্তারা ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। যার ফলে ওই শিক্ষিকা উল্টা অভিযোগকারীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে কোণঠাসা করে রেখেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ মার্চ ২০১৮ তারিখে প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন নান্দিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিসের কাজ দেখিয়ে তিনি নিয়মিত ও যথা সময়ে স্কুলে উপস্থিত থাকেন না। পাশাপাশি তিনি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সাথে অসৌজনমূলক আচার করেন।
অভিভাবকরা বলেন, বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা স্কুলে ছেলে মেয়েদের পাঠদান করানোর আগ্রহ নেই। তিনি এলাকার পছন্দের যুবকদের সাথে ঘুরে বেড়াতে বেশী আগ্রহী। এ বিষয়ে
এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করতে গেলে ওই শিক্ষিকা তাদের মামলা-হামলার হুমকি দেন। পরে এই বিষয় গুলো নিয়ে গ্রামের লোকজনের স্বাক্ষরিত একাধিক লিখিত অভিযোগ জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেয়া হয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা বলেন, প্রধান শিক্ষিকা যেখানেই যোগদান করেন সেখানেই তিনি নানা বিতর্ক সৃষ্টি করেন। তিনি এখানে আসার পর থেকে নিয়মিত কখনো স্কুলে আসেন না। উপজেলা শিক্ষা অফিসে যাওয়ার অযুহাতে তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। প্রধান শিক্ষিকাসহ এই স্কুলে মাত্র ৪জন শিক্ষিকা। এর মধ্যে একজন দীর্ঘদিন থেকে প্রশিক্ষনে আছেন। যার ফলে মাঝে মধ্যে শিক্ষক সংকট থাকায় বাচ্চাদের পাঠদানে চরম ব্যাহত ঘটে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এই স্কুল সংস্কারের জন্য চলতি বছর দু’লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। বর্তমান সভাপতি ওই অর্থ আত্মসাত করতে আমাকে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। আমি এতে রাজি না হওয়ায় তিনি আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আর স্থানীয় যুবকদের সাথে অনৈতিক কাজের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এই স্কুলে থাকি সেটা কিছু লোকজন চায় না। তাই তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
তবে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক স্বপন নিয়োগী বলেন, ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ড ও পাঠদানে অনীহার যে অভিযোগ উঠেছে তা আমি দ্বায়িত্ব নেয়ার আগের ঘটনা। তবে ওই বিষয়ে আগেই জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল। সম্প্রতি ওই শিক্ষিকাকে বদলির বিষয়ে বর্তমান সাংসদের স্বাক্ষরিত ডিওসহ একটি আবেদন শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মামুনুর রশিদ বলেন, ওই শিক্ষার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ও স্কুল কমিটি জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধিন রয়েছে।
জেএন