1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
পানির সাথে ভেসে গেছে রাজশাহীর কৃষকের স্বপ্ন - খবর ২৪ ঘণ্টা
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন

পানির সাথে ভেসে গেছে রাজশাহীর কৃষকের স্বপ্ন

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১১ মে, ২০১৮

ওমর ফারুক :
পর পর দু’বার ভারী বৃষ্টির কারণে পাকা ধান পানিতে ডুবে যাওয়ায় ব্যাপক শ্রমিক সংকট ও লোকসানের মুখে পড়েছেন রাজশাহী জেলার কৃষকরা। শ্রমিক সংকটের কারনে অনেক এলাকার ধান পানির মধ্যেই ডুবে রয়েছে। আর যেসব কৃষক অনেক কষ্ট করে শ্রমিক পাচ্ছেন তাদের জমিতে উৎপাদন হওয়া ধানের অর্ধেকই শ্রমিককে দিয়ে দিতে হচ্ছে। শ্রমিকের চাহিদামত মজুরী না দিলে শ্রমিক পাওয়াই দুস্কর হয়ে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই উৎপাদন হওয়া ধানের অর্ধেক দিয়েই শ্রমিক নিচ্ছেন কৃষকরা। শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে ধানের ফলন কম হচ্ছে। তার উপর অর্ধেক ধান শ্রমিককে দিয়ে ব্যাপক লোকসানের মধ্যে পড়েছেন কৃষকরা। পাকা ধান পানিতে ভেসে যাওয়ার সাথে সাথে কৃষকের স্বপ্নও ভেসে গেছে।

সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল রাতে ও ৩০ এপ্রিল সকালে ব্যাপক শিলা বৃষ্টি ও ঝড় হয়। প্রথম দিনের ঝড়-বৃষ্টিতে ধান পড়ে যায়। পরদিন ৩০ এপ্রিল সকালের টানা ভারী শিলা বৃষ্টিতে জেলার নয়টি উপজেলার ধান পানিতে ডুবে যায়।
ঝড় ও শিলা বৃষ্টি হওয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই কৃষকরা বোরো ধান কাটা শুরু করেছিলেন। বৃষ্টির সময় মাঠের অনেক জমিতেই ধান কাটা ছিলো। কাটা ধানগুলো পানিতে ভেসে যায়। আর জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিল এলাকার ধান পানিতে ভেসে যায়। পানিতে টইটুম্বুর হয়ে যায় মাঠ-ঘাঠ। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। নিমিষেই কৃষকের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। পানির পর থেকেই শ্রমিক সংকটের মধ্যে পড়েন কৃষকরা। মাঠের পাকা বোরো ধান ঘরে তুলতে না পারার কারণে অনেক কৃষকই শোকে বিহম্বল হয়ে পড়েন।
জেলার বাগমারা উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ বোরো ধান চাষ করা হয়। বাগমারায় ১৯ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়। বৃষ্টির পর থেকে উপজেলার বিল এলাকার কাটা ধানগুলো পানিতে ভেসে যায়। শ্রমিক সংকটের মধ্যে পড়েন কৃষকরা। কৃষক না পাওয়ায় অনেক কৃষকের ধান পানিতে ভেসে যায়। আবার অনেক জমির পাকা ধান শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতির মধ্যে পড়ে। বৃষ্টির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কৃষকরা নিজেরা নিজেরাই মজুরি বাড়িয়ে দেয়। একদিনে ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত উঠে শ্রমিকের মজুরী। আবার জমি থেকে উৎপাদনের অর্ধেক ধানও দিয়ে দিতে হয়েছে শ্রমিকদের এমন ঘটনাও ঘটছে। এ উপজেলার প্রায় বেশির ভাগ ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সাদেকুল নামের এক কৃষকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বৃষ্টির পানিতে সব শেষ হয়ে গেছে। শ্রমিক সংকট। যাওবা পাওয়া যাচ্ছে তার চড়া মজুরি নিচ্ছে কৃষকরা। আবার কোন কোন সময় জমি থেকে উৎপাদনের অর্ধেক ধান শ্রমিকদের দিয়ে ধান কেটে নিতে হচ্ছে।

তার পরের অবস্থানেই রয়েছে গোদাহগাড়ী উপজেলায়। এ উপজেলায় ১৫ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। পানিতে উপজেলার অনেক ধানই তলিয়ে ও ভেসে যায়। সেখানকার কৃষকরা তীব্র শ্রমিক সংকটের মধ্যে পড়েছেন। সেই সাথে শ্রমিক সংকট ও ফলন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন। ধান ঘরে তুলতে না পারায় ব্যাপক লোকসানের মধ্যে পড়েছেন কৃষকরা।
এবার বোরো ধান চাষে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে তানোর উপজেলা। উপজেলায় এ মৌসুমে ১২ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়। শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে এ উপজেলার কৃষকরা ব্যাপক হয়রানির মধ্যে পড়েছেন। উপজেলার প্রত্যেক এলাকার ধান পানিতে ভেসে গেছে। বিশেষ করে বিল এলাকার কৃষকদের ব্যাপক লোকসান পোহাতে হচ্ছে কৃষকদের।

বৃষ্টির পর থেকেই শ্রমিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন তারা। শ্রমিক পাওয়া গেলেও নির্ধারিত মজুরির ২/৩ গুণও বেশি নেওয়া হচ্ছে। আবার অর্ধেক ধান শ্রমিকদের দেওয়ার বিনিময়েও ধান ঘরে তুলছেন কৃষকরা। তবে সেই ধানের দামও কম পাচ্ছেন তারা। ধুলো ও মাটি যুক্ত ধান কম দামে কিনছেন আড়ৎদাররা।
উজেলার আজিজপুর গ্রামের আফজাল হোসেন নামের এক কৃষক বলেন, এবার আমার ৯ বিঘা বোরো ধান ছিল। পানিতে বিলের ২ বিঘা কাটা ধান ভেসে গেছে। বাকি ধানগুলো তোলার জন্য শ্রমিকদের উৎপাদনের অর্ধেক ধান দিয়ে দিতে হচ্ছে। এবার অনেক লোকসান হলো। এর আগে আমন মৌসুমেও লোকসান হয়। পুরো বছর লোকসান হলো।

এ ছাড়া যথাক্রমে চারঘাট ৩৪০ হেক্টর, পুঠিয়া ২ হাজার ৯০০ হেক্টর, দুর্গাপুর ৫ হাজার ৬১২ হেক্টর, মোহনপুর ৭ হাজার ৪৪০ হেক্টর, পবা ৪ হাজার ৫৮৫ হেক্টর, মতিহার ৪৩ হেক্টর ও বোয়ালিয়া থানা এলাকায় ১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়।
এসব থানা এলাকার ধানও জেলার অন্যান্য উপজেলার ন্যায় পানিতে ভেসে গেছে। বেশি মজুরী ও অর্ধেক ধান দিয়েও যেটুকু ধান ঘরে তুলতে পারছেন কৃষকরা তারও ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না তারা। আমন ও বোরো দুই মৌসুমেই ধান চাষ করে লোকসানের সম্মুখিন হন কৃষকরা।

আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছিল। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও রেকর্ড পরিমাণ ছিল। কিন্তু ঝড় ও শিলা বৃষ্টির কারণে সেই লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে। কৃষকরা কাঙ্খিত ফলন পাবেন না। তবে জেলা কিছু কিছু এলাকায় বোরো ধানের ক্ষতি কম হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

উল্লেখ্য, ৬৯ হাজার ২০৫ হেক্টর জমি থেকে চলতি বোরো মৌসুমে ৪ লাখ ১১ হাজার ৭৭ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

 

খবর২৪ঘণ্টা/এমকে

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST