পাবনা প্রতিনিধি: বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় জরিপের তথ্য মতে, দেশে প্রতিদিন পানিতে ডুবে মারা যায় ৫৩ জন। যা বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর ৪৩ শতাংশ। এমন বাস্তবতায় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে পাবনার চাটমোহরে শুরু হলো বিনামুল্যে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ।
সামাজিক সংগঠন হিসেবে ইতিমধ্যে সাড়া ফেলা দেয়া ফেসবুক গ্রুপ ‘চেতনায় চাটমোহর’ এর উদ্যোগে সোমবার সকাল ১১টায় চারদিনব্যাপী এই সাঁতার প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করেন পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মো: মকবুল হোসেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) তাপস কুমার পাল, পৌর মেয়র মির্জা রেজাউল করিম দুলাল। অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, চাটমোহর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক চলনবিল সম্পাদক রকিবুর রহমান টুকুন, জেলা পরিষদের সদস্য সাইদুল ইসলাম পলাশ। স্বাগত বক্তব্য দেন, চেতনায় চাটমোহরের চেয়ারম্যান জেমান আসাদ। অনুষ্ঠানে সম্প্রতি চলনবিলে নৌকাডুবির পর নিজের জীবন বাজি রেখে প্রথম উদ্ধার কাজে এগিয়ে যাওয়া কিশোর সুমন হোসেন সেদিনের উদ্ধারকাজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
চাটমোহর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় চাটমোহর উপজেলা পরিষদের পুকুরে শুরু হওয়া এই সাঁতার প্রশিক্ষণ চলবে আগামী বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত। চারদিনে দুই শতাধিক শিশুকে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে জানান আয়োজকরা।
চেতনায় চাটমোহরের চেয়ারম্যান জেমান আসাদ জানান, শিশুদের পানি ভীতি কাটানো ও অভিভাবকদের সচেতন করার প্রয়াস হিসেবে এই সাঁতার প্রশিক্ষণের আয়োজন। চাটমোহর চলনবিলের একটি অংশ। এখানে প্রতিবছর বন্যা হয় এবং অনেক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। আমাদের চিন্তাটা মুলত এখান থেকেই। শিশু মৃত্যুর হার কমাতে এই উদ্যোগ।
এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবক ও অংশ নেয়া শিশুরা। কয়েকজন শিশু ও তাদের অভিভাবকরা জানান, চেতনায় চাটমোহর যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সত্যি প্রশংসনীয়। গত বছরের মতো এবারও প্রশিক্ষণের আয়োজন করায়
সংশ্লিষ্টদের সাধুবাদ জানাই। এর মাধ্যমে অনেক শিশু সাঁতার শিখতে পারবে।
চাটমোহর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার মো: নজরুল ইসলাম বলেন, সাঁতার শেখা সবার জন্যই প্রয়োজন। নিজের ও শিশুর জীবন বাঁচাতে সাঁতার শেখার কোনো বিকল্প নেই। আমরা সবসময় মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াই, চেতনায় চাটমোহরের এই উদ্যোগের পাশে আমরা আগেও ছিলাম, এখনও আছি।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার বলেন, এই উদ্যোগকে কিভাবে আরো তৃণমুলে ছড়িয়ে দেয়া যায় সে প্রচেষ্টা আমাদের থাকবে। কারণ ইউনিয়ন পর্যায়ে অনেকে আছে যারা সাঁতার জানে না। তাই উপজেলা পরিষদ বা উপজেলা প্রশাসন থেকে সহায়তা দিয়ে এই কার্যক্রমকে গতিশীল করা গেলে উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়বে।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই