পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন যে তিনি এখন গৃহবন্দী। এখনও প্রাণনাশের হুমকিতে আছেন। এছাড়া পিটিআই দলের প্রধান এখনও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চাইছেন।
শুক্রবার ইমরান খান দেশের ক্ষমতাসীনদের কাছে একটি আবেদন করেছেন। ওই আবেদনে তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে তার দলের সঙ্গে বসে দেশকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সমাধান খুঁজে বের করার সময় এসেছে।
ইউটিউবে প্রচারিত একটি ভিডিওতে তিনি বলেন, আমি আলোচনার জন্য আবেদন করছি। কারণ, বর্তমানে পাকিস্তানে যা ঘটছে তা প্রকৃত সমাধান নয়।
লাহোরে জামান পার্কের বাসভবন থেকে পিটিআই দলের প্রধান বলেন, দেশ বিপর্যেয়র দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন শাসকরা এটা নিয়ে চিন্তিত নন। কারণ, তারা তাদের লুট করা সম্পদ বিদেশে লুকিয়ে রেখেছেন।
পৃথকভাবে ফ্রান্স-২৪-কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে ইমরান খান বলেন, তিনি গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। তার দলের শীর্ষ নেতৃত্বর সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তার হাজার হাজার সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা পিটিআইকে সমর্থন করে তাকে হয় গ্রেফতার করা হয়, অথবা তাকে গুম করা হয়।
তিনি ওই বিদেশি গণমাধ্যমকে বলেন, তাকে দুথবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এখনও তার জীবন নিরাপদ নয়। তিনি প্রাণনাশের হুমকিতে আছেন।
ভিডিও ভাষণে পিটিআই দলের প্রধান বলেন, তিনি সংলাপের জন্য আবেদন জানিয়েছেন, এটা তার দুর্বলতা হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয়। এখন পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে যে শারীরিক ও অর্থনৈতিক বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে তা কোনো সমাধান নয়। দেশের সমস্যার সমাধান করতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সাংবিধানিক ভূমিকার মধ্যে দিয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যখনই আমি সংলাপের জন্য বলি, তখনই ক্ষমতাসীন শাসকেরা মনে করে আমি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি এবং তারা আমার দলকে নির্মূল করার আশায় পিটিআই নেতা ও কর্মীদের উপর আরও বাড়াবাড়ি করতে শুরু করে। কিন্তু তাদের জানা উচিৎ যে দেশের তরুণদের মধ্যে যে আদর্শ রয়েছে তা কোনো সরকারই দূর করতে পারবে না।
তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় শক্তিগুলোকে সতর্ক করে বলেন, তাদের সংযমী হওয়া উচিৎ। কারণ পিটিআইকে নির্মূল করার প্রচেষ্টায় দেশও ধ্বংস হতে পারে।
তার মতে, দেশের কোনো রাজনৈতিক দলই শাসকদের কাছ থেকে এমন বর্বর আচরণের মুখোমুখি হয়নি।
ইমরান খান বলেন, পাকিস্তান এখন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। দেশে এখন একটি দুর্বল সরকার আছে। এরা বিদেশী অর্থের ওপর নির্ভর করে। তারা নির্বাচন অনুষ্ঠানেও ভয় পায়। এ ব্যাপারে তারা আদালতের আদেশকেও মান্য করছে না।
তিনি দাবি করেন, বর্তমান শাহবাজ শরিফের সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনী, বেসামরিক প্রশাসন এবং পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন জোট বেঁধেছে। এরপরও শাহবাজ শরিফের সরকার নির্বাচন করতে ভয় পাচ্ছেন। তারা আসলে ইমরান খানকে রাজনীতি থেকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চায়। সূত্র: ডন, বিবিসি
বিএ…