1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
পাকিস্তানে ভোটকেন্দ্রে আত্মঘাতী হামলা, নিহত বেড়ে ৩১ - খবর ২৪ ঘণ্টা
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০১ অপরাহ্ন

পাকিস্তানে ভোটকেন্দ্রে আত্মঘাতী হামলা, নিহত বেড়ে ৩১

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৫ জুলা, ২০১৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের ১১তম জাতীয় নির্বাচনে দেশটির সাড়ে ১০ কোটির বেশি নিবন্ধিত ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। এরই মধ্যে একটি ভোটকেন্দ্রের পাশে ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে ২৫ জন নিহতের কথা বলা হলেও তা বেড়ে ৩১ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া ২০ জনের বেশি আহত হয়েছে। দেশটির জিও টিভি ও ডন নিউজের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

এর আগে বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা বিরতিহীনভাবে চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

ডন বলছে, কুয়েত্তার পূর্ব বাইপাস এলাকার একটি ভোটকেন্দ্রের পাশে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশের ভ্যানকে লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর পর এই প্রথম কোনো হামলার ঘটনা ঘটল। এর আগে অবশ্য দুই দলের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে পিটিআইয়ের এক কর্মী নিহত হয়েছে।

ডন বলছে, হামলার ধরন দেখে মনে হচ্ছে, পুলিশের ভ্যানকে টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছে। বেসামরিক একটি হাসপাতালের মুখপাত্র ওয়াসিম বাইগের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলছে, হামলায় ২৫ জন নিহত এবং দুই ডজনের বেশি আহত হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে তিন পুলিশ সদস্য ও দুই শিশু রয়েছে বলে জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গণমাধ্যমটি ওই বিস্ফোরণকে সন্দেহভাজন আত্মঘাতী হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছে।

খবরে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৬০ নম্বর আসনে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এলাকাটিকে স্বাভাবিকভাবেই স্পর্শকাতর মনে করা হয়। গত ১৫ বছরে ওই এলাকায় বেশ কিছু টার্গেট কিলিং ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে।

পাক গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, সাড়ে ১০ কোটির বেশি পাকিস্তানি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৯২ লাখ ২৪ হাজার ২৬৩ জন এবং নারী ভোটার ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৩১ হাজার ১৪৬ জন।

দেশটির চারটি প্রদেশে ৮৫ হাজার ৩০৭টি পোলিং স্টেশনে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে ৮টি আসনে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে ইলেকশন কমিশন অব পাকিস্তান (ইসিপি)।

ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ও প্রাদেশিক পরিষদে মোট ৮৪৯টি আসনের বিপরীতে ১২ হাজার ৫৭০টি জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৭২টি আসনে সরাসরি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর ৭০টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি নারীদের জন্য এবং ১০টি সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত। ১৭২টি আসনে বিজয়ী হলে কোনো দল সরকার গঠন করতে পারবে।

সকাল ৮টা ৭ মিনিটে পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নওয়াজ (পিএমএল-এন) প্রধান শাহবাজ শরিফ লাহোরে নিজ এলাকায় ভোট দিয়েছেন। স্থানীয় মডেল টাউন কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেশবাসী তার দলকে বিজয়ী করলে পাকিস্তানের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করা হবে।

নির্বাচন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে দেশটির নির্বাচন কমিশন দেশব্যাপী সাড়ে চার লাখ পুলিশ সদস্য এবং তিন লাখ ৭০ হাজার সেনা সদস্য মোতায়েন করেছে।

এদিকে, জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে গোটা পাকিস্তানে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

৭০ বছরের ইতিহাসে দেখা যায়, পাকিস্তানে কখনও আপাতদৃশ্যের গণতন্ত্র এসেছে। আবার পালাবদল করে এসেছে পুরোপুরি সামরিক সরকার। এই দুই ধরনের ব্যবস্থা যেন বার বার পালাবদল করেছে। আর এই প্রক্রিয়ার মাঝে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পাকিস্তানের সাথে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দ্বন্দ্ব এবং পাকিস্তান হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল।

এবারের নির্বাচন নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, সেটাকে কেউ কেউ ‘গণতান্ত্রিক অভ্যূত্থানের’ ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন বলে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সেজন্য বরাবরের মতো এবারও সন্দেহ করা হচ্ছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে।

অতীতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সরাসরি অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে, আর তা নাহলে বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটিয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বিভিন্ন সময় নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় এমন কৌশল নিয়েছে, যেন সেই সরকার আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে।

এসব বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার বন্ধ হয়েছিল ২০০৮ সালে। সে কারণে পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো একটি নির্বাচিত সরকার ২০১৩ সালে তাদের মেয়াদ শেষ করতে পেরেছিল। তখন থেকেই আবার পাকিস্তানের গণতন্ত্রের স্রোত উল্টো দিকে বইতে শুরু করেছে।

সমালোচকরা বলছেন, সামরিক প্রশাসন অতীতের মতো এখন আবার পূর্ণ ক্ষমতা ফিরে পেতে পুরোনো কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে সন্দেহের কেন্দ্রে এসেছে, সেজন্য তিনটি ঘটনাকে প্রমাণ হিসেবে বলা হচ্ছে।

প্রথমত, আদালত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফসহ বেছে বেছে বিদায়ী সরকারের কয়েকজনকে অভিযুক্ত করেছে। আইন বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলেছেন, পাকিস্তানে বিচার বিভাগ বিভিন্ন আইন ব্যবহার করে বিদায়ী সরকারের ডানা কেটে দিয়ে বিরোধী পক্ষগুলোর জন্য সুযোগ তৈরি করছে।

ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শওকত আজিজ সিদ্দিকীর বক্তব্যেও বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

গত রোববার রাওয়ালপিন্ডি বার এসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে বিচারপতি সিদ্দিকী বলেছেন, গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। নওয়াজ শরিফকে যেন মুক্তি দেয়া না হয়, সেজন্য সংস্থাটি চাপ সৃষ্টি করে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

গত বছর দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ক্ষমতাচ্যুৎ হন নওয়াজ শরিফ। নিম্ন আদালত তাকে দশ বছরের সাজা দিয়েছেন। কিছু দিন আগে তিনি দেশে ফিরে জেলে গেছেন।

এদিকে, বিচারপতি সিদ্দিকী এমন বক্তব্যও দিয়েছেন যে, তিনি আইএসআই এর বিরুদ্ধে সত্য কথা বলতে ভয় পান না। তিনি বলেছেন, ‘আমাকে যদি মেরে ফেলতেও চায়, তারপরও আমি ভয় পাই না।’

দ্বিতীয়ত, এবার নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কর্তৃপক্ষ জঙ্গিদের কর্মকাণ্ড দেখেও না দেখার ভান করছে।

তৃতীয়ত, ভোটের প্রক্রিয়ায় বা তা পরিচালনার জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এসবের কিছু কিছু আলামত ইতিমধ্যেই দেখা গেছে।

নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগের অনেক প্রার্থীকে দল ছেড়ে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফে যোগ দিতে অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে বাধ্য করা হয়েছে। যারা দল ছাড়ার টোপে রাজি হননি, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে বা তাদের হয়রানি পোহাতে হচ্ছে।

প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টিও চাপে রয়েছে। দলটির সিনিয়র কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ নতুন করে তোলা হয়েছে।

বামপন্থী আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির গুরুত্বপূর্ণ একজন প্রার্থী গত সপ্তাহে পেশোয়ারে আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয়েছেন। একই ধরনের হামলায় আরও দুইজন প্রার্থী নিহত হয়। বেলুচিস্তানে ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী একজন প্রার্থী গিজেন মারিকে গৃহবন্দি হিসেবে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু পাশের নির্বাচনী এলাকাতেই জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে, এমন একজন প্রার্থী শফিক মেঙ্গাল নির্বিঘ্নে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। তার মতো নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর অনেক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

গণমাধ্যমও অজানা কর্তৃপক্ষ থেকে চাপের মধ্যে রয়েছে। নির্বাচনের বাছাই করা কিছু খবর প্রচারে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে। নির্বাচনের ফলাফল কোনো একটি দলের পক্ষে যাবে, তা স্পষ্ট নয়। ফলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তাতে প্রভাব খাটানোর সুযোগ থাকে।

এমন পরিস্থিতি তৈরির পেছনেও সামরিক বাহিনীর কৌশল রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আর এই প্রেক্ষাপটে নিরঙ্কুশ গণতন্ত্র আসলে অনেক দূরে বলেই বলা হচ্ছে। আসলে গণতন্ত্রের আড়ালে সামরিক শক্তির অধীনে একটা শাসন ব্যবস্থা বা একটা অভ্যুত্থান হচ্ছে- এই ভয় কাজ করছে বিশ্লেষকদের মাঝে।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/জেএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST