বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে এখন ছদ্মবেশী বাকশাল চলছে। সাংবাদিকরাও আজ সেন্সর করে নিউজ করছে। অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতির দৃষ্টি অন্যদিকে নিতে পরিমণি ইস্যু দিয়ে মিডিয়াকে ব্যস্ত রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘পরিমণিকে কেন বারবার রিমান্ড নেওয়া হয়, তার বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের বিরুদ্ধে রুল জারি করে উচ্চ আদালত। যখন আমাদের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিনা দোষে, বিনা ওয়ারেন্টে আটক করে লাগাতার রিমান্ডে নেওয়া হয়, তখন তার বিরুদ্ধে রুল জারি হয় না। অর্থাৎ কেউ স্বাধীন নয়, কারও কোনো স্বাধীনতা নেই।’
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৬৬, ’৬৯ ও ‘৭১ আর ২০২১ সাল এক নয়। নতুন বিশ্বকে আমাদের বুঝতে হবে। শাসকগোষ্ঠী পাল্টেছে, ধরন পাল্টিয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দলের পক্ষে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করা সম্ভব নয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সবার মাঝে আজ হতাশা বিরাজ করছে; কেন? আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেছে। এরশাদকেও নয় বছর শাসন করার পর বিদায় নিতে হয়েছে। এই বর্তমান বাকশালী শাসকগোষ্ঠীকেও বিদায় নিতে হবে। তবে একটু অপেক্ষা করতে হবে।
টিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজকে বলছে ১০ লাখ টিকা আসবে। কালকে বলছে আজ আসবে না, কাল আসবে। টিকা নিয়ে চলছে ধোঁকাবাজি। আসল বিষয়টি হলো কমিশন। যেখানে বেশি কমিশন পাওয়া যায়, সেদিকেই ঝুঁকছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৪ ভাগ মানুষকেও এখন টিকার আওতায় আনতে পারেনি সরকার। লকডাউন দিয়ে তা কার্যকর করতে পারে না। কারণ, মানুষের ঘরে খাবার নেই, দেননি প্রণোদনা। যেটা দিয়েছেন সেটা লুটের জন্য। হাজার কোটি টাকা বিলি করলেও তা পেয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এ সব লুটপাটের ঘটনা অন্যদিকে দৃষ্টি ফেরাতেই বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সীমান্ত ক্রস করলেই গুলি করে মারা হচ্ছে। ভারতের কাছে তারা বিচার চাইতেই ভয় পায়। চার বছরেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারলো না। কারণ, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কেউ এসে আমাদের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেবে না। গণতন্ত্র, মানুষ ও দেশ বাঁচাতে দেশের তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ দেশের মানুষ কখনো পরাজিত হয় না। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন- হতাশ হয়ো না, জয় আসবেই।’
কাজী জাফরের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, কাজী জাফর একটি ইতিহাস। কলেজ জীবনে তার বক্তব্য শুনে আমরা ঘরে থাকতে পারিনি। অধিকার আন্দোলনে কাজী জাফরের ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
সাবেক মন্ত্রী ও জাপার একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এনপিপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।
জেএন