খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় পরকীয়া প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে নিজ সন্তানকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গৃহবধূ শেফালী আক্তার (২৮)। শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আদালতে শেফালী জানিয়েছেন, পরকীয়া প্রেমিক মোমেন তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দুই সন্তানকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে তার রাস্তা পরিষ্কার করতে চেয়েছিল। তবে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হৃদয় মারা গেলেও আরেক সন্তান শিহাব রক্ষা পেয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার এসআই কাশেম জানান, শেফালী আদালতে জবানবন্দিতে বলেছে- রাতে তাকে পরকীয়া প্রেমিক মোমেন ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তার দুই সন্তান হৃদয় (৯) ও শিহাবের (৭) গায়ে আগুন দেয়। এ সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে হৃদয় ঘটনাস্থলে মারা গেলেও আশপাশের লোকজন আরেক সন্তান অগ্নিদগ্ধ শিহাবকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহতের নাম হৃদয় হোসেন (৯)। সে ৩৫নং বাড়ৈপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। দগ্ধ তার ছোট ভাই জিহাদ হোসেন শিহাব (৭) একই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। তাদের বাবার নাম আনোয়ার হোসেন। সে দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়া প্রবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর আগে বাড়ৈপাড়ার বিল্লাল হোসেনের ছেলে লিবিয়া প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কেরানীগঞ্জের সুন্দর আলীর মেয়ে শেফালীর বিয়ে হয়। পরে তাদের দুই ছেলের জন্ম হয়। স্বামী বিদেশে থাকায় প্রতিবেশী মোমেনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন শেফালী। এ নিয়ে তিন মাস আগে এলাকাতে কয়েকবার সালিশি বৈঠকও হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয় শেফালী বাবার বাড়িতে চলে যাবেন। কিন্তু শেফালী বিষয়টি না মেনে শ্বশুর বাড়িতেই থাকছিলেন। এসব নিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজন ও স্বামীর সঙ্গে শেফালীর মনোমালিন্য দেখা দেয়। ফলে দুই সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শেফালী ও তার প্রেমিক।
শুক্রবার গভীর রাতে পাষণ্ড মা শেফালী বেগম তার প্রেমিক মোমেনকে নিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তার দুই সন্তান হৃদয় ও শিহাবকে কাঁথায় পেঁচিয়ে ম্যাচের কাঠি দিয়ে আগুন দেয়। এ সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে হৃদয় ঘটনাস্থলে মারা গেলেও আশপাশের লোকজন আরেক সন্তান অগ্নিদগ্ধ শিহাবকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেন।
নিহত হৃদয় ওই এলাকার লিবিয়া প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের বড় ছেলে ও ৩৫নং বাড়ৈপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। ছোট ছেলে দগ্ধ শিহাব একই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ