1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
নিধনের আলামত লুকাতে বুলডোজার চলছে মিয়ানমারে - খবর ২৪ ঘণ্টা
সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:০১ পূর্বাহ্ন

নিধনের আলামত লুকাতে বুলডোজার চলছে মিয়ানমারে

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
khobor24ghonta.com

খবর২৪ঘণ্টা,আন্তর্জাতি ডেস্ক: প্রথমে তারা বাড়িগুলো জ্বালিয়ে দেয়। এখন, তারা বুলডোজার ব্যবহার করে পোড়ামাটির শেষ অস্তিত্বটুকু মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে। এভাবে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্মম নির্যাতনের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ মুছে ফেলেছে মিয়ানমার সরকার।

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর যে নিপীড়ন চলানো হয়েছে, সেটি ‘যেন এক জাতিগত নিধনের আদর্শ উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যা দেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থার প্রধান। এছাড়া বিষয়টিকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের একটি প্রতিবেদনে।

শুক্রবার স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ধারণ করা মিয়ানমারের সংকটাপন্ন রাখাইন রাজ্যের ছবি প্রকাশ করে বার্তাসংস্থা এপি। ছবিতে দেখা যায়, কয়েক ডজন খালি গ্রাম সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সম্পূর্ণরূপে সমতল করে ফেলা হয়েছে।

গেল বছর আগস্টে কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার অভিযোগে ওই গ্রামগুলোতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। রাখাইন থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।

মিয়ানমার সরকার বিষয়টিকে ‘একটি বিধ্বস্ত অঞ্চলের পুনর্র্নিমাণ’ বললেও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, মূলত কৃতকর্মের প্রমাণ না রাখতে দেশটির সরকার বুলডোজার চালিয়ে সব তথ্য-প্রমাণ নিশ্চিহ্ন করতে চাচ্ছে।

ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা বলছেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের অস্তিত্বের শেষ চিহ্নটিও মুছে ফেলছে। যেন তারা তাদের নিজ ভূমিতে আর প্রত্যাবর্তনের সুযোগ না পায়।

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নারী জুবাইরা সম্প্রতি রাখাইনের নিজ গ্রাম মিন হ্লুট ঘুরে আসেন। তিনি নিজ চোখকে বিশ্বাস করাতে পারেননি। বার্তা সংস্থা এপিকে টেলিফোনে তিনি জানান, গত বছর গ্রামের বাড়িগুলোতে আগুন দেয়া হয়। ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও বাপ-দাদার ভিটা ও গাছগুলো মাথা উচুঁ করে অস্তিত্ব জানান দিচ্ছিল। কিন্তু সেগুলোও এখন নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে। বুলডোজার চালিয়ে গ্রামের পর গ্রাম সমান করে দেয়া হয়েছে। ভিটেমাটি, গাছপালার কোনো অস্তিত্ব এখন নেই। খুব কষ্ট হয়েছে নিজ গ্রামকে চিনতে।

জুবাইরা বলেন, ‘যে বাড়িগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি কিন্তু পরিত্যক্ত ছিল সেগুলোও সমান করে দেয়া হয়েছে। সেখানে থাকা আমার সব সুখস্মৃতি মুছে ফেলা হয়েছে।’

স্থানীয় উগ্র মৌলবাদী বৌদ্ধদের সহায়তায় রাখাইনে শুধু মুসলমানদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়নি, সেখানে নির্মম গণহত্যা, ধর্ষণ এবং ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়েছে বলে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার দাবি। ইতোমধ্যে রাখাইনে বেশ কয়েকটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।

ডিজিটাল গ্লোব থেকে প্রকাশিত স্যাটেলাইট ছবিগুলো ইঙ্গিত দেয়, রোহিঙ্গাদের অন্তত ২৮টি গ্রাম বুলডোজার ও অন্যান্য যন্ত্র দিয়ে সমান করে দেয়া হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে মংডুর অন্তত ৫০ কিলোমিটার এলাকা পুরোপুরি পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে। সেখানে নির্মাণকারী শ্রমিকদের আনাগোনা, নতুন নতুন ভবন ও ভবনের কাঠামো এবং হেলিপ্যাড তৈরি করতে দেখা গেছে।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘র বিশ্লেষণও একই। গত শুক্রবার তারা জানায়, এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৫টি গ্রাম গুঁড়িয়ে দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে।

গেল বছর ডিসেম্বরে মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৭৮৭টি গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই বৌদ্ধ বা হিন্দুদের জন্য। কেবলমাত্র ২২টি ঘর ‘বাঙালিদের’ জন্য। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বর্ণনা করতে ‘বাঙালি’ শব্দটি ব্যবহার করে। তাদের ভাষায়, রোহিঙ্গারা হলো ‘বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী’।

‘অবশ্যই মাটি সরানো ও সমানের জন্য আমরা বুলডোজারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছি’- মংডুর সরকারি কর্মকর্তা মিন্ট খাইন এমনটি উল্লেখ করে বলেন, ‘নতুন গৃহ নির্মাণে জন্য মাটি সরাতে তো হবেই।’

আরকানে মুসলিম সংখ্যালঘুদের নিয়ে কাজ করা ‘দ্য আরাকান প্রজেক্ট’ নামে একটি মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থার সদস্য ক্রিস লইয়া বলেন, বাস্তুচ্যুত হওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের জায়গা-জমি ও আবাসস্থল ফিরে পাওয়া আরো কঠিন হয়ে পড়বে কারণ সরকার তাদের নাগরিকত্বসহ আরও অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে।

‘তারা কীভাবে শনাক্ত করবে যে, তারা কোথায় বসবাস করতো; যদি কোনো চিহ্নই অবশিষ্ট না থাকে? তাদের (রোহিঙ্গাদের) সংস্কৃতি, তাদের ঐতিহ্য, তাদের অতীত, তাদের বর্তমান- সবকিছুই মুছে ফেলা হয়েছে’- যোগ করেন ক্রিস লইয়া।

মিয়ানমারের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ রিচার্ড ওয়ার বলেন, ‘যে ছবিগুলো আমি প্রত্যক্ষ করেছি, সেখানে কোনো ল্যান্ডমার্ক নেই, কোনো গাছপালা নেই। সবকিছুই উপড়ে ফেলা হয়েছে- এবং এটি খুবই পরিষ্কার যে, সেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল।’‘সংঘটিত অপরাধগুলোর কোনো বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত হয়নি, যে কারণে আমরা বলছি, ন্যায়বিচার বিঘ্ন করতেই এগুলো করা’- বলেন রিচার্ড ওয়ার।

ক্রিস লইয়া ও রিচার্ড ওয়ার- উভয়ের মতে, কোনো গণকবর ধ্বংস করা হয়েছে বলে তাদের জানা নেই। তবে ওয়ার বলেন, ‘আমরা জানি না ওইসব কবরগুলো কোথায়ৃ কারণ সেখানে প্রবেশে আমাদের কোনো অধিকার নেই।’

খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ 

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST