নাটোর প্রতিনিধিঃ কোমলমতি এই শিশুটির নাম প্রতিমা রানী। প্রতিমার বাবার প্যারালাইসিস তার মা ক্যান্সারে আক্রান্ত। প্রতিমা সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের নূরপুর নানার বাড়ি থেকে স্থানীয় নূরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে পড়াশোনা করছে। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে শিক্ষকদের কাছে অতি পরিচিত মুখ প্রতিমা। কিন্তু সংসারে অভাব অনটন আর টানাটানি নিয়ে বন্ধের পথে প্রতিমার পড়াশোনা।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন প্রতিমার নানার বাড়ি কলম ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে গিয়ে জানা যায়, প্রতিমা তার বাবার ২য় পক্ষের একমাত্র সন্তান। তার বাবার ১ম পক্ষের ঘরে আরো ৩ আছে। ৩ বোনের মধ্যে বর্তমানে ১ জন বিবাহিত। প্রতিমার বাবা জতীন্দ্র কুমার সরকার। বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার শ্যাওলাতুল গ্রামে। বাবা ধামরাইয়ে ১ম পক্ষের সন্তানদের সাথে থাকেন। তিনি ধামরাইয়ের ইসলামপুরে সওজ বিভাগে কাজ করতো। ২০১২ সালে চাকুরীর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সংসার ভালোই চলছিলো। কিন্তু প্যারালাইসিস হওয়ার কারনে আর আগের মত সংসারের খরচ চালাতে পারেন না। প্রতিমার মা শ্যামলী রানী সরকার এর প্রায় ২ বছর আগে ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এখন আর আগের মত কাজ করতে পারেন না। মাঝে মাঝে চিনতে পারেন না কাউকেই। প্রতিমার মা প্রতিমাকে নিয়ে মাঝে মধ্যে তার বাবার কাছে যান বেড়াতে। কিন্তু বাবার অচলাবস্থার কারনে মেয়েকে পড়াশোনার খরচ দিতে পারেন না।
বর্তমানে প্রতিমার নানা সন্তোষ কুমার সরকার বৃদ্ধ বয়সে ছাত্র পড়িয়ে সংসার চালানোর পর প্রতিমার পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমসিম খাচ্ছে। এ সকল দু:চিন্তা যেন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে প্রতিমাকে। যে বয়সে শুধু লেখাপড়া আর খেলাধুলা করে মজার সময় কাটানোর কথা সেই বয়সে তার মুখে সব সময়ই হতাশার ছাপ।
প্রতিমা জানায়, ৫ম শ্রেনীতে জিপিএ ৫ পেয়ছে উত্তীর্ন হয়েছি। বর্তমানে ৮ম শ্রেনীতে পড়াশোনা করছি। আমার বাবা প্যারালাইসিসের রোগী,মা ক্যান্সারে আক্রান্ত। আমার নানার অনেক বয়স হয়ে গেছে। কষ্ট করে প্রাইভেট তাকে পড়ান এবং কয়েকজনকে পড়িয়ে বর্তমানে প্রতিমার লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছেন। অর্থের অভাবে প্রাইভেট পড়তে পারি না। আমি জানিনা আমার আর পড়াশোনা আর কতদিন চালাতে পারবো। আমি আরো পড়তে চাই। আমি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চাই।
প্রতিমা তার লেখাপড়ার জন্য সে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ