নাটোর প্রতিনিধি: জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতীর জনক বলতে দ্বিধা করে ’মজিবর’, ’মজিবর’ বলে সম্বোধন করেছেন এক যুবলীগকর্মী। এসময় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতিসহ অন্যান্যরা প্রতিবাদ করেও তার মুখ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর পুরো নাম বলাতে পারেননি। অথচ তিনি একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন যুবলীগ নেতৃবৃন্দ ও বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকমন্ডলীর সামনে তার এমন অবজ্ঞাসুলভ কথায় সকলেই কষ্ট পেয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার তেলকুপি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভ্পাতি জালাল উদ্দিন এমন অবজ্ঞাভরা কথা বলেন।
সম্প্রতি জালালের বিরুদ্ধে ৪টি চেকে ৬১ হাজার টাকা গ্রহণ, বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ জমির বদলে ৩৩ শতাংশ জমির এওয়াজ বদল, বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বিয়ের জন্য প্রভাব খাটানো, মেয়েটিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে পৃথকভাবে ক্লাস গ্রহণ, প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে মারপিটে উদ্যোগী,শিক্ষকদের রুম বদল করে ভাঙ্গা রুমে স্থানান্তরসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আসে। এনিয়ে জেলা প্রশাসক,জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এব্যাপারে জেলা প্রশাসসের নির্দেশে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্য, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করেন।
প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ শোনার পর সভাপতি জালাল উদ্দিনকে তার বক্তব্য তুলে ধরতে বলা হলে তিনি বক্তব্যের এক পর্যায়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানকে শুধু মজিবর বলে সম্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছাতনী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি দুলাল সরকার, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তোফাজ্জ্বল হোসাইন, ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি,শিক্ষা কর্মকর্তাসহ উপস্থিত সকলেই তার কথার প্রতিবাদ করেন। তারা জাতির জনককে সম্মান দেখিয়ে পুরো নাম বলতে বললেও জালাল উদ্দিন তা করেননি। তার এমন আচরণ ও কথায় উপস্থিত সকলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিষয়টি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি দুলাল সরকার, ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জ্বল হোসেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ জানান, জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের আরও কাজ বাকি আছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে প্রতিবেদন জমা দেবেন তিনি। এব্যাপারে যথাযথ কর্তপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটি প্রধান রমজান আলী আকন্দ জানান, সভাপতির বিয়ের প্রভাবের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বৃষ্টি নামের মেয়েটি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছে। তাকে নিয়মিত উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে কতৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে গোপনে যদি দশম শ্রেণীর ওই মেয়েটিকে সভাপতি জালাল বিয়ে করে থাকেন এবং তা প্রমানীত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ গ্রহণে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ