খবর২৪ঘন্টা আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বসানো দেড় লাখ সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করে চীনা সেনাবাহিনী নজরদারি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দিল্লির ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির সরকার এসব ক্যামেরা বসানোর কাজ চীনা কোম্পানিকে দিয়েছিল। লাদাখ সংঘাতে ভারতীয় ২৩ সৈন্যের প্রাণহানির পর এখন দেশটির বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, দিল্লিতে ক্যামেরা বসিয়ে চীনা সেনাবাহিনীকে নজরদারি চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে আম আদমি পার্টি।
দেশটিতে বেইজিংবিরোধী মনোভাব যখন তুঙ্গে তখন সিসিটিভির মাধ্যমে চীনা সেনাবাহিনীর নজরদারি চালানোর এই অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নয়াদিল্লি। গত ১৫ জুন লাদাখ সংঘাতের পর ভারতের ক্ষমতাসীন সরকার চীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। সীমান্তে সৈন্য-সরঞ্জাম বৃদ্ধির পাশাপাশি ইতোমধ্যে ভারতে চীনা ৫৯ টি মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দিল্লিতে যে দেড় লাখ সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে; তা চীনা কোম্পানি হিকিভিশনের উৎপাদিত। দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনা এই কোম্পানির ক্যামেরা চালানোর জন্য তাদেরই তৈরি একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে হয়। সরকারি, বেসরকারি অফিসের পাশাপাশি দিল্লির হাজার হাজার মানুষ বাড়িতে হিক্কিভিশনের ক্যামেরা বসিয়েছেন; তারা এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছেন ফোনে; যা নজরদারি চালানোর অন্যতম অস্ত্র।
ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এই ইস্যুতে আম আদমি পার্টির ব্যাপক সমালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, পুরোটাই রাজনীতি।
দিল্লির সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ আনুজ আগারওয়াল বলেছেন, শুধুমাত্র সিসিটিভি ক্যামেরা একাই হুমকি নয়। বরং মোবাইল ফোনে লাইভ দেখার জন্য যখন মানুষ হিকিভিশনের আইভিএমএস-৪৫০০ অ্যাপ ডাউনলোড করেন; হুমকি তৈরি হয় তখন।
তিনি বলেন, ওই কোম্পানির যেকোনও কর্মকর্তা অথবা সরকার অথবা চীনের সেনাবাহিনী অনায়াসেই এই অ্যাপের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। এ ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে দিল্লির রাস্তায় কি ঘটছে তা দেখার জন্য এই অ্যাপই যথেষ্ঠ। এসব ক্যামেরায় অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোনও ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। যা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ পাওয়ান দুগ্গাল বলেন, দিল্লির অনেক সরকারি-বেসরকারি অফিসেও হিক্কিভিশনের সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে। মানুষ এখন অনেক খুশি যে- তারা মোবাইল ফোনে অ্যাপের মাধ্যমে লাইভ দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু এটাই উদ্বেগের। কারণ এই ক্যামেরার মাধ্যমে লাইভ দেখা যাচ্ছে চীন থেকেও। এমনকি চীনের সেনাবাহিনীও এসব ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে।
সূত্র: ইন্ডিয়া ট্যুডে।
খবর২৪ঘন্টা/নই