তানোর প্রতিনিধি : বরেন্দ্র অঞ্চল নামে খ্যাত তানোর উপজেলায় এ বছর আলুর বাম্পার ফলনে লাভের মুখ দেখছেন চাষীরা । ফলনের পাশপাশি দামও পাচ্ছেন ভালো। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা আলু কিনতে আসছেন এ উপজেলায়। বিভিন্ন চাষির সাথে কথা বলে জানা গেছে, কৃষি ফসল উৎপাদন করেই চলে উপজেলা বাসীর জীবন যাত্রা। ধানের পর আলু চাষ হয় ব্যাপকহারে। গত কয়েক বছর ধরে শুধু লোকসান গুনতে হয়েছে আলু চাষিদের। বিগত মৌসুমে আলু রোপণের সময় এবং উত্তোলনের সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যেত। কিন্তু এবারে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যায়নি। যার ফলে রাতদিন সমান তালে চলছে আলু উত্তোলন ও বহনের কাজ। কেউ জমি থেকে ভালো দাম পেয়ে বিক্রি করছেন।আবার অনেকে অধিক লাভের আশায় হিমাগারে রাখছেন আলু। অনেক মাঠে
আলু উত্তোলন করে ধান রোপণ করেছেন। বিশেষ করে তানোর পৌর এলাকার জিওল কাশিম বাজারের আশ পাশের মাঠের আলু উত্তোলন করে ধান রোপণ করেছেন। তেমনি এক চাষি জিওল গ্রামের আলী হোসেন তিনি জানান প্রায় ১৫ দিন হয়েছে আলু উত্তোলন করা। নিজের জমিসহ লীজ নিয়ে ১২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। জমি থেকেই ১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। হিমাগারে বীজের আলুসহ ২শ বস্তা রাখা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৭০ কেজির বস্তায় গড়ে ৫৫ বস্তা করে ফলন হয়েছে। নিজের জমিতে সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ২৫ হাজার থেকে ২৮ হাজার এবং লীজের জমিতে বিঘা প্রতি ১৫ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা করে লাভ হয়েছে। বিশিষ্ট সার ব্যবসায়ী জেলার বায়া এলাকার রাজ্জাক ৪০০ বিঘা জমি লীজ নিয়ে চান্দড়িয়া গাগরন্দ মাঠে আলু চাষ করেছেন। তিনি জানান আশা করছি বিঘা প্রতি
৭০ কেজির বস্তায় নিম্মে ৬৫ থেকে ৭০ বস্তা করে ফলন হবে। সব আলু হিমাগারে রাখা হবে। আরও এক সপ্তাহ মত সময় লাগবে আলু তুলতে। এবার যারাই আলু করেছেন তারাই লাভবান হয়েছেন। কুঠিপাড়াগ্রামের মটর ম্যাকানিক রবি জানান সিন্দুকাই মাঠে তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। গত বৃহস্পতিবার এক ক্রেতা এসে বায়না দিয়ে গেছে। অথচ গতবার আলু বিক্রি করার ফাইকাড় খুজে পাওয়া যায়নি। গুবিরপাড়াগ্রামের সেলিম নামের তরুণ আলু চাষি সেলিম জানান ১২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে ১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দিয়েছি। বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছিল ৬০ বস্তা করে। তবে গত শনিবার রাতে হালকা বৃষ্টি হয়েছে, রোববারও সন্ধ্যার পর থেকে আকাশে মেঘ দেখা যাচ্ছে। ঢল মারা
বৃষ্টি হলে যারা আলু উত্তোলন করছেন তাদের অনেক ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন চাষিরা।
কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলাম জানান এবারে উপজেলা আলু চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে । এপর্যন্ত উত্তোলন হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার হেক্টর জমির আলু। প্রতি হেক্টর স্থানীয় ভাবে ২৮/৩০ মেঃটন ফলন হয়েছে। আলুতে এবার চাষিরা প্রচুর লাভ পেয়েছেন। কারন আবহাওয়া ছিল অনুকুলে, ছিলনা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দেখা দেয়নি তেমন ভাবে রোগ বালাই। আমরাও সার্বক্ষণিক চাষিদের পরামর্শ দিয়েছি বলে জানান তিনি।
এমকে