খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে টেলিভিশন চুরির অপবাদ দিয়ে রানা (২৭) নামে এক যুবককে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শাহীনুর রহমান তুহিন নামে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেেেছ পুলিশ। তাহেরহুদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুহিন শ্রীপুর গ্রামের ওমর আলীর ছেলে। এঘটনায় পুলিশ এজাহার নামীয় আসামি তুহিন ও ধুলিয়া গ্রামের আতিয়ার কাজীর ছেলে বাবুল কাজীকে শুক্রবার মধ্যরাতে গ্রেফতার করেছে।
জানা গেছে, গত ২৭ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) হরিণাকুন্ডু উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নের শ্রীপুর বাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয় থেকে একটি টেলিভিশন চুরি হয়। পরদিন সকালে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর রহমান তুহিন গ্রামের ছেলে রানাকে চোর সন্দেহে মাঠ থেকে ধরে আনে। পরে শ্রীপুর বাজারের একটি কাঁঠাল গাছে হাত পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে বেদম মারধর করেন। নির্যাতনের ভিডিওটি এক সপ্তাহ পর গতকাল শুক্রবার কে বা কারা ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
মুহূর্তের মধ্যে তা ভাইরাল হয়ে যায়। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ। শুক্রবার রাতেই হরিণাকুন্ডুতে ছুটে যান ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। তারা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে নির্দেশ প্রদান করেন। শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেফতার হন দুই আ’লীগ নেতা।
তাহেরহুদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনজের আলী জানান, গত ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে মাঠে কাজ করছিল রানা। এ সময় শাহিনুর রহমান তুহিন টেলিভিশন চুরির অভিযোগে রানাকে ধরে নিয়ে আসে। এরপর গ্রামের একটি গাছে ঝুলিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়ে নির্যাতন করে। নির্যাতনের পর পরিবারের সদস্যরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে কুষ্টিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে।
রানার পিতা ওমর আলী জানান, আমার ছেলে কোনো চুরির সাথে জড়িত না। তাকে অন্যায় ভাবে মারা হয়েছে।
পুলিশের হাতে গ্রেফতার আ’লীগ নেতা শাহীনুর রহমান তুহিন বলেন, ভোটের ৫ দিন আগে নির্বাচনি অফিস থেকে রানাই টিভি চুরি করে। আমি তাকে সামান্য মেরেছিলাম। তাকে আমি চিকিৎসাও করিয়েছিলাম। কিন্তু দলীয় কোন্দল থাকায় আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ বিষয়টা ভিন্নভাবে তুলে ধরে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে।
হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, চুরির অপবাদ দিয়ে এভাবে নির্যাতন করা অন্যায় ও অমানবিক। তিনি বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ৪ জনের নামে মামলা হয়েছে, যার নং ০৩। প্রধান অভিযুক্ত তুহিনসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হরিণাকুন্ডু থানার এসআই গোলাম সারোয়ার জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছি। আশা করা যায় দ্রুত সফলকাম হবো।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন