নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা উপজেলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। মাদক মামলার একাধিক আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ তাদের ধরছেনা বলে স্থানীয় মানুষজন এর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এ সুযোগে এসব মাদক ব্যবসায়ী রমরমা মাদকের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। মাদকে সয়লাব করে তুলেছে ওই এলাকা। আর চারঘাট উপজেলার মাদক নিয়ন্ত্রণ কারি কতিপয় মাদক ব্যবসায়ীকে এলাকার সবাই চিনলেও ওসি চিনেন না বলে দাবি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারঘাট উপজেলা পদ্মা নদী ও সীমান্তঘেঁষা হয় হওয়াই এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। মাদক সিন্ডিকেটের সাথে ছোট-বড় মিলিয়ে অনেকেই জড়িত থাকলেও মূলত চারঘাটের মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন কিছু ব্যক্তি। যেসব মাদক ব্যবসায়ী চারঘাটের মাদক নিয়ন্ত্রণ করেন তাদের মধ্যে রয়েছে, চারঘাট উপজেলার চামটা হাজী পাড়া গ্রামের কুদ্দুসের ছেলে কালু, ষোলুয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মৃত আকানীর ছেলে আশরাফ, শাহিদুর রহমান ওরফে আনজুর ছেলে মুক্তার হোসেন, একই গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে বাবু ও আক্কাশের ছেলে টিটু।
স্থানীয় একটি সূত্র অভিযোগ করে জানান, সরকারের মাদকবিরোধী অভিযানের সময় উপরে উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ী ছাড়াও চিহ্নিত কিছু মাদক ব্যবসায়ী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারা গা ঢাকা দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ করেছে কিন্তু বর্তমানে কিছু অসাধু পুলিশের ছত্রছায়ায় আবার তারা প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এ কারণে যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ উপরে উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ী ছাড়াও আরও যারা আছে তারা স্থানীয় থানা পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়ে নিরাপদে মাদক ব্যবসা করে চলেছে। এ কারণে পুলিশ এর হাতে তারা গ্রেফতার হচ্ছে না। এসব মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। অনেকবার তারা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে কিন্তু কিছুদিন ধরে তারা প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও গ্রেফতার হচ্ছে না। এনিয়ে থানা পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক বলে তারা দাবি করছেন।
তারা আরো বলেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি বিষয়টি নিয়ে নজরদারি করেন তাহলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে ও প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীরা আইনের আওতায় আসবে। যুব সমাজ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে। দেশ ও জাতি এগিয়ে যাবে শান্তি ও সমৃদ্ধির দিকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদক ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগ করা হলে কালু বলেন, প্রশাসন ঠিক হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। আগে প্রশাসন ঠিক করেন। মুক্তার নামের আরেক মাদক ব্যবসায়ী খবর ২৪ ঘন্টার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি খবর না করার জন্য অনুরোধ করেন। আর বাকি কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, এসব মাদক ব্যবসায়ী স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় এখনো মাদক ব্যবসা করে আসছে। অথচ সরকার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের পক্ষ থেকে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময় যদি কেউ মাদক ব্যবসা করে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করে তাহলে এটি ভাল ব্যাপার নয়। এনিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
চারঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সুমিত কুমার কুন্ডুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি খবর ২৪ ঘন্টা কে বলেন, আমি এসব মাদক ব্যবসায়ীকে চিনিনা। তাকে এসব মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং কেন গ্রেফতার হয়না এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই থানায় আসেন তথ্য দেওয়া হবে তাছাড়া তথ্য দেয়া হবে না। এ বিষয়ে রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো: শহীদুল্লাহ বলেন, তথ্য না দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাদক ব্যবসায়ীদের কোন ছাড় নেই।
আর/এস