নেট পলি হাউজ আধুনিক কৃষির অনন্য সংযোজন। দেশের কৃষি খাত সংশ্লিষ্টরা এই পদ্ধতির সাথে খুব একটা পরিচিত না হলেও রাজশাহীর পুঠিয়ায় এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করেছে এক কৃষক।
নেট পলি হাউজ এক ধরনের পলিথিন শিটের ছাউনি দেওয়া ঘরের মতো। যার মাধ্যমে উদ্ভিদের শরীরে কোনো ভাবেই সরাসরি সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রে বা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি লাগবে না। এ ছাড়া ফসল নানারকম দুর্যোগ থেকেও রক্ষা পায়। কীটনাশক খরচও অর্ধেকের চেয়ে কম হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে উদ্যোমী এক কৃষকের সহযোগিতায় পুঠিয়ায় আধুনিক পদ্ধতিতে একটি নেট পলি হাউজ গড়ে উঠেছে। যেখানে ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কিছু ফসলের চাষও করতে দেখা গিয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক নেট পলি হাউজ প্রাপ্ত পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকার কৃষক আজিজুল হক বলেন, আমরা এতদিন সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে আসছি যেখানে বছরের ২ -৩ টি ফসলের চাষ করতাম। কিন্তু আধুনিক এই পদ্ধতিতে কমপক্ষে ৬ রকমের শাক-সবজির চাষ করতে পারবো। ফলে সারাবছরই এখান থেকে ভালো পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবো বলে আশা করি। নতুন এই পদ্ধতিতে চাষাবাদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে, সে সকল সমস্যার সমাধানে সার্বক্ষণিক কৃষি কর্মকর্তাদের পাশে পাচ্ছেন বলে জানান এই কৃষক।
পুঠিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন্নাহার ভূঁইয়া জানান, কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এই প্রজেক্টটি সঠিক জায়গায় স্থাপন ও উদ্যোমী কৃষক নির্বাচনের দায়িত্ব ছিল আমাদের। তিনি বলেন, নেট পলি হাউজের মধ্যে অসময়ে বিভিন্ন শাক-সবজি , ফুল চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব। আমরা তাকে উন্নত জাতের বিভিন্ন বীজ সরবরাহ করছি এবং সার্বক্ষণিক এই প্রজেক্টের খেয়াল রাখছি।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন জানান, রাজশাহীতে (পবা, পুঠিয়া ও বাঘা) ৩টি উপজেলায় পলি নেট হাউস স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে গ্রীষ্মকালীন টমেটো, স্ট্রবেরি, বিদেশি ফুল সহ উচ্চ মূল্য ফসল চাষ করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।
তিনি জানান, নেট পলি হাউস যেহেতু পলিথিন দ্বারা বেষ্টিত থাকবে সেহেতু চাষকৃত জমিতে মৌমাছি, পোকামাকড় কিছুই ঢুকতে পারবে না। তাই পলি নেট হাউজ পদ্ধতিতে ফসলের পরাগায়ন ম্যানুয়ালি হাত দিয়ে করাতে হয়। আর এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে ফলনও ২০ শতাংশ বেশি হয়।
বিএ/