1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
করোনা সচেতনতায় রাজশাহীতে অনেকেই মানছেন না সামাজিক দূরত্ব - খবর ২৪ ঘণ্টা
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

করোনা সচেতনতায় রাজশাহীতে অনেকেই মানছেন না সামাজিক দূরত্ব

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৬ এপ্রিল, ২০২০
ছবি: প্রতিকি

ওমর ফারুক : সামাজিক দূরত্ব স্থাপন বা শারীরিক দূরত্ব স্থাপন সংক্রামক রোগ বিস্তার প্রতিরোধের জন্য সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের একগুচ্ছ ঔষধবিহীন পদক্ষেপ হলেও রাজশাহী মহানগর ও জেলায় বসবাসকারী অনেকেই মানছেন না সামাজিক দূরত্ব। সামাজিক দূরত্ব না মানার কারণে করোনা ভাইরাস নামক ছোঁয়াচে এ রোগটি আরো বেশি বিস্তার লাভ করে বেশি সংখ্যক সংক্রমণ ঘটানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে সচেতন কিছু মানুষ সামাজিক দূরত্ব সঠিকভাবে মেনে চললেও অন্যান্য কিছু দূরত্ব মেনে না চলা মানুষের জন্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন। এ নিয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে।

সামাজিক দূরত্ব স্থাপনের উদ্দেশ্য হল সংক্রামক রোগ বহনকারী ব্যক্তির মাধ্যমে সংস্পর্শ এড়ানোর সম্ভাবনা কমানো। একই সাথে আক্রান্ত ব্যক্তি যেন অপরের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে তথা রোগ সংবহন কমানো এবং সর্বোপরি মৃত্যুহার কমানো। অথচ সামাজিক দূরত্ব স্থাপন এ রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে রাজশাহী মহানগর ও জেলা জুড়ে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও জেলা প্রশাসন। দিনরাত প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে কাজ করা হলেও মানুষ এটিকে পাত্তা না দিয়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সচেতন হচ্ছেন না। বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হয়ে ঘোরাফেরা করা ও পাড়ার মুদি দোকানে বসে চা খাওয়া এবং বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়াটাকে নিজেদের মহত্ব বলে মনে করছে।

এত কঠোর নজরদারি ও প্রচার-প্রচারণার পরও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা মানুষকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছেন। সেই সাথে মাইকিং করে

প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে মানুষ নিজের প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হয়। কিন্তু প্রশাসনের অনুরোধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একশ্রেণীর মানুষ ও উঠতি বয়সের যুবকরা বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে ফাঁকা জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছে। যেন দেশে কিছুই হয়নি। রাজশাহী মহানগর এলাকায় মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‍্যাব, সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। নগরের বাইরে জেলার আটটি উপজেলায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থানা পুলিশের পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ করোনা ভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে একযোগে কাজ করছে। তারপরও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। পুলিশকে ফাঁকি দিতে পারলেই যেন কাজের কাজ করে ফেলছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে করণা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই এর প্রাদুর্ভাব কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার অংশ হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাস চলাচল গণপরিবহন মার্কেট ও দোকান পাট বন্ধ ও সরকারি ছুটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মানুষকে সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকেও আর্থিক সংকটে ভোগা মানুষকে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। আর স্বাভাবিক জীবনযাপন সচল রাখতে ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনি, কাঁচা বাজার ও হাসপাতাল খোলা রাখা হয়েছে। মানুষকে প্রয়োজন অনুযায়ী অল্প সময়ের জন্য বের হওয়ার সুযোগ দিয়ে অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে না থাকার জন্য শুরু থেকেই উৎসাহিত করা হচ্ছে। শুরু থেকেই মাঠে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন থাকলেও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে মাঠে নামানো হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। সেনাবাহিনী মাঠে নামার পর থেকে রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বাজারে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও মানুষের আনাগোনা কমেছে।

তবে রাজশাহী মহানগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাড়া-মহল্লা এবং গ্রামের মুদি দোকানগুলোতে একেবারেই মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। এসব পাড়া-মহল্লার দোকান গুলোতে স্বাভাবিক সময়ের মতই কেনাকাটা করছেন মানুষ ও বসে চায়ের আড্ডা দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বার বার মানুষকে সচেতন ও সামাজিক দূরত্ব মেনে বাইরে চলাচলের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব মেনেই ক্রেতাদের কাছে জিনিসপত্র বিক্রির জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তু কিছু দোকানি প্রশাসনের অনুরোধ মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বেচাকেনা করলেও কিছু পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানিরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার তোয়াক্কা করছে না। যখন পুলিশ বা অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা যায় তখন আড্ডাবাজরা দৌড়ে পালিয়ে যায় আর দোকানিরাও সাবধান থাকার কথা জানান। কিন্তু পুলিশ চলে আসলেই আবার আগের মত অবস্থা হয়ে যায়। বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও কর্ণপাত করছেন না তারা।

এদিকে, খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায় রাজশাহী মহানগরীর কটি স্টেশন ও হড়গ্রাম বাজারে মোটেও সামাজিক দূরত্ব মানা হয়না। ব্যবসায়ীদের দোকানের সামনে পূর্বের মতোই ক্রেতারা কেনাকাটা করছেন। নগরীর অদূরে নওহাটায় হাট বসে হাটে আসা লোকজন যত্রতত্র কোন ধরনের সামাজিক দূরত্ব ও নিজের সুরক্ষার ব্যবস্থা না করে গাদাগাদি করে কেনাকাটা করে। ব্যবসায়ীরাও অবস্থায় ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় সমাজের সচেতন মানুষ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাঝেমধ্যে পাড়া-মহল্লায় থাকা মুদি দোকান ও খেলার মাঠ গুলোতে নজরদারি রাখা এবং যারা সামাজিক দূরত্ব মানবে না তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করছেন। যাতে দু’একজন মানুষের শাস্তি দেখে অন্যরা ভয়ে হলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে। আর প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হয়।

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর ইফতেখায়ের আলম বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জেলার ৮ টি থানা পুলিশ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণ সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। যারা সামাজিক দূরত্ব মানছে না মাঝেমধ্যে তাদের জরিমানা ও অর্থদণ্ড করা হচ্ছে। মহামারী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় পুলিশের পাশাপাশি সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে প্রত্যেকটি মানুষের সচেতনতা জরুরী। সবার মধ্যে সচেতনতা আসলে মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। যেসব পাড়া-মহল্লার দোকানে ক্রেতা ও বিক্রেতারা সামাজিক দূরত্ব মানবে না তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিজের স্বার্থে, পরিবারের সাথে ও দেশের মানুষের স্বার্থে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মানার জন্য অনুরোধ করছি। যাতে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই পরিস্থিতি থেকে রাজশাহীর মানুষ রক্ষা পায়।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সদর গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, নগরের কোন এলাকায় চায়ের দোকান খোলা রাখতে দেয়া হচ্ছে না। পাড়া-মহল্লায় দোকানেও নজরদারি করা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে তাদের জিনিসপত্র তুলে নিয়ে আসা হচ্ছে। পুলিশ দেখলেই আড্ডাবাজরা পালিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে পুলি। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ পেতে পুলিশের পাশাপাশি নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। তাহলে এই অবস্থা থেকে কিছুটা হলেও ভালো থাকা সম্ভব। যারা আইন মানবে না ও সামাজিক দূরত্ব মানবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

এমকে

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST