রাজধানীতে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তাঁদের মধ্যে একজন ধর্ষণের ঘটনার দায় স্বীকার করে ঢাকার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীও ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ঢাকার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
আসামিরা হলেন জয় ঘোষ (২৪) ও বাদল হোসেন (৩৪)। যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ বলছে, আসামি বাদল রাজারবাগ পুলিশের প্ররক্ষা শাখার একজন কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই এসএসসি পরীক্ষার্থীর বয়স ১৬ বছর। মা–বাবার সঙ্গে ঢাকাতেই থাকে সে। ফেসবুকে জয় ঘোষের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ হয়।
ওই কিশোরীর বাবার অভিযোগ, গত ৩১ মার্চ রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করেন আসামি জয় ঘোষ। মেয়েটির মোবাইল ফোনে তা ধারণও করেন ওই আসামি। পরে মেয়েটিকে তার মোবাইল ফোন না দিয়ে গুলিস্তান এলাকায় নামিয়ে দেয় ওই যুবক। গুলিস্তানে নেমে ভুক্তভোগী মেয়েটি ভয় পেয়ে বাদল হোসেনের কাছে ঘটনা খুলে বলে এবং সহায়তা চায়। বাদল তখন তাকে মোবাইল ফোন উদ্ধারের আশ্বাস দেন এবং বাড়ি পৌঁছে দিতে চান। পরে ওই কিশোরীকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে বাদল নিয়ে যান যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি বাড়িতে। সেখানে তাকে ধর্ষণ করেন বাদল।
কিশোরীর বাবা শনিবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গুলিস্তান থেকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করেন বাদল হোসেন। বাদল পুলিশের একজন কনস্টেবল।
এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানা ও যাত্রাবাড়ী থানায় পৃথক দুটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। শাহবাগ থানার পুলিশ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, আসামি জয় ঘোষের স্বভাব-চরিত্র ভালো না। প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক করেছিলেন তিনি। অপর আসামি বাদল হোসেনও ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ফেসবুকে ওই কিশোরীর সঙ্গে আসামি জয় ঘোষের পরিচয় হয়। পরে সম্পর্কও হয়। সম্প্রতি ওই কিশোরীকে শাহবাগের একটি বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে আসামি জয় ঘোষ। মোবাইল ফোনে সেই চিত্র রেকর্ড করা হয়। সেই মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। আসামি জয় ঘোষ ধর্ষণ করে মোবাইলে তা রেকর্ড করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল আসামি জয় ঘটনার কথা স্বীকার করে ঢাকার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এখন তিনি কারাগারে।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে বাদল হোসেন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত পরশু দিন। আসামি বাদল রাজারবাগে প্ররক্ষা শাখার একজন কনস্টেবল বলে জানা গেছে। কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনার প্রাথমিক সত্যতাও পাওয়া গেছে। আসামি বাদল এখন কারাগারে।
খবর ২৪ ঘণ্টা/আর