1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
এবারের নির্বাচনই শেষ সুযোগ! - খবর ২৪ ঘণ্টা
সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৫:৫১ অপরাহ্ন

এবারের নির্বাচনই শেষ সুযোগ!

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৮
  • ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশ নিয়ে বিতর্ক
  • বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ
  • মতপ্রকাশ–সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব নিয়ে উদ্বেগ
  • ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের আহ্বান
  • বিতর্ক শেষে ভোটাভুটির মাধ্যমে খসড়া প্রস্তাব গৃহীত

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা ও আইনের শাসনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে। সে অর্থে এই নির্বাচনই শেষ সুযোগ। তবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, সরকারের সমালোচক, আইনজীবীসহ নাগরিক সমাজের ওপর দমন-পীড়ন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুমসহ বিভিন্ন ঘটনা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও হুমকির মুখে।

ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত বিতর্কে পার্লামেন্টের সদস্যদের বক্তব্যে এসব কথা উঠে আসে। বিতর্ক শেষে ভোটাভুটির মাধ্যমে এ বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব গৃহীত হয়। এতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। মানবাধিকার পরিস্থিতি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সেই সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনেরও আহ্বান জানানো হয়।

বিতর্কে অংশ নিয়ে অস্ট্রিয়ার রাজনীতিক জোসেফ ভাইদেনহোলজার বলেন, চলতি বছরের শেষে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন এই জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অনেক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনই শেষ সুযোগ, যেখানে নির্ধারিত হবে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা ও আইনের শাসন অব্যাহত থাকবে, নাকি পরিস্থিতি অরাজকতা আর বিশৃঙ্খলার দিকে ধাবিত হবে। যদি পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যায়, তার প্রভাব ইউরোপেও পড়বে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন বেড়েই চলেছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গণগ্রেপ্তার ও গুমের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির মুখে।

ভাইদেনহোলজার বলেন, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন না। বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, তাঁকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের সরকারের প্রতি সহায়ক পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানান, যেখানে মানুষ ভয়হীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারে এবং সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের প্রস্তুতি নিতে পারে।

ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টে কনজারভেটিভ দলের সদস্য চার্লস টানোক বলেন, বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে, যার একটি উদাহরণ হতে পারে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তারের ঘটনা।

ইতালির রাজনীতিক ইগনাসিও করাও মানবাধিকার পরিস্থিতির দিক থেকে বাংলাদেশকে ফিলিপাইন ও সৌদি আরবের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানান।

চেক রাজনীতিক টমাস জেকোভস্কি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অংশীদার ও সমর্থক। কিন্তু দেশটিতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে। সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবীসহ নাগরিক সমাজের অনেকেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। তিনি বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর ব্যাপারে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানান।

ব্রিটিশ রাজনীতিক সাজ্জাদ করিম বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে আরও অনেক কিছু করা বাকি। লিথুয়ানিয়ার রাজনীতিক পেত্রাস অস্ত্রেভিসাস ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করার এবং আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।

পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এক বক্তা বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ না হয়, তাহলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত হবে। আরেক বক্তা বাংলাদেশে শ্রম পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে এখনো শিশুশ্রম অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রের পরিবেশও সহায়ক নয়।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার যে উদারতা দেখিয়েছে, তার প্রশংসা করেন বেশ কয়েকজন বক্তা। তবে রোহিঙ্গাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রত্যাবাসন না করে তাদের মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তাঁরা।

সবশেষে ইইউয়ের মানবিক সহায়তা ও সংকট ব্যবস্থাপনা–বিষয়ক কমিশনার ক্রিসটোস স্টাইলিয়ানিডস বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিতই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে ইইউ। এরপরও দেশটিতে সাংবাদিক, শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের ফলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বিত হয়েছে। তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচন স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে সরকারের প্রতি সবার জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিরও আহ্বান জানান তিনি।

বিতর্ক শেষে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব গৃহীত হয় ইউরোপীয় পার্লামেন্টে। এতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে, বিশেষ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির মুখে থাকা, শিক্ষার্থী, মানবাধিকারকর্মী ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ওপর দমন-পীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান ও মির আহমেদ বিন কাসিম নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও ক্ষমতার ব্যাপক ব্যবহারের অভিযোগগুলোর ব্যাপারে স্বাধীন তদন্ত করার আহ্বান জানানো হয়। গত মে মাসে জাতিসংঘের পর্যালোচনার (ইউএন ইউপিআর) সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার এবং নারী অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।

খসড়া প্রস্তাবে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন, সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানদণ্ড অনুযায়ী শ্রম আইন সংস্কার, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে ‘বিশেষ পরিস্থিতিতে ১৮ বছরের কম বয়সে বিয়ের’ বিধান বাতিল, রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত এবং মানবাধিকার নিশ্চিতে চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের আহ্বান জানানো হয়। সুত্র : প্রথম অালো।

আর/আ

পোস্টটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By Khobor24ghonta Team