বিশেষ প্রতিবেদক :
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর ও আশেপাশের জেলার হাটগুলোতে ইতিমধ্যেই গরু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। অন্যান্য বারের মতো এবারেও দেশি ও ভারতীয় গরু উঠছে হাটগুলোতে। পশু বেচাকেনার অন্যতম হাট রাজশাহীর সিটি হাট। এ হাটে আশেপাশের জেলা এমনকি ঢাকা থেকেও ব্যবসায়ীরা আসেন গরু কিনতে। উদ্দেশ্য একটাই পছন্দের গরু ক্রয় করা। গরু বেচাকেনাও শুরু হয়েছে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে। সিটি হাটে দেশি গরুর থেকে ভারতীয় গরুর আমদানি বেশি থাকলেও দাম কমেনি। যার কারণে ক্রেতারা এখনো গরু কিনে স্বস্তি পাচ্ছেন না। দেশি ও ভারতীয় গরুর পাশপাশি সিটি হাটে মহিষেরও দেখা মিলেছে। অন্য বছরের তুলনায় মহিষও বেশি উঠছে। এখন হাটবাজারগুলোতে পশু কোরবানী দাতা ক্রেতার থেকে পাইকারী ক্রেতাই বেশি। পাইকারি ক্রেতারা এখান থেকে গরু কিনে নিয়ে গিয়ে দুরের হাটগুলোতে বিক্রি করছে।
সরজমিনে সিটি হাটে গিয়ে দেখা যায়, দেশি গরুর সাথে সাথে ভারতীয় সিন্ধু, আন্ধা, নেপালী, বল্ডার জাতের গরুই বেশি রয়েছে। ভারতীয় গরুর তুলনায় দেশি জাতের গরুর সংখ্যা খুবই কম। তবে হাটের কিছু স্থানে দেশি গরু ক্রেতা-বিক্রেতাদের কেনাবেচা করতে দেখা গেছে।
গরু ব্যবসায়ী তৈমুর রহমান বলেন, আমি ৩০টি গরু নিয়ে রাজশাহী সিটি হাটে এসেছি। আশা করছি গরুগুলোকে বিক্রি হয়ে যাবে। তবে চড়া দাম হওয়ার কারণে খুব কম ক্রেতায় দাম বলছেন। কারণ এখনো বাজারে স্থানীয় ক্রেতারা গরু কেনা শুরু করেনি। স্থানীয় ক্রেতারা গরু ক্রেতারা হাটে আসতে শুরু করলে বেচাকেনা ভালই হবে। তার নিয়ে আসা একেকটি গরুর দাম প্রায় দেড় লাখ টাকার উপরে।
সাইফুল নামের আরেক ভারতীয় গরু বিক্রেতা বলেন, ঈদ উপলক্ষে হাট শুরুর পর থেকেই হাটে দেশি গরুর তুলনায় ভারতীয় গরু বেশি আসছে। ভারতীয় গরু বেশি আসার কারণে এখনো ভালভাবে বেচাকেনা হচ্ছে না। কারণ গরুগুলো দেশি জাতের গরুর থেকে বড়। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। কয়টি গরু তিনি বিক্রি করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২৫টি গরুর মধ্যে তিনি ৫টি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। তিনিও বলেন, স্থানীয় ক্রেতারা আসা শুরু করলে বেচাকেনা বেশি হবে।
এদিকে, দেশি জাতের গরু বিক্রি করতে আসা নাইম নামের এক ক্রেতা বলেন, ভারতীয় গরু হাটে বেশি থাকায় দেশি জাতের গরু বিক্রি করা কষ্টকর হচ্ছে। কারণ এখনো হাটে স্থানীয় ক্রেতা আসা শুরু করেনি। পাইকারি ক্রেতারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রির জন্য ভারতীয় বড় গরু কিনছেন। দাম কেমন জানতে চাইলে বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার দেশি গরুর দাম ক্রেতারা কম করেই বলছেন। ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫৫ হাজার টাকার গরু তার সংগ্রহে রয়েছে। গরু কিনতে আসা এক পাইকারী ব্যবসায়ী বলেন, দেশের অন্য গরু হাটগুলোর তুলনায় সিটি হাটে বড় গরু তুলনামূলক সস্তায় পাওয়া যায়। সস্তায় গরু কিনে দুরের হাটগুলোতে বিক্রি করে কিছু লাভ পাওয়া যায়। ভারতীয় গরু প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারতীয় গরু না আসলেতো গরু কেনাই দায় হয়ে পড়বে। দেশি ও ভারতীয় দুই গরুর চাহিদায় রয়েছে।
অন্য বছরের তুলনায় এবার সিটি হাটে বড় বড় মহিষ দেখা গেছে। মহিষগুলো দেড় থেকে দুই লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনেক মহিষ আছে যেগুলোর দাম দুই লাখের উপরেও বিক্রি হচ্ছে। পাইকারী ক্রেতারাই বেশি মহিষ কিনছেন।
দারুসা থেকে ভাগে গরু কিনতে আসা আব্দুল লতিফ নামের একব্যক্তি বলেন, হাটে ক্রেতার তুলনায় গরুর আমদানি বেশি হওয়া সত্বেও দাম চড়া রয়েছে। এরমধ্যে দেখেশুনে একটি গরু কিনবো বলে আমার এসেছি। রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার ডাবলুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রাজশাহী সিটি হাটে দেশি ও ভারতীয় গরু দুটোই আছে। দেশি ও ভারতীয় দুই ধরণের গরুর চাহিদাই ক্রেতাদের কাছে রয়েছে। পাইকারি ক্রেতা প্রসঙ্গে বলেন, এখনো কিছু সময় বাকি থাকায় স্থানীয় ক্রেতারা আসেননি। দু’একদিনের মধ্যে ক্রেতারা আসলে বেচাকেনা ভাল হবে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে