নিউজ ডেস্ক: বিএনপির যুগ্মসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, কলেজে পড়া অবস্থায় একটা ছবি (সিনেমা) দেখেছিলাম। একজন মানুষ জ্ঞান আয়ত্ত করে কিভাবে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নেকড়ে বা বাঘ হয়ে যায়। সে অন্য মানুষের ক্ষতি করে এবং আবার মানুষ রূপে ফিরে আসে। ছবিটার নাম ছিল মেনিমেল। ম্যান প্লাস এনিমেল। এই আওয়ামী লীগ হচ্ছে বাংলাদেশের মেনিমেল। কখন যে মানুষ হয় আর কখন যে পশু হয় তা বোঝা দায়। তা খুঁজতে বিএনপির হাতে আর বেশি সময় অবশিষ্ট আছে এটা আমি মনে করিনা।
শুক্রবার(৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে মাওলানা মুহাম্মদ আকরম খাঁ হলে ‘সিটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা বনাম ভোটের অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আলাল বলেন, সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম কেন তা নিজে আমি দেখেছি। মোহাম্মদপুরে ইভিএম নষ্ট। লাইন নাই, তবুও একটি ভোট দিতে সময় লাগে ৩/৪ ঘন্টা। খোদ তাবিথ আউয়ালের মা লাইন ছাড়াই ভোট দিতে গিয়ে ৩/৪ ঘন্টা সময়ক্ষেপণের পর ভোট দিতে পেরেছেন। মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সারাদিন বাইরে আনসার আর ভেতরে নির্বাচন অনুষ্ঠানে জড়িতরা অবস্থান করেছে। বাইরে কেউ ছিলনা। কিন্তু দিন শেষে ভোট গণনায় দেখা গেলো সেখানে ১ হাজার ৫০০ ভোট কাস্ট হয়েছে। এই হলো ইভিএমের খেলা।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে তারা প্রার্থী ও ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে। ২০১৮ সালে করেছে আগের রাতে নির্বাচন, আর এবার ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন করেছে মানুষ দিয়ে নয়, মেশিন দিয়ে।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের মধ্যে কি কোনো সুপ্ত বাসনা রয়েছে যে শেখ হাসিনার কোন ইচ্ছেকে আমরা অপূর্ণ রাখবো না? যদি এরকম কেউ সুপ্ত বাসনার অধিকারী থেকে থাকেন তাহলে তাকে আগে খুঁজে বের করা দরকার। আগে নিজেদের মধ্যে এমন লোকদের চিহ্নিত করা দরকার তারপর অন্যের দোষ ধরা উচিত।
তিনি বলেন, আমরা তো পাঁচটি মেয়র নির্বাচনে জিতেছিলাম, বিএনপি-জামায়াত মিলে উপজেলা নির্বাচনে জিতেছিলাম। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ৩৮৩ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে মামলার অজুহাত দেখিয়ে। সেখানে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলরদের বসিয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাহলে ঢাকা সিটি নির্বাচনের জিতলেই বা কি হতো? যদি আমারা সিটি নির্বাচনের জিততাম তাহলে জায়গা হতো জেলখানায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিছ ইসলাম, ঢাকা মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নাসির হায়দার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের সহ-সভাপতি কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক, এম জাহাঙ্গীর আলম।