নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সফল হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আমির জাফর। রোববার দুপুরে রাজশাহী থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল খবর ২৪ ঘণ্টাকে তার কার্যালয়ে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, অতীতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের সাথে প্রায় নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হতো। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য চেষ্টা করতো। কিন্ত এবার গত ৮ ফেব্রুয়ারী বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে নগরজুড়ে উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছিল।
অতীতের রেকর্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে রায়ের বিষয়টি মাথায় রেখে আরএমপির পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। জনগনের নিরাপত্তা ও জানমালের কথা চিন্তা করে যেকোন ধরণের অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে আরএমপির কমিশনার স্যারসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনায় সার্বিক পরিস্থিতি আগে থেকেই মনিটরিং করা হয়।
রায়কে কেন্দ্র করে যাতে কোন বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি বাড়ানো হয়। আর রায়ের দিন নগরজুড়ে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি কাজ করেছে। সবকিছু করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে।
৮ ফেব্রুয়ারী বিএনপি মালোপাড়া দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও আ’লীগ সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে সমাবেশ করে। সার্বিক বিষয় চিন্তা করে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ কমিশনার স্যারসহ উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা মাঠে ছিলেন।
রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথেও পুলিশের পক্ষ থেকে কথা বলা হয়। যাতে তারা বিশৃঙ্খলা না করে। রায়কে কেন্দ্র করে যদি বিএনপি অপ্রিতীকর কিছু করার চেষ্টা করতো তাহলে পুলিশ তা মোকাবেলায় প্রস্তুত ছিল। কোন নাশকতামূলক কর্মকা- চালাতে দেওয়া হতো না। ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে না।
এখানো পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে যেকোন ধরণের অপ্রিতীকর ঘটনা মোকাবেলায়। রাজশাহী শান্তির নগর হিসেবে পরিচিত। এই নগরে কোন বিশৃঙ্খলা হতে দেওয়া হবে না। পুলিশ সবসময় শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে কাজ করছে। ভবিষ্যতেও যাতে এমন ভাল পরিবেশ থাকে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক ব্যবসায়ীর সাথে পুলিশের কোন সদস্যের সখ্যতার অভিযোগ পেলে সেই পুলিশ সদ্যসের বিরুদ্ধে কেমন ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান পুলিশ কমিশনার স্যার যোগদান করার পর থেকেই এ বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। কোন মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করার পর আবার ধরা পড়লে তার বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক সমাজ ও দেশ জাতিকে ধ্বংস করে দেয়। এ জন্য মাদক ব্যবসায়ীর সাথে কোন পুলিশ সদস্য বা কমকর্তার সখ্যতা এবং সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে
তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে। এমনকি তাকে চাকরিচ্যুত করে কারাগারেও পাঠানো হবে। মাদক বিষয়ে কোন আপোষ করা হবে না। মাদকের সাথে সখ্যতা থাকায় ইতপূর্বে ৪/৫ জন পুলিশ অফিসারকে বদলি ও চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। আরএমপি সবসময় মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।
ডিসি আমির জাফর মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা। সাহসী এই পুলিশ কর্মকর্তা ২০ তম বিসিএসের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশে এএসপি হিসেবে যোগদান করেন। মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্রনাথ কলেজে পাঠ শেষে ঢাকা কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেন।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে